এনায়েত রসুল স্বনামখ্যাত শিশু সাহিত্যিক মােহাম্মদ নাসির আলীর দ্বিতীয় পুত্র। ১৯৫৩ সালের ১২ জুন বিক্রমপুরের ধাইদা গ্রামে জন্ম। লেখাপড়া ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতির ওপর। লেখালেখির জগতে বিচরণ ১৯৬৫ থেকে। প্রথম লেখা ছাপা হয়েছে। ‘জুনিয়র রেডক্রস’ পত্রিকায়। ওটা ছিল ছড়া। সব বয়সী পাঠকদের জন্যে লেখেন এনায়েত রসুল। তবে মূলত শিশুসাহিত্যিক। শিশুসাহিত্য সৃষ্টিতে তার দায়বদ্ধতা রয়েছে বলে তিনি মনে করেন। প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা ৮০। এনায়েত রসুলের পাঠকপ্রিয় বইগুলাের মধ্যে এক আকাশ মেঘ এক পশলা বৃষ্টি পােডড়া বাড়ি রহস্য ডক্টর নিপুর এক্সপেরিমেন্ট নিঝুমগড় ভয়ঙ্কর ভয়ঙ্করের হাতছানি বাতিঘরের বুড়াে অন্যরকম বুবাই বিজ্ঞান ও বিজ্ঞানী চিকিৎসা বিজ্ঞানে আবিষ্কার চিচি বিজ্ঞানীদের জীবন ও আবিষ্কার এবং আমাদের জাতিসত্তা ও বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ’ উল্লেখযােগ্য। এনায়েত রসুল শিশুতােষগল্পের জন্য ইউনিসেফ ঘােষিত “মীনা মিডিয়া এওয়ার্ড২০০৮' পদক অর্জন করেছেন। বর্তমানে তিনি জাতীয় দৈনিক আমার দেশ’-এ সহ-সম্পাদক পদে কর্মরত। সেইসঙ্গে ছােটদের পাতা ‘এক্কাদোক্কা’ পরিচালনার দায়িত্ব পালন করছেন।
সুমন্ত আসলাম
আজন্ম লালিত স্বপ্নকে যে সার্থক করে তুলতে পারে, সে-ই সত্যিকারের ভাগ্যবান। আমরা বন্ধুরা তাই সুমন্তকে সেসব হাতে গােনা ভাগ্যবানদের একজন বলে মানি, গর্বিত হই সুমন্তকে নিয়ে; হিংসায়ও পুড়ি কখনাে কখনাে । কারণ একটাই—লেখালেখির স্বপ্নটাকে বিফলে যেতে দেয়নি সুমন্ত আসলাম । বরং শখের লেখালেখির সঙ্গে সখ্য গড়ে সে এখন আদ্যোপান্ত একজন পাঠকপ্রিয় লেখক । ২০০১ সালে ‘স্বপ্নবেড়ি’তে গল্প লেখায় যে মেধার স্বাক্ষর সে রেখেছিল, তা উপন্যাস লেখার ক্ষেত্রেও প্রতিষ্ঠিত হয়েছে সমানভাবে । বন্ধু বলে সমালােচনার কাচি-ছুরির হাত থেকে রেহাই মেলে না। লেখক সুমন্তর কিন্তু সব কিছুর শেষে প্রতিবারই হার মানতে হয়। আমাদের, মুগ্ধ হতে হয় তার লেখায় । অপেক্ষায় থাকতে হয়। পত্রিকায় প্রকাশিত গল্পের, কিংবা অন্য কোনাে লেখার। কিংবা আসন্ন বইমেলার—কখন প্রকাশিত হবে সুমন্তর নতুন বই। দৃপ্ত সাহসী ভঙ্গি, চিবুকের সজীব ঔদ্ধত্য দেখে কেউ কেউ অহঙ্কারী বলে ভুল ভাবে সুমন্তকে । কিন্তু আমরা জানি, ভেতরের মানুষটা বড় বেশি সরল, আবেগে টলােমলাে-কখনাে যেন সে দন্তন্য রূহমান, কখনাে বা রাশীক । তাই তাে সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের পাশে দাঁড়াতে সে গড়ে তােলে ‘Childream Society',' তাদের জন্য কিছু করার চেষ্টায় তাদের সাথেই মিশে যায় সে প্রতিনিয়ত। শুধু স্বপ্ন দেখার ক্ষমতা নয়, অন্যের মধ্যে স্বপ্নের শিখা জ্বালিয়ে দেয়ার অবিশ্বাস্য এক ক্ষমতা আছে সুমন্তর। তাই নতুন প্রজন্মের প্রতিনিধি একদল কিশাের-কিশােরী ঘিরে থাকে তাকে । অনুপ্রেরণা মেনে তার মতােই হতে চায় তারা। নিজের টুকরাে টুকরাে স্বপ্ন-সাধ তাদের মধ্যে বুনে দিয়ে ঘুরে ফেরে সুমন্ত, ফেরে নিজের ছােট্ট জগন্টাতে । তাকে দেখে আনন্দে গা ঘেঁষে আদর জানায় পােষা সাদা বেড়ালটা, মাছগুলাে খলবল করে ওঠে অ্যাকুরিয়ামে, এমনকি তার অপেক্ষায় থাকা লেখালেখির টেবিলটাও যেন হেসে ওঠে। একবার-সুমন্তের হাতে নতুন কোনাে চরিত্রের, নতুন কোনাে গল্পের জাল বােনা দেখবে বলে!
