তাড়াতাড়ি করে দৌড়ে কলেজের গেট দিয়ে ঢুকলো হাসিব। ১০ মিনিট দেরি হয়ে গেছে! তবে সে দেরিটা করতে চায় নি। রাস্তায় জ্যামের কারণে একটু আগেই বের হয়েছিলো, তবুও দেরি হয়ে গেলো। হাসিবের ক্লাসরুমে যাওয়ার পথেই নোটিশবোর্ড পার হতে হয়। যদিও দেরি হয়ে গেছে তবু এক নজর নোটিশবোর্ড দেখে নিলো। সামনে একটা রচনা প্রতিযোগিতা আছে। মুচকি হাসি দিয়ে আবার তাড়াতাড়ি ক্লাসের দিকে এগোলো।
শ্রেণিকক্ষের সামনে যেতেই পদার্থবিজ্ঞানের প্রভাষক কবির স্যারকে দেখতে পেলো হাসিব।
“স্যার, আসতে পারি।”
“না, আসতে পারো না। ওখানেই দাঁড়িয়ে থাকো। তুমি ১২ মিনিট দেরি করেছ, ক্লাসের বাইরে ১২ মিনিট দাঁড়িয়ে থাকবে।।”
স্যারের কথা শুনে ক্লাসের অনেকেই হেসে দিলো। তবে মনে মনে এক প্রকার যেন খুশিই হলো সামনের সারিতে বসা অনিক। ক্লাসের ফার্স্ট বয় সে। হাসিবকে সে খুব একটা পাত্তা দেয় না। তবে সে অনিক পাত্তা না দিলেও হাসিবকে অন্য প্রায় সবাই পাত্তা দেয়। হাসিব পড়াশোনায় মাঝামাঝি লেভেলের মেধাবী। তবে কলেজে ও কলেজের বাইরে কোথায় কোন প্রতিযোগিতা হচ্ছে, কোথায় কোন ইভেন্ট হচ্ছে সব যেন তার নখদর্পনে। এর আগে বেশ কয়েকবার কলেজের ডিবেটিং টিমে বিতর্ক করেছে সে, বিজয়ীও হয়েছে।
কবির স্যার ১২ মিনিটের কথা বললেও ৩ মিনিট পরেই হাসিবের দিকে তাকিয়ে বললেন, “ভেতরে এসো।”
হাসিব ক্লাসরুমে ঢুকেই একটা স্মিত হাসি দিলো। গিয়ে বসলো একেবারে পেছনের বেঞ্চে। সবসময় ওখানেই বসে সে। অলিখিতভাবে এটা প্রায় সবারই জানা। তবে এখানে বসে সামনে শিক্ষকের বোর্ডের লেখা দেখতে মাঝেমাঝে কিছুটা অসুবিধা হয় অবশ্য! তবে ব্যাপার না। হাসিব ধীরে ধীরে এটা মানিয়ে নিয়েছে।
আচ্ছা তোমরা এই গল্পটার সাথে কি নিজেদের স্কুল বা কলেজের চিত্রের সাথে কোনো মিল খুঁজে পাচ্ছো?
কেউ কেউ হয়তো পারছো। আমাদের স্কুল-কলেজে আমরা প্রায়ই দেখে থাকি এমন কিছু শিক্ষার্থীর গল্প যারা পড়াশোনায় খুব ভালো না হলেও অন্যদের থেকে তারা থাকে এগিয়ে, আবার কেউ কেউ বেশি ফালো ফলাফল করেও যেন জীবনের অনেক পর্বে পিছিয়ে যাচ্ছে।
তাই একজন শিক্ষার্থীর স্কুল ও কলেজে লাইফে পড়াশোনার পাশাপাশি কী কী করা উচিৎ, কী করা উচিৎ না, আর সেসব কেনই বা করা দরকার কিংবা দরকার নয় তা নিয়েই আমাদের এই বই।
এই বইয়ের দুজন লেখক আমরা; শরিফুল ইসলাম ও লাব্বী আহসান, নিজেদের স্কুল ও কলেজ জীবন থেকে শেখা অল্প স্বল্প যেই অভিজ্ঞতাগুলো অর্জন করেছি তার প্রেক্ষিতেই এই বইটি লেখা।