অচেনা, অদ্ভুত একটা ঘরে ঘুম থেকে জেগে ওঠে ক্লেয়ার। টের পায় সমস্ত শরীরে ক্ষত। কোথায় এসেছে ও, কি করে আসল? অপরিচিত এক যুবক ডোরান। সে ওকে বলে যে, প্রচন্ড এক তুষারঝড়ের ভিতরে দুর্ঘটনায় চুরমার হয়ে যাওয়া একটা গাড়ি থেকে উদ্ধার করে নিজের বাড়িতে নিয়ে এসেছে ওকে। জীবন বাঁচিয়েছে ওর। বাইরে তখনও তুষারঝড়ের তান্ডবে নাস্তানুবাদ পৃথিবী। পালাতে চেয়েও পালাতে পারে না ক্লেয়ার। অপরিচিত ডোরানের সাথে বন্দি হয়ে পড়ে ও এক বিশাল, অদ্ভুত বাড়িতে। মাথা থেকে হারিয়ে যাওয়া স্মৃতিটুকু মনে করার চেষ্টা করতে করতে অপেক্ষা করে কবে বৈরী প্রকৃতি শান্ত হয়ে ওঠে। কিন্তু প্রকৃতি যে ঘরের ভিতরেও বৈরী! অন্ধকারে কিম্ভূতকিমাকার সব জীব দেখতে পায় ক্লেয়ার। কিছুটা মানুষের মতো, কিছুটা জন্তুর মতো দেখতে কারা ওরা? কি কারণে বিকৃত হয়ে গেল ওদের শরীর? মানবিক সত্তা, বুদ্ধিমত্তা খুইয়ে কীসের প্রভাবে এরকম প্রাগৈতিহাসিক যুগের প্রাণীতে পরিনত হয়েছে পৃথিবীর মানুষেরা। মাংসাশি, নির্বোধÑ লড়াই করে টিকে থাকাই প্রধান বৈশিষ্ট্য হয়ে গেছে ওদের। নিজেদের পরিচয় ভুলে পরিণত হয়েছে অন্ধকারের জীবে। কি করবে এবার পৃথিবীতে টিকে থাকা বাকি মানুষগুলো? কোনো ভয়ংকর বৈজ্ঞানিক গবেষণার ফলাফলেই এরকম হল নাকি কোনো মহাজাগতিক শক্তির প্রভাবে, নাকি কোনো রশ্মির বিকিরণে? ক্লেয়ার কি খুঁজে পাবে ওর একমাত্র বোনকে? বাঁচতে পারবে কি ওরা আধাজন্তুতে পরিণত হওয়া স্মৃতিভ্রষ্ট, বুদ্ধিভ্রষ্ট ভয়ংকর মানুষগুলোর হাত থেকে? এ এক অন্যরকম লড়াই এর গল্প। মানবিকতার সাথে জান্তবিকতা, বুদ্ধিমত্তার সাথে নির্বুদ্ধিতা, সভ্যতা আর অসভ্যতার লড়াই। সেইসঙ্গে প্রকৃতির সাথে অত্যাধুনিক প্রযুক্তিনির্ভরতারও দ্ব›দ্ব বটে। ভৌতিক ও বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনীর এক চমৎকার মেলবন্ধন ভয়েসেস ইন দ্যা স্নো।
ডার্সি কোটস
জন্ম অস্ট্রেলিয়াতে। ২০১৪ সালে প্রথম প্রকাশিত হয় তাঁর লেখা ভৌতিক উপন্যাস ‘ঘোস্ট ক্যামেরা’। তুমুল জনপ্রিয়তা পায় তাঁর প্রথম লেখা। এরপর একের পর এক তিনি উপহার দিয়ে চলেন সার্থক সব ভৌতিক ও রহস্যোপন্যাস। দ্যা হান্টিং অব ব্ল্যাকউড হাউজ (২০১৫), দ্যা হান্টিং অব গিলেসপী হাউজ (২০১৫), ডেড লেক (২০১৫), প্যারাসাইট (২০১৬), দ্যা হাউজ নেক্সট ডোর (২০১৭), ক্রাভেন ম্যানর (২০১৭), দ্যা ক্যারো হান্ট (২০১৮) এরকম বিশটিরও অধিক জনপ্রিয় উপন্যাস লিখেছেন তিনি যার অধিকাংশই ইউএসএ টুডে বেস্ট সেলার বুক। এ্যামাজন বেস্ট সেলিং লেখকদের তালিকায়ও নাম রয়েছে তাঁর। অস্ট্রেলিয়াতে সেন্ট্রাল কোস্টে বাবা-মায়ের সাথে বসবাস করেন অবিবাহিত ডার্সি। বনজঙ্গলে ঘোরা, বই পড়া আর বিড়াল পোষা তাঁর শখ। তাঁর লেখা ভৌতিক উপন্যাসগুলো শহুরে ভৌতিক কাহিনী বলে মনে করা হয়।