ফ্ল্যাপের কিছু কথাঃ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর সমগ্র বিশ্ব দুটি বলয়ে বিভক্ত হয়ে পড়ে-একটি পুঁজিবাদী অপরটি সমাজতান্ত্রিক। পরবর্তীতে এদেরকে সমদূরত্বে রেখে গঠিত হয় জোট নিরপেক্ষ আন্দোলন। পৃথিবীর দেশে দেশে সংঘাত এবং বিবাদ মিটানো ও বিশ্বশান্তি রক্ষায় জাতিসংঘও এতদিন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছিল। সম্প্রতি সোভিয়েত ইউনিয়ন ভাঙ্গনের পর পুঁজিবাদী বিশ্বের ধারক বাহক মহাপরাক্রমশালী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হাতে একক কর্তৃত্ব চলে যা্য়। যুক্তরাষ্ট্র এখন সারা বিশ্বকে দাবড়িয়ে বেড়াচ্ছে। তার দম্ভ ও সামরিক দাপটের কাছে জাতিসংঘও নাস্তনাবুদ। এই বিশ্ব সংস্থাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে সে নানা ছলছুতায় আফগানিস্তান ও ইরাক দখল করে নেয়। এতে শক্তি যোগায় যুক্তরাজ্যসহ গুটিকয়েক তাপ্লিবাহক দেশ। সারা দুনিয়ায় দেশে দেশে এমনকি যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের শান্তিকামী মানুষ নিরীহ জনতার উপর হামলার প্রতিবাদ জানালেও বুশ-ব্লেয়ার এতে ভ্র্রুক্ষেপ করেন নি। এদেশ দুটি দখলের পিছনে যত কারণই থাকুক না কেন মধ্যপ্রাচ্য ও মধ্য এশিয়ার বিশাল তেল ভান্ডার দখলে রাখার যে অন্যতম প্রধান কারণ সে বিষয়ে কারো সন্দেহ নেই।
বর্তমানে আফ্রো-এশিয়ার মুসলিম তথা তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোর রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে একক পরাশক্তির ইচ্ছা-অনিচ্ছার উপর । আফগানিস্তান ও ইরাক থেকে জোট বাহিনীর কবে নাগাদ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ দখলদারিত্বের অবসান হতে পারে, এ থেকে সংশ্লিষ্ট অন্যান্য দেশ কিভাবে পরিত্রাণ পেতে পারে, জ্বালানি বাণিজ্যের সাথে কোন দেশের রাজনীতি এ সব বিষয়ে কতটা প্রভাব বিস্তার করে আসছে; ভারত, পাকিস্তান, বাংলাদেশ বিভাবে কতটা বিশ্ব জ্বালানি রাজনীতিতে জাড়িয়ে পড়ছে, বর্তমান বিশ্ব কি আবার সংঘাতের পথে এগিয়ে যাচ্ছে ইত্যাদি প্রশ্নের জবাব পাওয়া যাবে এ পুস্তকে।