কোস্তার কাপুচিনো কফিতে শেষ চুমুক দিল সৌরভ; সেইসঙ্গে নিয়ে ফেলল সাহসী ও কঠিন সিদ্ধান্তটি। সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর মনে হচ্ছে, সংবাদ বিরতির মতো জীবন চলে যাচ্ছে সাময়িক বিরতিতে। অতীতের হাজারো দুশ্চিন্তা হচ্ছে কফিনবন্দী। অবশ্য এমন সিদ্ধান্ত এক জীবনে বেশিবার নেওয়ার সুযোগ নেই। বড় সংক্ষিপ্ত এই জীবন। সেই অর্থে সৌরভকে দ্বিতীয়বারের মতো ভাগ্যবান বলা চলে। ভীষণ সৌরভহীন ও গ্লানিময় হয়ে উঠেছে ভিনদেশি জীবন। ব্রাইটন ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য কয়েক মাস অন্তর্দ্বন্দ্বে কেটেছে তার দিনরাত। শেষমেশ যুক্তরাজ্যের ইংলিশ চ্যানেল তীরবর্তী ব্রাইটন শহর ছাড়ার সিদ্ধান্ত পাকা করল সৌরভ।
জন্মভূমিতে নতুনভাবে জীবন শুরুর সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরক্ষণেই সৌরভের হৃদয়ে ভর করতে শুরু করেছে সুখ-দুঃখের নানা স্মৃতি। ব্রাইটনে কেটে গেছে তার জীবনের একটি যুগ! আজ থেকে প্রায় বারো বছর আগে একটি ঝড় তাকে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত করে তুলেছিল। এতটাই বিপর্যস্ত যে সৌরভ চোখের সামনে দেখতে পাচ্ছিল স্রেফ দুটো অপশন- আত্মহত্যা করা নতুবা জীবনকে সেকেন্ড চান্স বা দ্বিতীয় সুযোগ দেওয়া! জীবনের সেই ভীষণ অবেলায় এক পর্যায়ে সৌরভ নিজেই অনুভব করেছিল, ‘আশা’ নামক ভেলা তাকে নিঃশেষ হওয়ার হাত থেকে বাঁচাবে। জীবনকে নতুনভাবে শুরু করতে আশার ভেলায় ভর করে যুক্তরাজ্যে পাড়ি জমিয়েছিল সৌরভ। কিন্তু বিদেশের বুকেও অবেলার খপ্পরে পড়েছে তার জীবন।
আসিফ মেহ্দী
সাহিত্যের প্রতি আসিফ মেহদীর ঝোঁক ছাত্রজীবন থেকেই। দেশসেরা দুই ফান ম্যাগাজিন ‘উন্মাদ’ ও ‘রস+আলােতে লেখার সুবাদে রম্যলেখক হিসেবে পরিচিতি পেয়েছিলেন আগেই। সেই সূত্রে প্রথম বইটাও রম্যগল্পের। বেতাল রম্য নামের সেই বইয়েই আসিফ মেহদী লাভ করেন তুঙ্গস্পর্শী জনপ্রিয়তা। এরপর একে একে প্রকাশিত তাঁর প্রতিটি বই শুধু পাঠকপ্রিয়তাই লাভ করেনি, উঠে এসেছে বেস্ট সেলার বইয়ের তালিকায়।
বর্তমানে লিখছেন দেশসেরা ম্যাগাজিন ‘কিশাের আলাে বিজ্ঞান আনন্দ ও বিজ্ঞান চিন্তা’তে। ব্যঙ্গ আর হাসির সঙ্গে গভীর জীবনবােধের প্রতিফলন ঘটিয়েই আসিফ মেহদী এ সময়ের জনপ্রিয় লেখকদের কাতারে নিজের অবস্থানটা বেশ পাকাপােক্ত করে ফেলেছেন। সম্প্রতি এনটিভিতে প্রচারিত তার লেখা নাটক ‘অ্যানালগ ভালােবাসা’-র বিষয়বস্তুর জীবনঘনিষ্ঠতা দর্শকদের হৃদয় ছুঁয়েছে। তাঁর প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা চৌদ্দ।
এসএসসি ও এইচএসসি দুই পরীক্ষাতেই ঢাকা বাের্ডে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে স্ট্যান্ড করেছেন আসিফ মেহদী। বুয়েট-এ ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে পড়াশােনা করেছেন। ভালাে ফলাফলের স্বীকৃতিস্বরূপ ছাত্রজীবনে পেয়েছেন ‘বিমানবাহিনী প্রধানের শ্রেষ্ঠ মেধা ট্রফি নটরডেম। কলেজ থেকে ‘অ্যাওয়ার্ড ফর এক্সিলেন্স' বুয়েট থেকে একাধিকবার ‘ডীন স্কলারশিপ’ ঢাকা শিক্ষা বাের্ড থেকে একাধিকবার ট্যালেন্টপুলে ‘বাের্ড স্কলারশিপ এবং আরও নানাবিধ পদক ও সম্মাননা। ৩৩তম বিসিএস পরীক্ষায় নিজ ক্যাডারে ১ম স্থান অধিকার করে বর্তমানে বাংলাদেশ বেতারের গবেষণা ও গ্রহণ কেন্দ্রে সহকারী বেতার প্রকৌশলী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তাঁর সহধর্মিনী মৌবীণা জ্যাকলিন বারি পেশায় ডাক্তার।