সাত-আট মাসে প্রথম সংস্করণ নিঃশেষ হয়ে যাওয়া লেখকের খুশী হবার মতাে ব্যাপার কিন্তু তার চাইতেও সন্তোষজনক ব্যাপার হলসনাতনপন্থী জ্ঞানপাপীদের অসংযত রচনামৃত, যেগুলাে কখনাে কখনাে প্রকাশ পেয়েছে গালি-গালাজের মাধ্যমে। জনাকয়েক সজ্জন সংযমরক্ষার ব্যর্থপ্রয়াসে পাণ্ডিত্যপূর্ণ আলােচনায় নেমেছেন। তাঁরা আশা করে বসে আছেন যে, বর্তমান লেখক তাঁদের লেখার প্রতিবাদ জানাতে কলম ধরবেন। যদিও উক্ত সমালােচকদের বিরামহীন লেখনীকে অচল করা আমার দ্বারা সম্ভব নয় তবুও দু-একটি কথা জবাব হিসাবে জানাতে হচ্ছে। এই গ্রন্থের প্রতিটি কাহিনীর পৃষ্ঠপটে রয়েছে প্রাসঙ্গিক যুগ সম্পর্কিত গুরুত্ববাহী বস্তুনিচয়, যার তালিকায় আছে-দুনিয়ার কতই না ভাষা, তুলনামূলক ভাষাবিজ্ঞান, মাটি- পাথর-তামা-পেতল লােহার ওপর খােদাই করা সাংকেতিক লিপি অথবা সাহিত্য এবং অলিখিত গীত-কাহিনী-রীতি-রেওয়াজ...ইত্যাদি ইত্যাদি। গ্রন্থ-রচনাকালে লেখকের ইচ্ছা ছিল এবং যে-ইচ্ছা এখনাে সজীব তাহল গৃহীত তথ্যপ্রমাণের প্রামাণিকতা গ্রন্থের পরিশিষ্টে সংযােজন করার। কিন্তু ওই পরিকল্পনার ব্যাপকতা ও বিশালতা এবং সুষ্ঠুভাবে রূপায়ণের জন্য প্রয়ােজনীয় সময়ের অপ্রতুলতার কথা ভেবে শেষ পর্যন্ত হাত গুটিয়ে নিতে হয়েছে। এ ধরনের বইতে মামুলি একটা পরিশিষ্ট জুড়ে দিলেই দায়মুক্ত হওয়া যায় না। আর এটাও মনে হয়েছে, ওই ধরনের পরিশিষ্টের কলেবর মূল গ্রন্থের আয়তনের তুলনায় অনেক বড় হবে। বর্তমান সংস্করণে পরিবর্তন করা হয়েছে যৎসামান্য, এক ঝলকে কোনাে রকমে কাজ সেরে নিয়েছি। ইচ্ছে ছিল, প্রতিটি কাহিনীর সঙ্গে একটি রঙ্গীন চিত্র দেবার কিন্তু যুদ্ধকালীন দুঃসময়ে সেটাও সম্ভব হল না। ----- রাহুল সাংকৃত্যায়ন