চির পরিচিত হুমায়ূন রীতিতে লেখা প্রেমের উপন্যাস। তিথি ও মারুফের প্রেম কাহিনী। সামান্য টিউশনি করা মারুফ প্রচুর মিথ্যে কথা বলে তিথির আবেগকে নিয়ন্ত্রন করে সুচতুর ভাবে। ঘটনার আবর্তনে এসেছে তিথির বাবা-মা ও জমজ দু বোনের কাহিনী। উপন্যাসের সব চেয়ে মজার চরিত্র গ্রাম থেকে আসা নুরুজ্জামান। কিছুটা সরল প্রকৃতির হলেও বুদ্ধিমান। নুরুজ্জামানের কাছেই প্রথম মারুফের মিথ্যে ধরা পরে। তিথি-মারুফের প্রেমে হঠাৎ করেই যেন বেজে ওঠে বিচ্ছেদের সুর। উপন্যাসের শেষটা ছিল অনেকে পাঠকেরই অপ্রত্যাশিত।
“তিথির নীল তোয়ালে” বইটির প্রথম দিকের কথাঃ
মেজাজ খারাপ করার মত পরপর কয়েকটা ঘটনা ঘটে গেছে। জাফর সাহেবের প্রেসারের সমস্যা আছে। মেজাজ খারাপ হলে প্রেসার দ্রুত ওঠা-নামা করে। চট করে মাথা ধরে যায়। ঘাড় ব্যথা করতে থাকে এবং মুখে থুথু জমতে থাকে – এর কোনটিই ভাল লক্ষণ নয়। পঞ্চাশ পার হবার পর লক্ষণ বিচার করে চলতে হয়। তাঁর বয়স পাঁচপঞ্চাশ। তিনি লক্ষণ বিচার করে চলার মনে প্রাণে চেষ্টা করেন। চেষ্টা করেন কিছুতেই যেন মেজাজ না বিগড়ে যায়। এটা প্রায় কখনােই সম্ভব হয় না। অফিস থেকে ফেরার পর তিনটা ঘটনা ঘটল মেজাজ খারাপ করার মত। ইলেকট্রিসিটি না থাকায় লিফট বন্ধ ছিল। আটতলা পর্যন্ত হেঁটে উঠার পর কারেন্ট চলে এল। লিফট ওঠা নামা শুরু করল। পত্রিকা চেয়েছিলেন, সকাল বেলা তাড়াহুড়ায় ভালমত পড়া হয়নি। তাঁকে ভেতরের একটা পাতা দেয়া হল, বাইরের পাতাটা না-কি পাওয়া যাচ্ছে না। এক কাপ চা চাইলেন, তিথি এক কাপ চা দিয়ে গেল। চুমুক দিতে গিয়ে দেখেন সর ভাসছে। তিনি বললেন, সর ভাসছে কেন? তিথি বলল, সর চায়ের চেয়ে হালকা বলেই ভাসছে। যদি ভারী হত তাহলে ডুবে যেত। বলেই সে হেসে ফেলল। জাফর সাহেব গম্ভীর গলায় বললেন, রসিকতা করছিস কেন? ‘রসিকতা করছি না বাবা। একটা বৈজ্ঞানিক সত্য ব্যাখ্যা করলাম। কঠিন ধমক দিতে গিয়েও জাফর সাহেব নিজেকে সামলে নিলেন। মেজাজ ঠিক রাখতে হবে। কিছুতেই মেজাজ খারাপ হতে দেয়া যাবে না। মেজাজের জন্যে শুধু তাঁর নিজেরই যে সমস্যা হচ্ছে তাই না, পারিবারিক সমস্যাও হচ্ছে। গত চারদিন ধরে এই ফ্ল্যাট বাড়িতে শুধু তিথি এবং তিনি আছেন। তাঁর স্ত্রী শায়লা ছােট দুই মেয়ে ইরা, মীরাকে নিয়ে পল্লবীতে তাঁর মায়ের বাসায় চলে গেছেন। যাবার আগে কঠিন গলায় বলেছেন, তুমি তােমার মেজাজ নিয়ে থাক। আমি চললাম।র প্রিয় উপন্যাস, হুমায়ূন আহুমায়ূন আহমেদ এর উপন্যাস, সেরা হুমায়ূন আহমেদ বই, প্রিয় হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস, হুমায়ূন আহমেদের লেখা বই, টপ-রেটেড হুমায়ূন আহমেদ উপন্যাস, হুমায়ূন আহমেদ প্রেমের উপন্যাস, হুমায়ূন আহমেদ এর সংগ্রহ, হুমায়ূন আহমেদ এর জীবনী, হুমায়ূন আহমেদেহমেদ এর রহস্য গল্প
