আমি এখন ঠিক কী করবো আমার জানা নেই। মাথা পুরো শূন্য হয়ে আছে। আমি টুশিকে নিয়ে বেরিয়ে পড়লাম। টুশি কান্না করছে। আমি হেঁটে চলছি। আজ আমার কান্না পাচ্ছে না। হাঁটতে হাঁটতে কিছুদূর যেতেই দেখি রাস্তার পাশে দেয়ালে অনেক গামছা টাঙানো। যেন ভাসমান গামছার হাট বসেছে এখানে। আমি একশ টাকা দিয়ে একটা গামছা কিনলাম। গামছা গলায় পেঁচিয়ে কিছুক্ষণ পর আমার মনে হলো, এই গামছা আমি কেন কিনলাম? গামছা কেনার বিশেষ কোনো কারণ খুঁজে পাচ্ছি না। আমি নিজেই এখন নিজের উপর বিরক্ত হয়ে- শ্যামলী থেকে হাঁটা শুরু করে একেবারে গুলিস্থান এসে থেমেছি।
‘ঘোড়া যদি ডিম পাড়তো,
সেই ডিমে কি বাচ্চা ফুটতো?
ঘোড়ার বাচ্চারা কি খেতো,
ঘাস নাকি দুধ?’
হুট করেই ঘোড়া নিয়ে গবেষণা করছি না। গুলিস্থান মসজিদের সামনে বসে আছি অনেকক্ষণ। বসে বসে মানুষের ব্যস্ততা দেখছি। মানুষ দেখা যার নেশা হয়ে যায়, তাকে আর অন্য কোনো নেশায় আর টানে না। আমাকে আজ ঘোড়ায় টানছে। এক ঘণ্টার অধিক সময় নিয়ে আমি ঘোড়া দুটিকে দেখছি। বাম পাশের ঘোড়াটা সম্ভবত অসুস্থ। চোখের কোণে লেগে আছে অশ্রু। ডান পাশে থাকা ঘোড়াটা জিভ দিয়ে সেই অশ্রু মুছে দেওয়ার সাঁইত্রিশ বার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছে। ওর সফলতা দেখার ইচ্ছা ছিলো। দেখা হলো না, টুশি কাঁদছে- আমি উঠে দাঁড়ালাম। আজ টুশির মন ভালো নেই। আজ এই শহরটায় সন্ধ্যা নেমেছে।