'মাছ চাষে প্রযুক্তি পরামর্শ' বইটির ভূমিকা বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে, বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে, আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টিতে প্রাণিজ আমিষের সরবরাহের ক্ষেত্রে সর্বোপরি আর্থসামাজিক উন্নয়নে মৎস্য সম্পদ এক বিরাট ভূমিকা পালন করে আসছে। এদেশের প্রায় ১২ ভাগ লোক প্ৰত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে মৎস্য সেক্টরের কর্মে নিয়োজিত । FAO এর ২০১৪ সালের জরিপে দেখা যায় স্বাদু পানির মাছ আহরণে বাংলাদেশ বিশ্বে চতুর্থ স্থান অর্জন করেছে। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৩ সালে কুমিল্লায় এক জনসভায় বলেছিলেন, মাছ এবং মাছই হবে বাংলাদেশের দ্বিতীয় রপ্তানিযোগ্য অর্থকরী সম্পদ, আজ তার বাণী সত্য বলে প্রতিয়মান হয়েছে। সরকার প্রতি বছর মৎস্য ও মৎস্যজাত পণ্য রপ্তানি করে প্রায় ৫,০০০ কোটি টাকা আয় করে থাকে । জনাব মোঃ লতিফুর রহমান, উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা, কালিগঞ্জ, গাজীপুর চাকুরী জীবনে এসে শত ব্যস্ততার মাঝে একটি পুস্তিকা প্রকাশ করতে যাচ্ছে। এটাই তার জীবনের কারিগরী বইয়ের প্রথম প্ৰয়াশ। আমি বইখানা পড়েছি। আমার সুদীর্ঘ চাকুরীজীবনে চাষিদের কাছে সহজ সাবলীল ভাষায় এবং সময়োপযোগী যে কয়টি বই বিভিন্ন গুণীজন প্ৰকাশ করেছেন তাদের মত বইটির মাধ্যমে মৎস্যাচাষিদের জন্য মাছ চাষের প্রাথমিক জ্ঞান অর্জন করা সম্ভব হবে বলে আমার দৃঢ় বিশ্বাস। খুব স্বল্প সময়ে বইখানি প্রকাশ করেছে। অনেক কিছুই অন্তর্ভুক্ত করতে পারেনি। তবে আমি আশা করি ভবিষ্যতে সকলের সুপরামর্শে বইটির কলেবর বৃদ্ধি পাবে।
বইটিতে আধুনিক মাছ চাষ করতে প্রাথমিকভাবে যে বিষয়গুলো জানা দরকার যেমনঃ জলায়তন, পানির ভৌত ও নার্সারী ব্যবস্থাপনা, মাছ চাষে কতিপয় বিবেচ্য বিষয়, মাছ চাষে খাদ্য ব্যবস্থাপনা, কার্প জাতীয় বড় মাছ চাষ পদ্ধতি, একক ও মিশ্র মাছ চাষের ভিন্ন ভিন্ন প্রজাতিসহ মজুদ ঘনত্ব, এফসিআর, মাছ চাষকালীন সৃষ্ট সমস্যাবলী, প্রচলিত একুয়া পণ্যসমূহ যা মাছ চাষের বিভিন্ন পর্যায়ে মৎস্যচাষিগণ ব্যবহার করে থাকেন সেগুলো অন্তৰ্ভক্ত করা হয়েছে। আমি আশা করি এই বইটি মাছ চাষে এক বিশেষ অবদান রাখবে এবং মৎস্য চাষিদের মাছ চাষে উৎসাহিত ও অনুপ্রাণিত করবে।
'মাছ চাষে প্রযুক্তি পরামর্শ' বইটির সূচিপত্র * মাছ চাষে জলাশয়ের পরিমাপ নির্ণয় * মাছ চাষে পানির ভৌত ও রাসায়নিক গুণাগুণ * প্রয়োজনীয় পরিমাপকসমূহ * মাছের নাসরি ব্যবস্থাপনা * মাছ চাষে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় * মাছ চাষে মজুদ ঘনত্ব * মাছ চাষে খাদ্য ব্যবস্থাপনা * রুই জাতীয় বড় মাছ চাষ পদ্ধতি * মাছ চাষকালীন সৃষ্ট সমস্যাবলী ও সমাধান * প্রচলিত একুয়া পণ্যসমূহ * মাছ চাষ ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম
'মাছ চাষে প্রযুক্তি পরামর্শ' বইটির ফ্ল্যাপের কিছু কথাঃ আমাদের দেশে মাছ চাষ ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। চাষ ব্যবস্থাপনা এবং আহরণোত্তর পর্যায় সম্পর্কে দক্ষতা না থাকায় এবং সঠিক প্রশিক্ষণের অভাবে মাছের কাজ্যিক্ষত উৎপাদন ব্যহত হয় । মাছ চাষ করার জন্য প্ৰাথমিকভাবে কতগুলো নিয়ম জানা আবশ্যক । অধিকাংশ মাছচাষীরা মাছ চাষের নিয়মাবলী জানার জন্য একটি সময়োপযোগী বইয়ের খোঁজ করেন । মাছ চাষিদের কারিগরি পরামর্শ ও সহযোগিতা প্ৰদান করার ক্ষেত্রে বইটি সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।
উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী
উপেন্দ্রকিশোর রায় চৌধুরী (১২ মে ১৮৬৩ – ২০ ডিসেম্বর ১৯১৫) একজন প্রখ্যাত বাঙালি শিশুসাহিত্যিক ও বাংলা ছাপাখানার অগ্রপথিক। তিনি লেখক, চিত্রকর, প্রকাশক, জ্যোতির্বিদ, বেহালাবাদক এবং সুরকার হিসেবে পরিচিত। তার প্রতিষ্ঠিত পত্রিকা *সন্দেশ* পরবর্তীতে তার পুত্র সুকুমার রায় এবং পৌত্র সত্যজিৎ রায় দ্বারা সম্পাদিত হয়। *গুপি-গাইন-বাঘা-বাইন* এবং *টুনটুনির বই* তার উল্লেখযোগ্য সৃষ্টি।