সন্তান মানুষ হবে, আদর্শবান হবে, সৎ হবে। এমন চিন্তা ও পেরেশানিতে যে বাবা-মা অস্থির থাকে, চোখের নোনাজল বিসর্জন দেয় তারাই আদর্শ বাবা-মা। ভাবছেন, দাম্পত্য-বিষয়ক বইয়ে প্যারেন্টিংয়ের সংজ্ঞা কেন? বইটির মূল বিশেষত্ব এখানেই। একই মলাটে হাজবেন্ড, ওয়াইফ ও আদর্শ প্যারেন্টিংয়ের পাথেয় বর্ণিত হয়েছে।
বইটিকে মোট চারটি অধ্যায়ে বিন্যস্ত করা হয়েছে। নারী ও পুরুষের তিন-তিন মোট ছয়টি গুণের ওপর সারগর্ভ আলোকপাত করেছেন লেখক মুফতি ইউসুফ লুধিয়ানভি রহি.। কী সেই ছয় বৈশিষ্ট্য? তা জানতে অবশ্যই আপনাকে বইয়ের প্রথম অধ্যায় পাঠ করতে হবে।
বেনামাজি স্ত্রীর গুনাহ কার ওপর বর্তাবে? স্বামী সুদি কারবারে জড়িত, এমতাবস্থায় স্ত্রীর করণীয় কী হবে? স্ত্রী-সন্তানদের হক নষ্ট করার কাফফারা কীভাবে আদায় করতে হবে? এরকম আরো অসংখ্য অজানা জিজ্ঞাসার জবাব রয়েছে দ্বিতীয় অধ্যায়ে।
তৃতীয় অধ্যায়ে মহিলাদের সামাজিক অবস্থান, পুরুষের শ্রেষ্ঠত্ব ও পর্দার ওপর তোলা কিছু আপত্তির প্রামাণ্য জবাব প্রদান করা হয়েছে। আরো উপস্থাপিত হয়েছে জন্মনিয়ন্ত্রণের পথ-পন্থা ও বৈধ-অবৈধের ওপর বিস্তারিত আলোচনা। এই অধ্যায়টি পাঠ না করলে যা আপনার অজানাই থেকে যাবে।
চতুর্থ অধ্যায়ে রয়েছে, বাংলার ইলমি আকাশের উজ্জ্বল নক্ষত্র আল্লামা কাজি মু’তাসিম বিল্লাহ রহি.-এর সহধর্মিণীর প্রদত্ত চমৎকার একটি সাক্ষাৎকার। যা নিশ্চিত আপনার সংসার-চিন্তার মোড় ঘুরিয়ে দেবে।
কোনো বইকে আপনি যদি জীবন-ব্যাধির প্রেসক্রিপশন হিসেবে বিশ্বাস করেন, তাহলে এই বইটি হবে আপনার সংসার-ব্যাধির নিশ্চিত সমাধান।
ইউসুফ লুধিয়ানভি রহ.
ইউসুফ লুধিয়ানভি ১৯৩২ সালে ভারতের পূর্ব পাঞ্জাবের লুধিয়ানা জেলার ইসাপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা আল্লাহ বকশ ছিলেন 'নাম্বার দার' বা গ্রামের প্রধান। তার পিতা তৎকালীন ধর্মীয় নেতা আব্দুল কাদের রায়পুরীর অনুসারী ছিলেন। ইউসুফ লুধিয়ানভি ব্রিটিশ ভারতের লুধিয়ানায় প্রাথমিক ইসলামি শিক্ষা লাভ করেন এবং মুলতানে খায়ের মুহাম্মদ জলন্ধরীর অধীনে শিক্ষাজীবন শেষ করেন। পরবর্তিতে তিনি প্রথমে ফয়সালাবাদ ও সাহিওয়ালে এবং পরে করাচির জামিয়া বিন্নুরিয়ায় হাদিস শিক্ষক নিযুক্ত হন।
ইউসুফ লুধিয়ানভি ১০০ টিরও বেশি বই লিখেছেন যেগুলি বেশ কয়েকটি ভাষায় অনুবাদ করা হয়েছে। আপকে মাসাইল আওর উনকা হল (হানাফি ফিকহ বিষয়ক বই) এবং ইখতিলাফে উম্মত ও সিরাত-ই-মুস্তাকীম (উম্মাহর দলসমূহ এবং সরল পথ) তার স্মরণীয় রচনাগুলির মধ্যে অন্যতম।
আল-বায়ায়িনাতের সম্পাদক হওয়ার পাশাপাশি তিনি আলমি মজলিস তাহাফফুজ খতমে নবুয়ত (আন্তর্জাতিক খতমে নবুয়ত রক্ষা পরিষদ) এবং ইকরা স্কুল চেনের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন। তিনি পাকিস্তানের অন্যতম বৃহত্তম মাদ্রাসা করাচিতে জামিয়া উলুমুল-ইসলামিয়ায় হাদীস পড়াতেন।
তার ধর্মীয় জ্ঞান এবং দক্ষতার কারণে জামিয়া বিন্নুরিয়ার সভাপতি মুহাম্মদ ইউসুফ বিন্নুরী তাকে 'খতম-এ-নুবুওয়াত' (সাপ্তাহিক পত্রিকা) এবং 'আল-বাইয়াইনাত' (মাসিক পত্রিকা)-এর সম্পাদক নিযুক্ত করেছিলেন।