আয়মান সাদিক বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় অনলাইন শিক্ষামূলক প্ল্যাটফর্ম টেন মিনিট স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী। প্রতি মাসে ১ কোটিরও বেশি শিক্ষার্থী পড়াশোনা করছে এই প্ল্যাটফর্মটিতে। তিনি গত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে শিক্ষকতা করছেন। অফলাইনে পড়ানোর মাধ্যমে যাত্রা শুরু করলেও সারাদেশের সব শিক্ষার্থীদের একসাথে, এক প্ল্যাটফর্মে পড়ানোর স্বপ্ন নিয়ে পরবর্তীতে অনলাইনে পড়ানো শুরু করেন। ফেসবুক ও ইউটিউবে লাইভ ক্লাস, ভিডিও টিউটোরিয়াল ও বিভিন্ন কোর্সের মাধ্যমে তিনি এরই মধ্যে কয়েক কোটি শিক্ষার্থীকে পড়িয়েছেন।
তিনি একজন পাঠকপ্রিয় লেখকও। তাঁর লেখা 'নেভার স্টপ লার্নিং', 'স্টুডেন্ট হ্যাকস', 'কমিউনিকেশন হ্যাকস' ও 'লোকে কী বলবে' ছিল অমর একুশে গ্রন্থমেলার বেস্টসেলার বই। এসবের পাশাপাশি নিজের ফেসবুক পেইজ ও ইউটিউব চ্যানেল থেকে তিনি নিয়মিত ফ্রি শিক্ষামূলক ভিডিওর মাধ্যমে ১ কোটি শিক্ষার্থীর দক্ষতা উন্নয়নে ভূমিকা রাখছেন। বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থায় অভূতপূর্ব অবদান রাখায় তিনি রাণী দ্বিতীয় এলিজাবেথের কাছ থেকে 'Queen's Young Leader' পুরস্কার পান। এছাড়াও ২০১৮ সালে তিনি বিশ্বের স্বনামধন্য ম্যাগাজিন ফোর্বসের '30 Under 30' লিস্টে অন্তর্ভুক্ত হন।
আয়মান সাদিক
আয়মান সাদিক ২ সেপ্টেম্বর ১৯৯২ সালে কুমিল্লার একটি সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্ম গ্রহণ করেন। তিনি হচ্ছেন একজন বাংলাদেশী শিক্ষা উদ্যোক্তা এবং ইন্টারনেট ব্যক্তিত্ব। তিনি ২০১৫ সালে www.10minuteschool.com প্রতিষ্ঠা করেছেন, যার মাধ্যমে অনলাইনে শিক্ষা বিষয়ক বিভিন্ন তথ্য এবং সহযোগীতা বিনামুল্যে দিয়ে থাকে। এই প্রতিষ্ঠান এসএসসি, এইচএসসি এবং বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিক্যাল কলেজ ও ইঞ্জিনিয়ারিং ইন্সটিটিউট এর শিক্ষার্থীদের জন্য দুই সহস্রাধিক ভিডিও তৈরী করেছে। এটি মুলত ইংরেজি, গণিত এবং বিজ্ঞানের নানা বিষয় যা একাডেমিক সিলেবাসের আওতাভুক্ত এবং বিভিন্ন বিষয়ের উপর দক্ষতা কিভাবে বাড়ানো যায়; তা নিয়ে ভিডিও তৈরী করে। তাঁর পিতা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল তায়েব বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস-এর প্রধান আর্থিক কর্মকর্তা এবং তাঁর মাতা শারমিন আক্তার একজন গৃহিণী। আয়মান চট্টগ্রামের ক্যান্টনমেন্ট স্কুল এণ্ড কলেজে অধ্যয়ন করেছেন। তিনি উচ্চমাধ্যমিকে অধ্যয়ন করেছেন আদমজী ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল এণ্ড কলেজে। আয়মান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন থেকে বিবিএ (ব্যচেলর অব বিজনেস এডমিনিস্ট্রেশন) তে স্নাতক সম্পন্ন করেন।
