দ্য গ্রিন মাইল
লুইজিয়ানার কোল্ড মাউন্টেইন কারাগার!
যেখানের ই-ব্লকে মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত ভয়ংকর সব আসামীরা “গ্রিন মাইল” ধরে হেঁটে “ওল্ড স্পার্কি”র কোলে গিয়ে বসার অপেক্ষায় আছে। হ্যাঁ, ঠিক ধরেছেন, ওল্ড স্পার্কি হলো সেই ইলেকট্রিক চেয়ার, যেখানে ১৯৩২ সালে বিদ্যুতায়িত করে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হতো। ই-ব্লকের কয়েদিরাই মজা করে অদ্ভুত এই নামটি দিয়েছিল!
আর সেলগুলোর মাঝের করিডোরটির মেঝের উপরে সবুজ রঙের একটা প্রলেপ থাকায় সেই করিডোরটিকে “দ্য গ্রিন মাইল” বলা হতো।
সেই জেলের গার্ড পল এজকম্ব তার দীর্ঘদিনের চাকরিকালে নানা ধরণের, বর্ণের, বয়সের ভয়ংকর সব অপরাধীদের দেখেছে, কিন্তু জন কফির মতো কাউকেই সে দেখেনি!
অদ্ভুত ও অব্যাখ্যাত এক অতিপ্রাকৃত ক্ষমতার অধিকারী এই কৃষ্ণাঙ্গ কয়েদি দেখতে দৈত্যাকৃতির হলেও তার মনটা একেবারে শিশুর মতো ছিল! সে এমন ভয়াবহ একটি অপরাধে মৃত্যুদণ্ড পেয়েছে, যা শুনলেই যে কেউ ভয়ে কেঁপে উঠবে।
কিন্তু জন কফির আচরণ ও তার নিজস্ব বিশ্বাসের ভিত্তিতে তদন্ত করতে গিয়ে পল এজকম্ব কফির ব্যাপারে এমন তথ্য পায়, যে সত্যটা প্রকাশিত হলে শ্বেতাঙ্গ নিয়ন্ত্রিত আদালত ও শাসন ব্যবস্থাকে প্রচণ্ডরকম প্রশ্নবিদ্ধ করে তুলবে।
তাহলে... শুধুমাত্র কৃষ্ণাঙ্গ হওয়ার “অপরাধে”ই কি কফিকে গিয়ে ওল্ড স্পার্কিতে বসতে হবে!
যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যে “সেরা উপন্যাস” হিসাবে পুরস্কৃত, প্রায় একবছর ধরে বেস্টসেলরের তালিকায় থাকা এবং এর ভিত্তিতে নির্মিত চলচ্চিত্রটি সেরা ছবিসহ চারটি বিভাগে অস্কারের মনোনয়ন পাওয়া “দ্য গ্রিন মাইল” বইটি সুপারন্যাচারাল থ্রিলার ও ম্যাজিক রিয়েলিজম জনরার “হরর কিং” এর এক অনবদ্য সৃষ্টি!
স্টিফেন কিং
জীবিতকালেই কিংবদন্তি হয়ে ওঠা লেখক স্টিফেন কিং-এর জন্ম ১৯৪৭ সালে আমেরিকার পাের্টল্যান্ড রাজ্যের মেইন শহরে। বয়স যখন মাত্র দু-বছর তখনই তার বাবা তাদের ছেড়ে চলে যায়, ফলে প্রচণ্ড দারিদ্রের মধ্যে বেড়ে ওঠেন তিনি। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি-সাহিত্যে ডিগ্রি নেবার পর হাইস্কুলের শিক্ষক হিসেবে কিছুদিন কাজ করেছেন। ১৯৭৪ সালে তার প্রথম উপন্যাস ক্যারি প্রকাশিত হলে আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি। রিটা হেওয়ার্থ অ্যান্ড শশাঙ্ক রিডেম্পশান তার ‘ডিফারেন্ট সিজন’ নামের একটি গল্পসঙ্কলনে নভেলা হিসেবে প্রকাশিত হয়। ছােট পরিসরের হলেও এই নভেলাটি কিং-এর উল্লেখযােগ্য একটি কাজ। ১৯৯৪ সালে এই নভেলাটি নিয়ে চলচ্চিত্র নির্মাণ করা হলে সেটা সর্বকালের অন্যতম সেরা চলচ্চিত্র হিসেবে স্বীকৃতি পায়। অসংখ্য পুরস্কারে ভূষিত স্টিফেন কিংকে ২০০৩ সালে আমেরিকার ন্যাশনাল বুক ফাউন্ডেশন বিশেষভাবে সম্মানিত করা হয়। তার দুই ছেলেও লেখক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে। বিশেষ করে জো হিল বর্তমান সময়ে বেশ ভালাে কিছু উপন্যাস উপহার দিয়েছেন। এ বয়সেও একের পর এক বেস্টসেলার উপহার দিয়ে যাচ্ছেন স্টিফেন কিং।