দীনেশচন্দ্র সেন বিরচিত ‘আশুতোষ-স্মৃতিকথা’ শুধুই ভারতীয় রেনেসাঁসের অন্যতম শ্রেষ্ঠ এক মনীষীর প্রামাণ্য জীবন-চরিতমাত্র নয়, বাঙালির ভাষা ও সংস্কৃতি বিকাশের এক বিশ্বস্ত ইতিবৃত্তও। প্রসিদ্ধ গণিতজ্ঞ, আইনজ্ঞ এবং শিক্ষাবিদ, স্যার আশুতোষ মুখোপাধ্যায় নিজে সাহিত্যিক ছিলেন না, কিন্তু বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের বিকাশের ইতিহাসে যে ভূমিকা তিনি গ্রহণ করেছিলেন, তা চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা তথা আধুনিক ভারতীয় ভাষা-সাহিত্য চর্চার ব্যবস্থা হয় তাঁরই উদ্যোগে। ১৯২৪ খ্রিস্টাব্দে প্রকাশিত ‘জাতীয় সাহিত্য’ নামক প্রবন্ধ সংকলন তাঁর সাহিত্যচিন্তার উৎকৃষ্ট নিদর্শন। কিন্তু গণিতজ্ঞ, আইনজ্ঞ কিংবা শিক্ষাবিদ আশুতোষ ছাড়াও আর এক আশুতোষের খোঁজ মিলবে এ-বইয়ে। নানা গুরুত্বপূর্ণ কাজে ব্যাপৃত থেকেও দেশের সঙ্গে নানাসূত্রে জড়িত ছিলেন এই মহাপ্রাণ মানুষটি। পরোপকার-ব্রত ছিল তাঁর জীবনের মূলমন্ত্র। আপাত কাঠিন্যের আড়ালে লুকিয়ে থাকা মানুষ আশুতোষের সেই কোমল হৃদয়কে উন্মোচিত করে এক ভিন্ন মাত্রায়।