ফারজানা মিতু কবিতা লেখেন হৃদয়ের গভীর থেকে, অন্তর্লীন আনন্দ-বেদনার অনুভূতি থেকে। তার কবিতায় তাই অনুরনন ওঠে মানবিক আকাঙ্খা ও চিরায়ত অপেক্ষার। প্রেম জাগ্রত হয় তার বাক্যরাজি থেকে এবং স্পর্শ করে পাঠকের চেতনাকে, স্পর্শাতীত প্রাপ্তির আনন্দে মনকে বিহ্বল করে তোলে। তার কবিতার সঙ্গে হয়ত অনেকেই পরিচিত নন- কিন্তু তার উচ্চারিত পংক্তিমালা ওই প্রাপ্তি থেকে পাঠকের তাই মনে হয়, তিনি যেন অনেক দিনের চেনা। শুধু এই প্রেম-হৃদয়-মানবিক প্রবৃত্তিই নয়, দেশ-কাল-সমাজের চালচিত্রও নীরবে উঠে আসে ফারজানা মিতুর কবিতাতে। তিনি যখন বলে ওঠেন, ‘তোমাকে পাবার জন্য/ অনন্তকাল মিছিলে যাব আমি’, তখন তা কেবল প্রেম নয়, সামাজিক কমিটমেন্টকেও সকলের সামনে তুলে ধরে।এটিই ফারজানা মিতুর প্রথম কবিতার বই। এ কবিতাগুলো আসলে তার হৃদয়ের রক্তক্ষরণের অনুবাদ, এ তার অনুভূতির প্রত্যাশাহীন প্রকাশ। সহজেই তাই তা আমাদের মনে গেঁথে যায়, আমাদের আনমনা করে তোলে এবং বর্ণনাতীত প্রাপ্তির সমুদ্রে দোলাতে থাকে।
ফারজানা মিতু
বইমেলা ছাড়াও যারা সারা বছর লেখালেখি করে ফারজানা মিতু তাদের অন্যতম। ১১ ডিসেম্বর জন্ম নেয়া এই মানুষটির যত আবেগ সবটুকুই এই লেখালেখি। পর পর চার বছরে ২৭টি বইয়ে তিনি তার জাত চিনিয়েছে পাঠককে। তার পরকীয়াসহ অন্যান্য বই যারা পড়েছেন তারা জানেন ফারজানা মিতুর লেখা সম্পর্কে। কবিতা দিয়ে শুরু হলেও এখন একাধারে লিখে চলেছেন উপন্যাস। দেশের প্রায় সব শীর্ষ স্থানীয় পত্রিকায় লিখে চলেছেন গল্প, কবিতা কিংবা প্রবন্ধ। লেখালেখির পাশাপাশি সামাজিক সচেনতামূলক বেশ কিছু কর্মকাণ্ডে তিনি রাজপথের সৈনিক। ঘুরে বেড়িয়েছেন ৩৫টিরও বেশি দেশ। মানুষের সঙ্কীর্ণতা তাকে অবাক করে তাই নিজেকে সবসময় রাখতে চেয়েছেন সব সঙ্কীর্ণতার উর্ধে কারণ একজন লেখকের চোখ আর দৃষ্টিভঙ্গি থাকবে স্বচ্ছ এটাই তার বিশ্বাস। মিতুর বইয়ের প্রধান উপকরণ যা পাঠককে টানে সেটা হচ্ছে— সহজ সাবলীল কথা। মিতু এমন ভাবেই কথা নিয়ে খেলেন, যা পড়ে পাঠক কখনও হাসবেন আবার কখনও কষ্টে নীল হবেন। মিতুর বই মানে কল্পনার অস্থির জগতে স্নান। আমন্ত্রণ থাকল সেই স্নান ঘরে আবারও কষ্টের নীলে নীল হবার।