এক নজরে আয়মান সাদিক
জন্মঃ ২ সেপ্টেম্বর ১৯৯২, কুমিল্লা
পিতাঃ কর্ণেল আবু তায়েব
মাতাঃ শারমিন আক্তার
বাসস্থানঃ ঢাকা, বাংলাদেশ
জাতীয়তাঃ বাংলাদেশী
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানঃ ব্যবসায় প্রশাসন, ঢাবি, চট্টগ্রাম ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক কলেজ
পেশাঃ শিক্ষক, বক্তা
প্রতিষ্ঠাতাঃ ১০ মিনিট স্কুল
অন্তিক মাহমুদ
বর্তমান সময়ে বাংলাদেশের অন্যতম জনপ্রিয় কার্টুনিস্ট, লেখক ও অ্যানিমেটর অন্তিক মাহমুদ। পুরো নাম— মাহাথির মাহমুদ অন্তিক। তার আঁকাআকির শুরুটা নবম শ্রেণিতে পড়ার সময় হলেও কমিক্স বই নিয়ে তার আগ্রহটা একদম ছোটবেলা থেকেই। বাবা-মায়ের সঙ্গে সেসময় অন্তিক ছিলেন জাপানে। পরে দেশে ফিরে চাঁদপুরে থাকার সময় বন্ধুদের জন্য খাতার পাতা ছিড়ে কমিক আকাঁর মাধ্যমে তার কমিক্স লেখার শুরু। বিশ্ববিদ্যালয়ের শুরুতে বন্ধুদের জন্মদিনের ভিডিও বানানোর মাধ্যমে তার ইউটিউব ভিডিও বানানোর হাতেখড়ি হলেও, বর্তমানে তার ইউটিউব চ্যানেলে যুক্ত মানুষের সংখ্যা প্রায় ৬ লক্ষ। এই সংখ্যাটা ফেসবুকেও ৬ লক্ষের বেশি।
কমিক্স বই লেখার শুরুর গল্প জানতে চাইলে এসএসসির পরের সময়টার কথা তুলে ধরে অন্তিক মাহমুদ বলেন, 'ঢাকা কমিক্সের প্রতিষ্ঠাতা মেহেদি ভাইয়ের একটি কর্মশালায় অংশগ্রহণের পর আমি কমিক বুক আর্টিস্ট হবো তা ঠিক করে ফেসবুকে পোস্ট দিই, পরে আমার এই স্বপ্নের কথাটি পত্রিকায় ছাপা হয়। এই ঘটনাটা আমার কমিক বই লেখার ইচ্ছাটাকে আরও শক্ত করে।'বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির আগেই তিনি বাংলাদেশের অন্যতম জনপ্রিয় একটি দৈনিক পত্রিকায় কার্টুনিস্ট হিসেবে কাজ করেন। এরপর ২০১৭ সালের জানুয়ারিতে তিনি বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস-এ তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগে পড়াশুনা শুরু করেন। এই সময়টাতেই একজন ইউটিউবার হিসেবে তার যাত্রা শুরু। বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের শুরুর গল্পগুলো থেকে অনুপ্রাণিত হয়েই তার ইউটিউব চ্যানেলের কার্টুন ভিডিওর গল্পগুলো তৈরি করা। ২০১৭ সালের শেষ দিকে অন্তিক মাহমুদের ব্লু হোয়েল নিয়ে বানানো এক অসাধারণ ইউটিউব ভিডিও সাদমান সাদিক ও টেন মিনিট স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা আয়মান সাদিকের নজরে আসে। এরপর ২০১৮ সালের শুরুতে তিনি 'ক্রিয়েটিভ এক্সিকিউটিভ' হিসেবে টেন মিনিট স্কুলে কাজ শুরু করেন।
