‘দ্য প্রিন্স’, মূল: নিকোলো মেকিয়াভেলি, অনুবাদ : এম এন আমীন।
দূরদর্শী রাজনৈতিক সূক্ষ্ম বিশ্লেষণ-সম্বলিত দ্য প্রিন্স শিরোনামের ক্ষুদ্রায়তন পুস্তকটি বিশ্বরাজনীতি ও সমাজব্যবস্থাকে আজও প্রভাবিত করে চলেছে। এটা মেকিয়াভেলির এক অনন্য সৃষ্টি। এই গ্রন্থে তিনি আরও উল্লেখ করেছেন, একজন শাসকের কেমন হওয়া উচিত, কী করা উচিত, কী না করা উচিত। নৈতিকতায়, অনৈতিকতায়, শাসনে-শোষণে, ব্যক্তিগত ও সামষ্টিক আচরণে তিনি কেমন হবেন ইত্যাদি প্রায় সকল বিষয়ে বিভিন্ন সূত্র তিনি অনুসন্ধান করেছেন এবং লিপিবদ্ধ করে গেছেন এ পুস্তকে। দ্য প্রিন্সকে আধুনিক রাজনৈতিক দর্শনের আকরগ্রন্থ হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
১৫১২ খ্রিস্টাব্দের শেষ দিকে মেডিসি পরিবার আবার ফ্লোরেন্সের ক্ষমতায় প্রত্যাবর্তন করে। আর এরপর থেকেই মেকিয়াভেলির কর্মময় জীবনে নেমে আসে দুঃখ-দুর্দশা। এ শক্তিশালী পরিবারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগে তিনি অভিযুক্ত হন। তাঁকে গ্রেফতার ও কারারুদ্ধ করা হয়। তিনি শারীরিক নির্যাতনের শিকার ও নির্বাসিত হন। মেকিয়াভেলি তাঁর বিরুদ্ধে আনীত ষড়যন্ত্রের অভিযোগ অস্বীকার করেন। কিছুদিন কারাভোগের পর তিনি নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করে কারামুক্ত হতে সক্ষম হন। কারামুক্তির পর তিনি রাজনীতি থেকে অবসরে চলে যান। তিনি ফ্লোরেন্স থেকে মাত্র দশ মাইল দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থিত শহরতলিতে তাঁর গ্রামের বাড়ি সান ক্যাসিয়ানো ভালডি পেসাতে চলে আসেন। এখানে চলতে থাকে তাঁর জ্ঞানসাধনা ও লেখালেখির কাজ। এখানে বসেই তিনি ১৫১৩ খ্রিস্টাব্দে রচনা করেন তাঁর বিশ্বখ্যাত মাস্টারপিস দ্য প্রিন্স।
দ্য প্রিন্স-এর মূল বিষয় হলো কীভাবে রাজনৈতিক শক্তি অর্জন, ব্যবহার ও সংরক্ষণ করা যায় তার চিন্তাপূর্ণ বিশ্লেষণ। ইতালি দীর্ঘদিন পরাধীনতার নাগপাশে আবদ্ধ ছিল। মেকিয়াভেলি ইতালির স্বাধীনতা ফিরিয়ে আনতে এ পরিবারকে কান্ডারি হিসেবে বিবেচনা করেন। পুস্তকের শেষ অধ্যায়ে তাদের কাছে আবেদন জানিয়েছেন যেন শক্ত হাতে দেশ মার্তৃকার জন্য তারা হাল ধরেন, এ অমর্যাদা থেকে দেশকে উদ্ধার করেন।