দুঃখজনক হলেও সত্য, আমাদের প্রকৃত সাফল্যের সংজ্ঞাই আজ আমরা ভুলে বসেছি। বিস্মৃত হয়ে পড়েছি নিজেদের সোনালি অতীত সম্পর্কে। তাই তো দেখা যায়, কোথাও কোনো রকম একটা চাকরি জুটলেই, একটু পার্থিব অনুদান মিললেই আজ আমরা বেজায় খুশি। শত অন্যায়-অনাচারের মাঝে থেকে নিজেদের নিগৃহীত অবস্থান দেখেও স্বাচ্ছন্দ্যে বলি, এই তো বেশ আছি। বস্তুত, মনোবল যখন শূন্য হয়ে পড়ে, সাফল্যের প্রকৃত স্বরূপ যখন অজানা থাকে—তখন ভালো থাকার অবস্থা এমনই হয় মানুষের কাছে। আমাদের অতীত ও বর্তমানের দিকে তাকালেই স্পষ্ট যে, কত বিশাল ব্যবধান গড়ে উঠেছে সালাফে সালিহিন আর আমাদের মাঝে! সালাফের পথ থেকে আজ আমরা কত দূরে! ইলম শেখা-শেখানোর পথে কষ্ট-ক্লেশ সহ্য করা, দ্বীনের প্রচার-প্রসারে অবিরাম দাওয়াতের ময়দানে ছুটে চলা, দ্বীনের ঝান্ডাকে সমুন্নত রাখার লক্ষ্যে আল্লাহর রাহে নিজের জান-মাল উৎসর্গ করা—দ্বীনের প্রতিটি অঙ্গনে দৃষ্টান্ত স্থাপনের ক্ষেত্রে সালাফের তুলনা শুধু তাঁরাই। আর আমরা তো হলাম কেবল সংখ্যাধিক্যের পাল্লায় ভারী আর মুখে ‘এটা কীভাবে সম্ভব?’ ‘এটা কীভাবে সম্ভব?’ বুলি আওড়াতে থাকা দুর্বল ও মনোবলহারা! রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদের সম্পর্কেই বলেছেন, (بَلْ أَنْتُمْ يَوْمَئِذٍ كَثِيرٌ، وَلَكِنَّكُمْ غُثَاءٌ كَغُثَاءِ السَّيْلِ،) ‘...বরং তোমরা সেদিন সংখ্যায় অনেক হবে। কিন্তু তোমরা হবে স্রোতে ভেসে যাওয়া খড়কুটোর মতো।...’ অবশ্য এ লাঞ্ছনা-অপদস্থতা থেকে মুক্তির পথও তিনি বাতলে দিয়েছেন। প্রয়োজন শুধু আমাদের সে পথে ফিরে আসা—সালাফের মতো উচ্চ মনোবলে বলীয়ান হয়ে দ্বীনের ঝান্ডাকে সমুন্নত করা।