রাজনীতির ইতিহাস পড়তে হয় সচেতন ও যুক্তিতর্ক শেখার প্রয়োজনে। বাংলাদেশের
রাজনীতিতে মওলানা ভাসানীর আপসহীন ভূমিকা ও সংগ্রামী জীবন যতই পড়া যাক, নতুন
কিছু তথ্য পড়ার আগ্রহ শেষ হবার নয়। স্বাধীনতা উত্তরকালে মওলানা ভাসানীর জ্বালাময়ী
ভাষণ ছিল জনতার পথনির্দেশক। থেমে থাকেনি জনতার গণতান্ত্রিক আন্দোলন।
স্বাধীনতা উত্তরকালে মওলানা ভাসানী ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পথপ্রদর্শক।
বঙ্গবন্ধু ভাসানীকে সবসময় গুরু বলে মনে করতেন। তাঁর কথাগুলোকে আমলে নিতেন।
ভাসানী বঙ্গবন্ধুকে ছেলে মনে করতেন। রাজনীতির বিচিত্র আবহাওয়ায় ভাসানী-মুজিব
ছিলেন দুই মেরুর বাসিন্দা। ভাসানী বক্তব্যের মাধ্যমে কীভাবে বঙ্গবন্ধু সরকারকে
সহযোগিতা ও পথদেখাতে চেয়েছিলেন তা জানতে পড়তে পারেন বইটি।
ভাসানী-মুজিব-জিয়া বইটিতে মূলত ১৯৭২-১৯৭৬ সাল পর্যন্ত মওলানা ভাসানীর রাজনীতিতে
উত্তাপ ছড়ানো ভাষণ, চিঠি, বিবৃতি দিয়ে সাজানো হয়েছে। বইটি পড়লে সহজে অনুভব করা
যায়, আবেগ নয় বাস্তবতা নিয়ে মওলানা ভাসানী ক্ষমতাসীন সরকারকে অনেক বিষয়ে
সতর্ক করেছিলেন। সরকার সেটা অনুভব করেছিলেন ঠিকই কিন্তু বাস্তবতার আলোকে
পদক্ষেপ নিতে পারেননি। স্বাধীনতাপর কয়েক বছর বেঁচে থাকা মওলানা ভাসানীর সেইসব
দিনগুলোর তথ্য জানতে পাঠকবৃন্দ পড়তে পারেন বইটি।
মওলানা ভাসানী জীবিত থাকার সময় পর্যন্ত ধানের শীষ ছিল ন্যাপের নির্বাচনী প্রতীক।
১৯৭৩ সালের প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচন করেছিল ন্যাপ।
জিয়াউর রহমান ক্ষমতা গ্রহণের পর বেশিদন বেঁচেছিলেন না মওলানা ভাসানী। এরপর
ন্যাপের বড় অংশ মশিয়ুর রহমান যাদু মিয়ার নেতৃত্বে জিয়ার নেতৃত্ব মেনে নিয়ে প্রথমে
জাতীয়তাবাদী ফ্রন্ট ও পরে বিএনপিতে যোগদান করেছিলেন...। বঙ্গবন্ধুর হত্যার পর কার
কী ভূমিকা ও জিয়ার রাজনীতিতে আগমন, সে সংক্রান্ত তথ্যও রয়েছে বইটিতে।