২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশ হতে চায় বাংলাদেশ। জিডিপি প্রবৃদ্ধির সাথে সাথে কর্মসংস্থানের হার না বাড়াতে পারলে বাংলাদেশ তার লক্ষ্যে পৌঁছাতে ব্যর্থ হবে। প্রতি বছর লেখাপড়া শেষে চাকরির অপেক্ষায় থাকা প্রায় ২৫ লাখ তরুণ-তরুণীর বেকারত্বের বোঝা সমাজে হতাশা তৈরী করছে। অথচ এত সমস্যার মাঝেই লুকিয়ে রয়েছে অপার সম্ভাবনা। বিপুল এই জনসংখ্যার কর্মসংস্থান সৃষ্টির কার্যকরী উপায় তাদেরকে স্বাবলম্বী করে তোলা। নিজের যোগ্যতা-দক্ষতার বিকাশ ঘটিয়ে আত্মমর্যাদার সাথে নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারা, একজন ‘উদ্যোক্তার পক্ষেই সম্ভব’।
সফল উদ্যোক্তা হয়ে ওঠা খুব সহজ কাজ নয়। একজন উদ্যোক্তার মধ্যে থাকতে হয় উদ্ভাবনী শক্তি, ঝুঁকি গ্রহণের সাহস, আর্থিক সঙ্গতি, ব্যবস্থাপনার দক্ষতা আর বাজার বিশ্লেষণের ক্ষমতা।কেননা ব্যবসার পরিকল্পনা এবং বাস্তবায়নের সবকটি স্তরেই তিনি একজন যোদ্ধা। এজন্য তাকে এসব বিষয় সম্পর্কে জানতে হয়, শিখতে হয়। আমার বিশ্বাস সেই শিক্ষাকে সহজ করবে পিটার থিয়েলের বই ‘জিরো টু ওয়ান’।
বিশ্বে ‘উদ্যোক্তা’ বিষয়ক ধারণা নিয়ে কাজ শুরু করে যারা প্রশংসিত হয়েছেন তাদের মধ্যে ‘জিরো টু ওয়ান’ বই এর লেখক পিটার থিয়েল অন্যতম। নিজের ব্যবসায়িক বুদ্ধির সঙ্গে প্রযুক্তির সমন্বয় ঘটিয়ে ব্যবস্থাপনায় নতুনত্ব এনেছেন তিনি। যারা ‘উদ্যোক্তা’ বিষয়ক ধারণার সঙ্গে পরিচিত এবং ভবিষ্যতে একজন সফল উদ্যোক্তা হতে চান, তাদের জন্য এই বইটি সহায়ক হবে। বইটিতে সুস্পষ্ট কোন ব্যবসায়ের জন্য সুনির্দিষ্ট দিকনির্দেশনা দেওয়া না থাকলেও একজন উদ্যোক্তা কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হলে কিভাবে তা থেকে উত্তরণের পথ খুঁজে পাবে তার উপায় বাতলে দেওয়া আছে। বইটি বাংলা ভাষায় অনুবাদ করার কৃতিত্ব অর্জন করেছে আমার স্নেহাষ্পদ সাজিদ
রাজু। যারা নতুন কিছু করতে চান, উদ্যোক্তা হয়ে চাকরি খোঁজার পরিবর্তে চাকরি
দেবার মত চ্যালেঞ্জ গ্রহন করতে চান বইটি তাদের জন্য সহায়ক হবে বলে আশা রাখি।
পিটার থিয়েল
একজন উদ্যোক্তা ও বিনিয়ােগকারী। তিনি ১৯৯৮ সালে) আরও উদ্যোক্তাদের সাথে মিলে পেপাল (Paypal) প্রতিষ্ঠা করেন। তখন তিনি এর প্রধান কার্যনির্বাহী ছিলেন । এরপর পেপাল ইবে (ebgy) কোম্পানির কাছে ১১ হাজার ৮০০ কোটি টাকায় বিক্রি হয়। তিনি ২০০৪ সালে। ফেসবুকের প্রথম বহিরাগত হিসেবে বিনিয়ােগ করেন। একই বছর পালানটির টেকনােলজিস (Palantir Technologies) এরও প্রতিষ্ঠাতা। তিনি প্রাথমিকভাবে লিংকডইন (tinkedin), ইয়েল্প (Yelp) সহ অনেক। উদ্যোগে প্রাথমিকভাবে বিনিয়ােগ করেছেন এবং এর মধ্যে সবগুলােই সফল । তিনি তার সহকর্মীদের নিয়ে ফাউন্ডারস) । ফান্ড (Founders Fund) গঠন করে। এটি সিলিকন ভ্যালির একটি স্বনামধন্য বিনিয়ােগকারী প্রতিষ্ঠান। এখান। থেকে স্পেসএক্স (SpaceX) ও] এয়ারবিএনবি (Airbnb) এর মতাে উদ্যোগ বিনিয়ােগ পেয়েছে। থিয়েল বর্তমান তরুণদের প্রাতিষ্ঠানিক ধরাবাঁধা শিক্ষা বাদ দিয়ে বাস্তবিক শিক্ষা গ্রহণে উৎসাহিত করছে। এই উদ্দেশ্যে তিনি থিয়েল ফাউন্ডেশন (Thiel Foundation) প্রতিষ্ঠা করেছেন। যার লক্ষ্য হচ্ছে 0 প্রযুক্তিগত অগ্রগতি সাধন ও দূর ভবিষ্যৎ নিয়ে কাজ করা।
ব্লেক মাস্টার
২০১২ সালে স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন। যখন পিটার কম্পিউটার বিজ্ঞানের Constat (Computer Science 183: Startup) নিয়ে ক্লাস নিচ্ছিলেন, তখন সে ক্লাসগুলাের তথ্য টুকে রাখে। সেখান থেকেই জিরাে টু ওয়ান (শিকড় থেকে শিখরে) বইটি তৈরি করা হয়েছে। ব্রেক নিজেও একজন উদ্যোক্তা। তিনি জুডিকাটা (Judicata) নামক এক কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করেছেন। এটি আইনবিজ্ঞান সংক্রান্ত একটি উদ্যোগ।