স্বাধীনতা-উত্তর বাংলাদেশের পতন-অভ্যুদয়-বন্ধুর পথযাত্রায় মুক্তিযুদ্ধের স্বপ্নের চরিতার্থতা বারবার বাধাগ্রস্ত হয়েছে। জরুরি এইসব কর্তব্যের শীর্ষে ছিল গণহত্যা, মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ ও যুদ্ধাপরাধের বিচার; ন্যায়, সত্য ও বিচার নিশ্চিতকরণের যে-দাবি নিভৃতে কেঁদে ফিরেছিল কতকাল ধরে। দীর্ঘ নীরবতা ভেঙে মহীয়সী জাহানারা ইমাম জনচিত্তে এই দাবি স্থায়ীভাবে খোদিত করে দিয়েছিলেন তাঁর জীবনপণ সংগ্রাম দ্বারা। বিচারের এই দাবিকে বারবার পেছনে ঠেলে দেয়া হলেও জাতিচৈতন্য থেকে তা কখনো হারিয়ে যায় নি। এই দাবি আবারও নতুন তাৎপর্য নিয়ে জেগে উঠেছিল ২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর। জাতির আরাধ্য কর্তব্যের মধ্যে যুদ্ধাপরাধের বিচারের প্রশ্নটি তখন নতুন তাৎপর্য নিয়ে জেগে ওঠে। সেই সূত্র অবলম্বন করে একাত্তরের বিভিন্ন রণাঙ্গন প্রধানদের ঐক্যবদ্ধ ফোরাম থেকে উত্থিত দাবি সর্বমহলে বিশেষভাবে তরুণ প্রজন্মের সোৎসাহ সমর্থন লাভ করে। এমনি নানামুখী ও ধারাবাহিক প্রয়াসের জের ধরে ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত সংসদ নির্বাচনে গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক জোটের ঘোষিত ইশতেহারে মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের বিচার অনুষ্ঠানের অঙ্গীকার ব্যক্ত হয়। নির্বাচনের রায় সেই অঙ্গীকারের প্রতি গণসমর্থন প্রবলভাবে প্রকাশ করে।