জি এইচ হাবীব বাংলাদেশে অনুবাদ সাহিত্যের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা। গ্যাব্রিয়েল গার্সিয়া মার্কেজের *নিঃসঙ্গতার একশ বছর* এবং ইয়স্তেন গার্ডারের *সোফির জগৎ* এর অনুবাদ তার খ্যাতি প্রতিষ্ঠিত করেছে। তিনি ১৯৬৭ সালে ঢাকায় জন্মগ্রহণ করেন এবং তার আসল নাম গোলাম হোসেন হাবীব, যা পরে সংক্ষেপিত হয়ে জি এইচ হাবীব হয়। শিক্ষাজীবন কাটিয়েছেন ঢাকায়, মিরপুরের শহীদ আবু তালেব বিদ্যানিকেতন থেকে মাধ্যমিক ও মির্জাপুর ক্যাডেট কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক সম্পন্ন করেন, এবং জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। কর্মজীবনে সাংবাদিকতা দিয়ে শুরু করে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগে শিক্ষকতা করছেন। অনুবাদ সাহিত্যের প্রতি তার আগ্রহ ছোটবেলা থেকেই, বিশেষ করে সেবা প্রকাশনীর গোয়েন্দাগল্পগুলো পড়ার মাধ্যমে। ১৯৮৭ সালে রহস্য পত্রিকায় তার প্রথম অনুবাদ প্রকাশিত হয় এবং পরে সেবা প্রকাশনীর মাধ্যমে প্রথম বই অনুবাদ করেন, যা ছিলো *শার্লক হোমস*। তার উল্লেখযোগ্য অনুবাদ গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে তরে ইয়নসন-এর *লাতিন ভাষার কথা*, আমোস তুতুওলা-এর *তাড়িখোর*, ইতালো কালভিনোর *অদৃশ্য নগর*, এবং রলাঁ বার্ত-এর *রচয়িতার মৃত্যু*।
স্যার আর্থার কোনান ডয়েল
স্যার আর্থার কোনান ডয়েল ১৮৫৯ সালের ২২ মে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা চার্লস অল্টামন্ট ডয়েল, মাতা মেরি। তারা দুজনেই ছিলেন আইরিশ ক্যাথােলিক খ্রিস্টান।
কোনান ডয়েল ১৮৭৬ থেকে ১৮৮১ সাল পর্যন্ত ইউনিভার্সিটি অফ এডিনবার্গ মেডিকেল স্কুলে পড়াশুনা করেন। একই সঙ্গে এডিনবার্গের রয়েল বােটানিক গার্ডেনেও অধ্যয়নে নিয়ােজিত ছিলেন। অধ্যয়নরত অবস্থায় তিনি ছােট গল্প লেখা শুরু করেন। কোনান ডয়েলের প্রথম উপন্যাস ‘এ স্টাডি ইন স্কারলেট’ প্রকাশিত হয় ১৮৮৭ সালে। প্রথমে নাম রাখা হয়েছিল A Traged Skein পরে নাম পরিবর্তন করে ‘এ স্টাডি ইন স্কারলেট রাখা হয়। উপন্যাসের কেন্দ্রীয় চরিত্রের প্রথম অর্থাৎ ফার্স্ট নেম রাখার কথা ছিল ‘শেরিফোর্ড’। পরে সে নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় শার্লক।
কোনান ডয়েল ছিলেন বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী। একাধারে তিনি ছিলেন চিকিৎসক, রসায়নবিদ, উদ্ভিদবিজ্ঞানী, ফুটবলার, ক্রিকেটার, গলফার ইত্যাদি। তিনি ১৮৯৯ থেকে ১৯০৯ সালের মধ্যে দশটি প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট ম্যাচ খেলেছেন। কিন্তু সবকিছু ছাপিয়ে তিনি একজন রহস্য উপন্যাসের কালজয়ী লেখক এবং শার্লক হােমস ও ডা. ওয়াটসন চরিত্রের স্রষ্টা। বছরের পর বছর ধরে তার রহস্য গল্প ও উপন্যাসগুলাে পাঠকদের আনন্দ দিয়ে যাচ্ছে। ২০১৭ সাল পর্যন্ত তার গ্রন্থগুলাে ১০০টি দেশে ২৩টি ভাষায় প্রকাশ হয়েছে। তার শার্লক হােমস চরিত্রটি নিয়ে সবচেয়ে বেশি চলচ্চিত্র তৈরি হয়েছে। এ কালজয়ী লেখক ১৯৩০ সালের ৭ জুলাই পৃথিবীর মায়া ছেড়ে চলে যান।