সাহিত্যচর্চার নানা বিভাগের মধ্যে অন্যতম একটি বিভাগ হচ্ছে শিশুসাহিত্য চর্চা। শিশুদের মনস্তত্ত্ব মাথায় রেখেই ছড়া কবিতা গল্প দিয়ে শিশুসাহিত্য তৈরি হয়। শিশু সাহিত্যের প্রধান উপজীব্য বিষয় হতে হবে এর ভাষাগত সারল্য। এই কাজটি যতটা সহজ মনে করা হয় ততটা নয়। শিশুদের মনস্তত্ত্বের সঙ্গে নিজেকে সম্পৃক্ত রেখে সাহিত্যচর্চা একটি কঠিনতম বিষয়।
তাই শিশু সাহিত্যের চর্চার সঙ্গে যারা নিজেদেরকে যুক্ত রেখেছেন, তাদেরকে ধন্যবাদ দিতেই হয়। ছোটদের মনোজগতের বিস্তৃতি অপরিসীম। সেই জগতকে উপলব্ধির মধ্যে এনে তাদের মনের মতো করে গল্প কবিতা ছড়া উপন্যাস সৃষ্টি যারা করেন, তারা অবশ্যই একটি মহৎ কাজের সঙ্গে যুক্ত। বাংলা সাহিত্যে শিশুতোষ বিষয় নিয়ে লেখালেখির ইতিহাস দীর্ঘদিনের।
মধ্যযুগের সাহিত্য চর্চায় শিশুদের লেখালেখি নিয়ে বহু নজির খুঁজে পাওয়া গেছে। আধুনিক সাহিত্য চর্চায় কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর থেকে কাজী নজরুল ইসলাম, এমনকি সুকুমার রায় এবং পরবর্তী প্রজন্মের অনেক লেখক বাংলা সাহিত্যের এই ধারাকে সমৃদ্ধ করেছেন যুগের পর যুগ। শান্তময় দাশ এমন একজন লেখক, যিনি পুলিশ সার্জেন্ট হিসেবে কর্মরত থেকেও শিশুসাহিত্যের বিকাশের জন্য কাজ করছেন। এই মহৎ কাজের জন্য তিনি অবশ্যই সবার কাছ থেকে ধন্যবাদ পাবেন। তার শিশুতোষ গল্পগ্রন্থ ‘খোকা ও টমির গল্প’ এবং ছড়ার বই ‘স্বপ্নের মত দেশ’ আমার পড়ার সুযোগ হয়েছে। দুটি বইতেই শিশুদের মনস্তত্বকে রাঙিয়ে তুলেছেন নানা রঙের ছড়া ও গল্প দিয়ে।
তার বর্তমান শিশুতোষ গল্পগ্রন্থ ‘তেঁতুল গাছে ভূত’ পাঠকদের মধ্যে জনপ্রিয়তা পাবে এটা আমার বিশ্বাস। ১৭টি গল্প দিয়ে সাজানো এই বই শুধু শিশু পাঠক না বড়দের মধ্যে যারা শিশুতোষ গল্প পড়ার অভ্যাস রয়েছে, তাদেরকেও আনন্দ দেবে। এই গল্পগুলোর মধ্যে কল্পনার জগতের বাইরেও উঠে এসেছে মানবিকতা, শিশু মনস্তত্ত্বের নানা দিক এমনকি ভৌতিক নানা বিষয়ও। আমি বিশ্বাস করি এই গল্পগুলো শিশু মনস্তত্বকে আনন্দে ভরিয়ে তুলবে এবং তাদের মনেভাজগতকে আরো সমৃদ্ধ করবে। আমি লেখক শান্তময় দাশের লেখালেখির জীবনের আরও সমৃদ্ধি কামনা করছি।