'টার্কি পালন নতুন সম্ভাবনার হাতছানি' বইয়ের ফ্লাপ: আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে ব্ৰয়লারের একমাত্র বিকল্প হতে পারে টার্কি (Turkey)। না, আমি Turkey (তুরস্ক) দেশের কথা বলছি না। এই নামের একটি পাখিও আছে। আজ আর নতুন করে টার্কির পরিচয় করিয়ে দিব না। বাংলাদেশের অনেক অঞ্চলেই আছে, তবে বেশিরভাগ-ই সৌখিন খামারি বা পাখি প্রেমীরাই পালন করেন। কিন্তু ওই পর্যন্তই, শুধুই সৌখিনতা। যেখানে সাড়ে চার থেকে পাঁচ কোটি টার্কি Thanks Giving Day তে একদিনেই শুধুমাত্র আমেরিকানরা খেয়ে ফেলে। আমাদের দেশেও আয়োজন করে খায়। টার্কি আমাদের দেশে এখনো বিত্তবানদের খাদ্য তালিকায় যোগ হয়নি, এটি এখনো(Royal Food) রাজকীয় খাবারের মর্যাদায়-ই আছে। এর কারণ টাকা থাকলেও আপনি হাটে বাজারে দেশের সর্বত্র যখন খুশি পাচ্ছেন না। অথচ একটুখানি সচেতনতা, সদিচ্ছা এবং ক্রেতা-বিক্রেতার পারস্পরিক অংশগ্রহণে এই টার্কিই হয়ে উঠতে পারে আত্মকর্মসংস্থানের মাধ্যম, নিরাপদ ও সহজলভ্য মাংসের যোগান, সর্বপরি ব্যাপক উৎপাদনের মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের উপায়। 'টার্কি পালন নতুন সম্ভাবনার হাতছানি' বইয়ের সূচিপত্র:* টার্কির জাত পরিচয় ১১* ছোট থেকেই শুরু হোক বড় খামার ১৭* গল্পের ছলে টার্কি বিদ্যাঃ বিষয়: সৌখিনতা ২১* গল্পের ছলে টার্কি বিদ্যাঃ বিষয়: খামারের স্থান নির্বাচন ২৫* টার্কি পালন পদ্ধতি ২৯* দেশিয় পদ্ধতিতে টার্কি পালন ৩৫* টার্কির খাদ্য ৩৭* টার্কির ডিমের উৎপাদন বৃদ্ধি ৫৯* বাচ্চা পালন ৬৪* মাল্টি এজ ফার্মিং ও ক্রপ টেস্ট ৭২* টার্কির নাগরিকত্ব বিতর্কঃ বাংলাদেশ না কি ইন্ডিয়া? ৭৭* গল্পের ছলে টার্কি বিদ্যাঃ বিষয়: জৈব নিরাপত্তা ৮০* হালকা ঠাণ্ডা ও কিছু কথা ৮৪* সংক্রামক রোগ ও প্রতিকার ৮৬* ফাউল পক্স রোগ ৮৬* ফাউল কলেরা রোগ ৮৮* সালমোনেলোসিস রোগ ৯০* গামবোরো রোগ ৯৩* রানীক্ষেত রোগ ৯৬* ঋতুভেদে ব্যবস্থাপনা ১০২* রোগ বালাই ও জৈব নিরাপত্তা ১১০* টার্কির ডিম ও মাংস বাজারজাতকরণ ১২৩* আমিষ সমৃদ্ধ টার্কি মুরগি দিয়ে খাবার তৈরি ১৩২* টার্কি শিল্পে দলাদলি ১৩৫ ‘টার্কি পালন নতুন সম্ভাবনার হাতছানি’ বই থেকে কিছু কথা: আমাদের দেশে প্ৰাণীজ আমিষের অভাব খুবই প্রকট। আমিষের এ অভাব মেটাতে টার্কি পালনের ওপর সর্বাধিক গুরুত্ব প্ৰদান বিশেষ জরুরী। নির্দিষ্ট পুঁজি বিনিয়োগ করে সাম্প্রতিক সময়ে টার্কি পালন একটি লাভজনক ও সম্ভাবনাময় কৃষিশিল্প