রক্তের দামে স্বাধীনতা কেনার পর যখন দেখবেন চালের দাম বেড়ে গেল, রক্ত তখন চালের কাছে হেরে যায়; ডালের কাছে হেরে যায়, তেলের কাছে হেরে যায়। ‘মুক্তি’ আর ‘যুদ্ধ’ আলাদা দুটি শব্দ হয়ে যায়। তখন এসে যে কবিরা মুক্তির কথা বলে তারা যুদ্ধ ঘৃণা করে। যে কবিরা যুদ্ধের কথা বলে তারা মুক্তিকে দূরে রাখে। চাল-ডাল মজুত করা মহাজন এই সুযোগে প্রশ্ন তোলে, “সবাইকে অত কবি হতে হবে কেন?” স্বাধীনতার অনেক অনেক পরের এই প্রশ্নের উত্তর স্বাধীনতার যুদ্ধেই দিয়েছিল এই উপন্যাসের নায়িকা, “যুদ্ধের ময়দানে একজন যোদ্ধা কম পড়লে হয়তো যুদ্ধ দীর্ঘায়িত হবে, কিন্তু যুদ্ধ শেষে একজন কবি কম পড়লে স্বাধীনতার অপেক্ষা দীর্ঘায়িত হবে।”
১৯৭১-এর গলি ধরে আগানো এই আখ্যান ঠিক মুক্তিযুদ্ধের গল্প নয়। কখনও মুক্তির গল্প, কখনও যুদ্ধের গল্প। গল্পের শুরু ১৯৭৫-এর ১৫ আগস্ট মধ্যরাতে। গল্পের নায়ক বাস করে ২০২৩-এ, সে একজন লেখক এবং প্রথম উপন্যাস প্রকাশ হওয়ার পর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সে আর লিখবে না। আর নায়িকা? সে শুধু ভালো থাকুক, অনেক ভালো থাকুক। যেমন ভালো থাকবো বলে আমরা এনেছিলাম স্বাধীনতা, যেমন ভালো থাকবে বলে স্বাধীনতা রং নিয়েছে সবুজ।
আহসান কবির
আহসান কবির জন্ম: ১ ফেব্রুয়ারি ১৯৬৭। খুলনার খালিশপুরে। ছােটকাল কেটেছে ক্রিসেন্ট মাধ্যমিক বিদ্যালয় এবং বরিশাল ক্যাডেট কলেজে। কলেজজীবন শেষে যােগ দিয়েছিলেন বাংলাদেশ নৌবাহিনীতে।। নৌবাহিনীর শিক্ষানবীশ অফিসার হিসেবে পড়তে এসেছিলেন প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে। ১৯৯১ সালে চাকরি হারানাের পর বদলে ফেলেন তার জীবন। এরপর বিচিত্র অভিজ্ঞতা! কখনাে টিউশনি, কখনাে কোচিং সেন্টারে ক্লাস নেয়া, কখনাে সিকিউরিটি অফিসারের পেশায় পার করেছেন সময়। '৯৫ সালে কিছুদিনের জন্য যায় যায় দিন এর সহযােগি প্রকাশনা, সাপ্তাহিক মৌচাকে। টিল-এ কাজ করেছেন। ১৯৯৮ সালে যায় যায় দিন প্রতিদিন-এ যােগ দিয়ে সাংবাদিকতা জীবন শুরু করেন। এরপর কাজ করেছেন প্রথম আলাে, মানবজমিন, মাতৃভূমি ও আমার দেশ পত্রিকায়। প্রথম আলাের আলপিন-এ প্রকাশিত তার রম্যরচনাগুলাে জনপ্রিয় হয়েছিল। এরপর আমার দেশ-এর রম্য সাময়িকী ভিমরুল-এর প্রথম একশােটি সংখ্যা সম্পাদনা করেছেন। বর্তমানে একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলে অনুষ্ঠান বিভাগে কর্মরত।