একটি প্রাচীন এবং পবিত্র স্থাপনা। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলার প্রিয়তম বান্দাদের হাতে নির্মিত একটি আদিম গৃহ যেখানে পৌঁছুবার জন্য প্রতিটি বিশ্বাসী হৃদয়ে রয়েছে সুপ্ত আকুলতা। নিবিষ্ট চিত্তে, শুভ্র সফেদ বসনে আবৃত হয়ে আল্লাহর বান্দাগণ চক্রাকারে ঘুরছে সেই গৃহটিকে ঘিরে—যেন তারা কোনো মানুষ নয়, আসমান থেকে নেমে আসা ফেরেশতাদের দল।
মরুভূমির পর মরুভূমি। তার মাঝে পাথুরে পাহাড়। গা ঝলসানো রোদ সেখানে। সেই পাথুরে পাহাড়ের উপত্যকায় আসলেন আল্লাহর সবচেয়ে প্রিয় বান্দা—মুহাম্মাদ সাল্লাললাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। তাঁকে আপন করল আরেকটি নান্দনিক শহর—মদিনা।
মক্কা এবং মদিনা—বিশ্বাসী মনে এই দুটো শহর যেন কল্পলোকের কোনো নগরীর মতো যার পরতে পরতে আঁকা আছে স্মৃতি আর স্বপ্ন। যার বাতাসে আছে চিত্তহারী ঘ্রাণ। যার আলোতে আছে দৃষ্টিকে ছাপিয়ে যাওয়ার শক্তি। এই দুটো শহরজুড়ে নবিজির এত স্মৃতি ছড়িয়ে আছে যে—একবার সেখানে যে পৌঁছায়, সেই মায়া জীবনেও তার পিছু ছাড়ে না।
এমন আকুল হৃদয় এবং ব্যাকুল অপেক্ষা নিয়ে লেখক আরিফ আজাদ একদিন পৌঁছে গিয়েছিলেন এই স্বাপ্নিক শহর দুটোতে। মক্কার অলিগলি পথ আর মদিনার আলো-হাওয়া-জল—এই দুইয়ে লেখক খুঁজে নেওয়ার চেষ্টা করেছেন সেই আদিম ঘ্রাণ, যে ঘ্রাণ হৃদয়কে মাতোয়ারা করে তোলে। ‘উমরাহ সফরের গল্প’ বইটিতে লেখক লিপিবদ্ধ করেছেন তার সেই স্মৃতিময় ভ্রমণের গল্পগুলোই। তিনি শুধু স্মৃতিই রোমন্থন করেন নি, যেন সময়ের ভেলায় ভেসে পাঠককে টেনে নিয়ে গেছেন সাড়ে চৌদ্দ’শ বছর আগের দুনিয়ায়। ‘উমরাহ সফরের গল্প’ বইটি পড়ে পাঠকের মনে এই অনুভূতিটাই প্রবল হবে।