হিসেবে পরিগণিত হয়েছে। আধুনিক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে সঠিক পরিকল্পনায় টার্কি খামার স্থাপনের মাধ্যমে টার্কি পালন করে আমিষের অভাব মেটানো সম্ভব। টার্কি খামার দু’ধরনের হতে পারে। যেমন-পারিবারিক টার্কি খামার ও বাণিজ্যিক টার্কি খামার। পারিবারিক টার্কি খামারে অল্প সংখ্যক টার্কি পালন করে সে অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে পরবর্তীতে বাণিজ্যিক টার্কি খামার গড়ে তোলা যায়। উৎপাদনের উদ্দেশ্যের ওপর ভিত্তি করে টার্কির খামার বিভিন্ন ধরনের হয়ে থাকে। মাংস উৎপাদনের জন্য টার্কি পালন করলে একে বলা হয় ব্ৰয়লার খামার। আবার ডিম উৎপাদনের জন্য খামার করলে একে বলা হয় লেয়ার খামার। তবে যে খামারই স্থাপন করা হোক না কেন তা লাভজনক করতে চাইলে প্রয়োজন সুষ্ঠু পরিকল্পনা, বিজ্ঞানসম্মত ব্যবস্থাপনা ও সঠিক পরিচালনা। সংক্ষেপে টার্কি পাখি পরিচিতি: আমাদের দেশের অনুকূল আবহাওয়া ও পরিবেশে যে কোন পশুপাখি পালন অন্য দেশের তুলনায় সহজ। আবার কিছু প্ৰাণি আছে যারা দ্রুত পরিবেশের সঙ্গে নিজেকে মানিয়ে নিতে পারে। আর টার্কি পাখি সে রকম একটি সহনশীল জাত, যে কোন পরিবেশে দ্রুত সে নিজেকে মানিয়ে নিতে পারে। এরা বেশ নিরিহ গোছের পাখি, মুক্ত অথবা খাচা উভয় পদ্ধতিতে পালন করা যায়। ৬-৭ মাস বয়স থেকে ডিম দেয়া শুরু করে এবং ১০-১২ টি করে বছরে ২-৩ বার ডিম দেয়। একটি মাদী টার্কির ৫-৬ কেজি এবং পুরুষ টার্কি ৮-১০ কেজি ওজন হয়, এদের মাংস উৎকৃষ্ট স্বাদ, ঘাস পোকা মাকড় সাধারণ খাবার খেতে এরা অভ্যস্ত, তবে উন্নত খাবার দিলে ডিম ও মাংসের পরিমাণ বেশি পাওয়া যায়। তেমন বড় কোন রোগ বালাই নাই, চিকেন পক্স এর টিকা নিয়মিত দিয়ে রাখলে এই রোগ এড়ানো সম্ভব, অতি বৃষ্টি বা বেশি শীতের সময় মাঝে মাঝে ঠাণ্ডাজনিত রোগ পরিলক্ষিত হয়, রোনামাইসিন জাতীয় ঔষুধ দিলে ভালো ফল পাওয়া যায়। ৪-৫ মাস বয়সের টার্কি ক্রয় করা ভালো, কারণ তাতে বুকি কম থাকে এবং লিঙ্গ নির্ধারণ সহজ হয়, এ রকম বয়সের দাম ৪৫০০-৫০০০ টাকা জোড়া, প্রথমে বাণিজ্যিকভাবে শুরু না করে ৮-১০ জোড়া দিয়ে শুরু করা উত্তম, কারণ তাতে সুবিধা অসুবিধাগুলো নির্ণয় করা সহজ হয়। বাংলাদেশে টার্কি খামার সম্পপ্রসারণ করার জন্য আমার এই কার্যক্রম। আমার চ্যানেলের মাধ্যমে টার্কি খামারের খুঁটিনাটি সকল বিষয, খামারিদের কাছে তুলে ধরা হবে। আপনাদের সকলের সহযোগিতা আমার কাম্য।