জামাল রেজা
ইমদাদুল হক মিলন
৮ সেপ্টেম্বর ১৯৫৫ বিক্রমপুরে জন্ম। প্রথম গল্প। ‘বন্ধু’ ১৯৭৩। প্রথম উপন্যাস যাবজ্জীবন ১৯৭৬। বাংলাদেশে সাহিত্যের পাঠক সৃষ্টিতে ব্যাপক ভূমিকা। তিন পর্বের দীর্ঘ উপন্যাস ‘নূরজাহান’ কালজয়ী সাহিত্য হিসেবে গণ্য। দেশ বিদেশে বহু পুরস্কারে সম্মানিত। বাংলা একাডেমি পুরস্কার ১৯৯২। তাকেশি কায়েকো মেমােরিয়াল এশিয়ান রাইটারস লেকচার সিরিজে বাংলা ভাষার একমাত্র লেখক হিসেবে অংশগ্রহণ ২০০৫। ভারতের আইআইপিএম সুরমা চৌধুরী স্মৃতি আন্তর্জাতিক সাহিত্য পুরস্কার ২০১২।
ফারুক নওয়াজ
জন্ম ১লা নভেম্বর ১৯৫৮, খুলনা শহরে মাতুলালয়ে। পিতা কাজী মাবুদ নওয়াজ প্রয়াত। মা কাজী জাহানারা। পৈতৃকবাস মাগুরা জেলার শ্রীপুর উপজেলাধীন মুজদিয়া। পিতামাতার চতুর্থ সন্তান। সৃষ্টিশীল সাংস্কৃতিক পরিবারে জন্ম; বিধায় ছোটবেলাতেই লেখালেখির হাতেখড়ি। পড়াশুনা করেছেন খুলনা, মাগুড়া, যশোর ও ঢাকার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে। ইসলামের ইতিহাস ও বাংলা সাহিত্যে স্নাতকোত্তর। প্রাকমুক্তিযুদ্ধ সময়ে পত্রপত্রিকায় কবিতা ছাপার মধ্য দিয়ে যাত্রা শুরু। প্রথম বই বড়োদের কবিতা আগুনের বৃষ্টি (১৯৭৭)। দ্বিতীয় বই ও শ্রেষ্ঠ বিবেচিত গ্রন্থ কিশোরকাব্য আমার একটা আকাশ ছিলো (১৯৮৮)। এরপর গল্প, উপন্যাস, ইতিহাস-প্রবন্ধ, ছড়া-কবিতা এবং বড়োদের সাহিত্য মিলিয়ে বইয়ের সংখ্যা ১০০ ছাড়িয়ে গেছে অনেক আগেই। পুরস্কার : অগ্রণী ব্যাংক শিশুসাহিত্য পুরস্কার, এম. নুরুল কাদের শিশুসাহিত্য পুরস্কার, মধুসূদন একাডেমী পুরস্কার, ড. শহীদুল্লাহ পাঠাগার সম্মাননা, পূরবী সম্মাননা, প্রিয়জন অ্যাওয়ার্ড, পালক অ্যাওয়ার্ড, ছোটদের মেলা সম্মাননা, নজরুল সাহিত্য পরিষদ পুরস্কার, প্রতীকী সম্মাননাসহ ডজন খানিক। পেশায় সরকারি চাকুরে। বর্তমানে বাংলাদেশ শিশু একাডেমীর প্রোগ্রাম অফিসার এবং মাসিক শিশু পত্রিকার নির্বাহী সম্পাদক পদে কর্মরত।