ফ্ল্যাপের কিছু কথাঃ বাংলাদেশের প্রাণ ‘স্বপবান’ শব্দটি যে বিরল সংখ্যক মানুষের ক্ষেত্রে বিশেষণ হিসেবে ব্যবহার করা যায় তাদের মধ্যেও বিরলতম মানুষটির নাম তাজউদ্দীন আহমদ। একটি স্বাধীন সার্বেভৌম বাংলাদেশ ছিল, যাঁর স্বপ্ন আর গোটা জীবনটাই ছিল সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নের আরাধনা। বাংলাদেশের ইতিহাসে তুলানরহিত এ মানুষটির অনন্য নেতৃত্ব আমাদের মুক্তিযুদ্ধকে বিজয়ের রাজটিকা পরিয়ে দিয়েছিল । বাংলাদেশের কবি যে অমর পঙ্ক্তি রচনা করেছিলেন , ‘হিমালয় থেকে সুন্দরবন, হঠা্ৎ বাংলাদেশ/ কেঁপে কেঁপে উঠে পদ্মার উচ্ছ্বাসে, সে কোলাহলের রুদ্ধস্বরের আমি পাই উদ্দেশ/ জলে ও মাটিতে ভাঙনের বেগ আসে।/ সাবাস বাংলাদেশ, এ পৃথিবী অবাক তাকিয়ে রয়, জ্বলে পুড়ে মরে ছারখার, তবু মাথা নোয়াবার নয়, (সুকান্ত ভট্রাচার্য) ‘। সারা পৃথিবীকে অবাক করে একসাগর রক্তের বিনিময়ে স্বাধীনতার সূর্যকে ছিনিয়ে এনেছিল সেই বাংলাদেশ। সত্য হয়ে উঠেছিল এক স্বপ্নবান কবির কবিতা আরেক স্বপ্নবান পুরুষের অপরিমেয় আত্নত্যাগে, সুকঠোর নেতৃত্বে।
স্বপ্নবান এ মানুষটি স্বাধীন দেশটিকে গড়তে চেয়েছিলেন আত্ননির্ভর করে। গড়তে চেয়েছিলেন সোনার মানুষ, সোনার বাংলা। ফোটাতে চেয়েছিলেন এদেশের দুঃখী মানুষের মুখে দুঃখজয়ী হাসি। স্বাধীন দেশে সেই সুযোগ তিনি পাননি সে এক অন্তহীন বেদনার ইতিহাস।
বাঙালি জাতির ইতিহাসে তাজউদ্দিন আহমদের মতো মানুষেরা ছিলেন বলে এখনও তারা আমাদের অন্তহীন অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে আছেন জন্য এ জাতির ইতিহাস আশাবাদিতার, স্বপ্নের, গর্বের, গৌরবের। ‘ এবারে লোকের ঘরে ঘরে যাবে সোনালি নয় তো রক্ত রঙিন ধান/ দেখবে সকাল সেখানে জ্বলছে দাউ দাউ করে বাংলাদেশের প্রাণ।’ তাজউদ্দিন আহমেদ বাংলাদেশ এবং বাঙালি জাতির হাজার বছরের ইতিহাসে দেদীপ্যমান থাকবেন কবি কথিত ‘বাংলাদেশের প্রাণ’ রূপে।
সূচি * ঘন গজারির বনে জলাভূমির পাশে * কলম আর কালির দোয়াত * বিপ্লবীদের স্নেহের ছায়ায় * স্কুল থেকে স্কুলে * শিক্ষকদের ‘বদদোয়া’ * মানুষের জন্যে মানুষ * ধর্মীয় ও সাম্প্রদায়িক রাজনীতিমুক্ত একটি দলের স্বপ্ন * নিজেকে চেনার, নিজেকে জানার আন্দোলন * নতুন পথ, নতুন আকাঙ্ক্ষা * মুক্তির মহামিছিল ও ব্যক্তিগত হৃদয় * জনতার সংগ্রাম চলবেই * গোলটেবিল, গণঅভ্যুত্থান এবং তাজউদ্দীন * আন্দোলন থেকে নির্বাচনে * অসহয়োগের দিন, প্রস্তুতি দিন * ২৫ মার্চের কালো রাতে * অজানার পথে অন্যরকম জীবন * পথে-প্রান্তরে যুদ্ধের বার্তা * ভারতে গেলেন তাজউদ্দীন * প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পেলেন তাজউদ্দীন * গঠিত হলো মুজিবনগর সরকার * পরিবার থেকে দূরে * মুক্তিযুদ্ধের মূলধারা * অন্তর্ঘাতক মোশতাক * মুক্তিবাহিনীর নয়, তারা ছিল মুজিব বাহিনীর * সামরিক বাহিনীতেও নানা সমস্যা * তবুও স্বপ্ন জাগে, গড়ার স্বপ্ন * যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ল ভারত * স্বাধীন হলো বাংলা * মন্ত্রিত্ব ছাপিয়ে ওঠা মনুষ্যত্ব * ভারত বিরোধিতার ভূত * সাথীদের খুনেরাঙা পথে হায়েনার আনাগোনা * পরনির্ভরশীলতামুক্ত অর্থনীতির খোঁজে * যুক্তরাষ্ট্রের মুখোমুখি তাজউদ্দিন * মরু বিজয়ের পথে * পুরনো দুষ্ট ক্ষত এবং পঁচা শামুক * একটি কিংবদন্তির মৃত্যু * মুক্তদেশে অবরুদ্ধ ও মৃত্যুপথিক নিঃসঙ্গ মুক্তিনায়ক * মৃত্যুরাতে নিঃসঙ্গ মুক্তি নায়ক ও শোকাহত ডালিয়া-জবা * এখনো যায়নি আঁধার, এখনো অনেক ফাঁকি * মনে আছে...আমাদের মনে থাকবে
ইমতিয়ার শামীম
জন্ম : ২ ফাল্গুন ১৩৭১ (১৩ ফেব্রুয়ারি ১৯৬৫],। সিরাজগঞ্জ। পেশা : সাংবাদিকতা। প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা : এমএসএস (সমাজবিজ্ঞান],। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়। প্রাথমিক শিক্ষাপর্ব রামগাতী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মাধ্যমিক শিক্ষাপর্ব সলপ উচ্চ। বিদ্যালয়ে এবং উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাপর্ব সিরাজগঞ্জ।সরকারি মহাবিদ্যালয়ে। প্রথম প্রকাশিত গ্রন্থ : ডানাকাটা হিমের ভেতর (উপন্যাস, ১৯৯৬)। অন্যান্য উপন্যাস : আমরা হেঁটেছি যারা (২০০০), চরসংবেগ (২০০১), অন্ধ মেয়েটি জ্যোৎস্না দেখার পর। (২০০১), মােল্লাপ্রজাতন্ত্রী পবনকুটির (২০০৬), তা। হলে বৃষ্টিদিন তা হলে ১৪ জুলাই (২০০৮), আমাদের। চিঠিযুগ কুউউ ঝিকঝিক (২০১০), মৃত্যুগন্ধী বিকেলে। সুশীল সংগীতানুষ্ঠান (২০১২)। স্বীকৃতি : আখতারুজ্জামান ইলিয়াস কথাসাহিত্য। পুরস্কার (২০১২), লােক সাহিত্য পুরস্কার (২০১৩],। জীবনানন্দ পুরস্কার (২০১৪], প্রথম আলাে বর্ষসেরা। সৃজনশীল বই পুরস্কার (১৪২১)।