যার কবিতার মধ্যে দরিয়ার ঘ্রাণ, সমুদ্রের সিম্ফনী যার শব্দ খেলা করে উন্মাতাল হয়ে তিনি মুহম্মদ নূরুল হুদা। তার কাব্য সুনীতির জন্য কবিতা জলাঙ্গিনী, আগুনযুবতী, জৈবতীবালাকে ঘিরে এক রহস্যময়তার জন্ম দেয়। আত্মার অঙ্কুর থেকে কবি সুনীতিকে ডেকে তুলেছেন উক্ত কাব্যে।
মুহম্মদ নূরুল হুদা
সমকালীন বাংলা কবিতার অন্যতম প্রধান কণ্ঠস্বর মুহম্মদ নুরুল হুদা। তাঁর কাব্যপ্রয়াসের কেন্দ্রে রয়েছে ব্যক্তিমানুষ, জাতিমানুষ ও বিশ্বমানুষের সমীকৃত প্রতিকৃতি জাতিসত্তার কবিরূপে বহুল নন্দিত। তাঁর সৃষ্টিসত্তা নানা পরীক্ষা-নিরীক্ষা, প্রকরণ ও উদ্ভাসে নিয়ত নবায়নপ্রবণ। স্বােপার্জিত কাব্যমুদ্রা ও নন্দনলােকের বরপুত্র এই বাঙালি কবি সমকালীন বিশ্বকবিতারও এক তাৎপর্যপূর্ণ কারুকৃৎ। মুহম্মদ নূরুল হুদা ১৯৪৯ সালের ৩০শে সেপ্টেম্বর কক্সবাজার জেলার জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা মােহাম্মদ সেকান্দর ও মাতা আমান আরা বেগম। মূলত কবি তিনি। তবে কথাসাহিত্য, মননশীল প্রবন্ধ ও অনুবাদসহ সাহিত্যের প্রায় সব শাখাতেই তিনি বিচরণশীল। অতিপ্ৰজ ও সব্যসাচী এই লেখকের স্বরচিত, অনূদিত ও সম্পাদিত গ্রন্থসংখ্যা শতাধিক। তার প্রিয় ক্ষেত্রে কবিতা, নন্দনতত্ত্ব ও লােকবিদ্যা। সৃষ্টিশীলতার নানা ক্ষেত্রে উল্লেখযােগ্য অবদানের জন্য তিনি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সম্মানিত ও পুরস্কৃত। তিনি বাংলা একাডেমির ফেলল, আমেরিকান ফোকলাের সােসাইটি, ইন্টারন্যাশনাল সােসাইটি ফর ফোক ন্যারেটিভ রিসার্চসহ বহু আন্তর্জাতিক সংস্থার সম্মানিত সদস্য। তার কবিতাবলির পাশাপাশি বহু প্রবন্ধ নানা ভাষায় অনূদিত হয়েছে। মুহম্মদ নুরুল হুদার প্রাপ্ত পুরস্কারগুলাে মধ্যে উল্লেখযােগ্য- আলাওল সাহিত্য পুরস্কার (১৯৮৩), বাংলা একাডেমি পুরস্কার (১৯৮৮), একুশে পদকসহ অসংখ্য পুরস্কার ও সম্মাননা।