ইউটিউবে আসার গল্পটা জানতে চাইলে, অন্তিক মাহমুদ জানান, 'টেন মিনিট স্কুলে কাজের সুবাদে আয়মান সাদিক ভাই সহ প্রথমেই একটি ভিডিও বানিয়েছিলাম, যেটি আমার অন্তিক কার্টুন ভার্সনটাকে সবার মাঝে ছড়িয়ে দিতে সহয়তা করেছিল, আর ইউটিউবে চ্যানেলেরও ভালো গ্রোথ হয়েছিল। এটি আমাকে পরবর্তী দিনগুলোতে অনেক অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে।' সফল ইউটিউবার পরিচয় ছাড়াও লেখক হিসেবে এই তরুণ ব্যাপক জনপ্রিয়। তিনি আয়মান সাদিকসহ বইমেলার বেস্ট সেলার বই 'ভাল্লাগেনা' প্রকাশ করেন। ইউটিউবে আসার গল্পটা জানতে চাইলে, অন্তিক মাহমুদ জানান, 'টেন মিনিট স্কুলে কাজের সুবাদে আয়মান সাদিক ভাই সহ প্রথমেই একটি ভিডিও বানিয়েছিলাম, যেটি আমার অন্তিক কার্টুন ভার্সনটাকে সবার মাঝে ছড়িয়ে দিতে সহয়তা করেছিল, আর ইউটিউবে চ্যানেলেরও ভালো গ্রোথ হয়েছিল। এটি আমাকে পরবর্তী দিনগুলোতে অনেক অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে।' সফল ইউটিউবার পরিচয় ছাড়াও লেখক হিসেবে এই তরুণ ব্যাপক জনপ্রিয়। তিনি আয়মান সাদিকসহ বইমেলার বেস্ট সেলার বই 'ভাল্লাগেনা' প্রকাশ করেন। এছাড়াও চল, তিন, নোমান-১, নোমান-২, নোমান-৩ এবং প্যারাহীন তার প্রকাশিত কমিক বই। ইউটিউবার হিসেবে সবচেয়ে সুন্দর স্মৃতি নিয়ে জানতে চাইলে অন্তিক মাহমুদ বলেন, '২০১৯ সালের যেই মুহুর্তটায় আমার ইউটিউব চ্যানেলে যুক্ত হওয়া মানুষের সংখ্যা ১ লাখে পৌঁছায়, সেই মুহূর্তের স্মৃতি কখনো ভুলব না।'
নিজেকে ছাড়িয়ে যাওয়ার স্বপ্ন নিয়ে অন্তিক মাহমুদ ২০১৯ সালে 'অন্তিক অ্যানিমেটেড স্টুডিও' প্রতিষ্ঠা করেন। এই স্টুডিওর প্রথম প্রজেক্ট ছিল শূন্য ব্যান্ডের বেহুলা মিউজিক ভিডিওটি, যা ২০২১ সালের ২০ মার্চ মুক্তি পাওয়া মাত্রই সারাদেশে ব্যাপক সাড়া ফেলেছিল। অন্তিক অ্যানিমেটেড স্টুডিও ও শূন্য ব্যান্ডের যৌথ প্রযোজনায় তৈরি করা এই মিউজিক ভিডিওটি এখন পর্যন্ত দেখা হয়েছে প্রায় ২৮ মিলিয়নেরও বেশি বার। সম্প্রতি আর্ট ক্যাটাগরিতে দারাজ প্রযোজিত 'মার্ভেল ইনফ্লুয়েন্সারস্ অফ টুমরো অ্যাওয়ার্ড' পেয়েছেন অন্তিক মাহমুদ।
জনপ্রিয় এই লেখক ও কার্টুনিস্টের খুব দ্রুতই দেশের কার্টুন ও কমিক অঙ্গনে নেতৃত্ব দিতে চান। পাশাপাশি লেখালেখি ও ইউটিউবিংও চালিয়ে যাবেন।
অন্তিক মাহমুদের জন্ম ১৮ মার্চ ১৯৯৩ সালে ঢাকায় জন্ম হলেও বেড়ে উঠেছেন চাঁদপুরে। পুরো নাম মাহাথির মাহমুদ আন্তিক। পড়াশোনা করেন চাঁদপুর হাসান আলি সরকারি হাই স্কুলে গ্র্যাজুয়েট করেন ময়মনসিংহের কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ থেকে বর্তমানে পড়ছেন বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস এ পেশায় তিনি একজন কার্টুনিস্ট ও ইউটিউবার।
অন্তিক মাহমুদ এর বই সমূহ
ভাল্লাগে না, প্যারাহীন, তিন, নোমান ইত্যাদি।