হুমায়ূন আহমেদ
পৃথিবীতে অনেক খারাপ মানুষ আছে, কিন্তু খারাপ বাবা একটাও নেই।'
হুমায়ূন আহমেদ বাংলাদেশের প্রবাদপ্রতিম জনপ্রিয় একজন ঔপন্যাসিক, ছোটগল্পকার, নাট্যকার এবং গীতিকার, চিত্রনাট্যকার ও চলচ্চিত্র নির্মাতা। তিনি বিংশ শতাব্দীর জনপ্রিয় বাঙালি কথাসাহিত্যিকদের মধ্যে অন্যতম। তাকে বাংলাদেশের স্বাধীনতা পরবর্তী অন্যতম শ্রেষ্ঠ ও জনপ্রিয় লেখক বলে গণ্য করা হয়। তিনি জন্মগ্রহণ করেন ১৩ নভেম্বর, ১৯৪৮, নেত্রকোনা জেলায়। তার আত্মজীবনীতে নেত্রকোনার নানান কথা উঠে এসেছে। এমনকি সেখানে তিনি 'শহীদ স্মৃতি বিদ্যাপীঠ' নামে একটি স্কুল ও প্রতিষ্ঠা করেছেন।
মারা গেছেন: ১৯ জুলাই, ২০১২, নিউ ইয়র্ক, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। সে সময়ে তিনি লিখেছিলেন 'নিউইয়র্কের নীলাকাশে ঝকঝকে রোদ' এখানে তার ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার সময় পাওয়া যায়। ' এখানে তার ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার সময় পাওয়া যায়।
সন্তান শীলা আহমেদ, নুহাশ হুমায়ূন, নোভা আহমেদ, বিপাশা আহমেদ, নিনিত আহমেদ, নিষাদ আহমেদ। নুহাশ হুমায়ুন একজন বাংলাদেশী চলচ্চিত্র পরিচালক ও চিত্রনাট্যকার । তার উল্লেখযোগ্য কীর্তি হল 'ইতি তোমারই ঢাকা', 'পেটকাটা ষ' ও 'মশারি'। ২০১৮ সালে 'ইতি তোমারই ঢাকা' নাটকটির মাধ্যমে বুসান আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে তার আত্মপ্রকাশ ঘটে।
ভাইবোন: মুহম্মদ জাফর ইকবাল, আহসান হাবীব, রুখসানা আহমেদ, সুফিয়া হায়দার, মমতাজ শাহিদ। ভাইবোনদের মধ্যে প্রায় সবাই লেখক। মুহম্মদ জাফর ইকবাল বাংলাদেশের অন্যতম জনপ্রিয় সায়েন্স ফিকশন লেখক। আহসান হাবীব উম্মাদ নামক একটি বহুল প্রচারিত রম্য পত্রিকার সম্পাদক।
জনপ্রিয় উপন্যাসসমূহ:
বাদশাহ নমদার
শঙ্খনীল কারাগার
আগুনের পরশমনি
মেঘ বলেছে যাবো যাবো
বাদশাহ নামদার
অপেক্ষা
নন্দিত নরকে
এইসব দিনরাত্রি সহ আরো আরো অনেক। (যারা হুমায়ূন পাঠে ভীষণ ভীষণ আগ্রহী তারা আরো আরো বইয়ের নাম জানতে চাইলে বই বাজার ডট কমে খুজে দেখতে পারেন। তার সমস্ত বই আমাদের সাইটে পাবেন।) আপনার পড়া হুমায়ূনের বইয়ের নাম আমাদের জানান।
হুমায়ূন পাঠ আপনার সময়কে রাঙিয়ে তুলবে না শুধু, আপনার সময়কে আপনার কাছে নিয়ে আসবে, আপনাকে হাসিকান্নায় মাতিয়ে তুলবে। বই পড়ুন, বইয়ের সাথে থাকুন।