ফ্ল্যাপের কিছু কথাঃ এই গল্প বামন আরমান আলীর। তার অহনিঁশ স্বপ্ন দেখবার, আর সেই স্বপ্নের খুব কাছাকাছি পৌঁছে যাবার গল্প। সকলের চাইতে ভিন্ন রকম অপূর্ণতার গল্প। এই কাহিনী শাহানারও। লোকে যাকে বেশ্যা বলে জানে, সেই মেয়ের অন্তর গহীণে লুকিয়ে রাখা অসম্ভব আকাঙ্ক্ষার কাহিনী।তার জীবনের পরতে পরতে জড়িয়ে থাকা কদর্য বাস্তবতার কাহিনী। যে কাহিনী কখনও ডালপাল মেলে হিজলা বেশে লুকিয়ে থাকা সন্ত্রাসী সুমনকে ঘিরে, কখনও এক অবাধ্য পোষা কুকুর কাল্লু মিয়াকে ঘিরে। কখনও আসে শাহানার স্বামীরূপী দালাল কামরুল মিয়ার নৃশংসতা, কখনও বা আবার স্বপ্ন পুরুষের পরম মমতার বুনোন।
কি সম্পর্ক এই স্বপ্ন পুরুষের সাথে তার? আর কি-ই বা সম্পর্ক আরমান আলীর সাথে? কেতন এই পৃথিবীর চোখে যারপানাই অচ্ছ্যুত দেহপসারিনী শব্দের আড়ালে থাকা সাদামাটা মানবী? তবে কি শুধু শরীরটা নিয়েই যায়-আসে এই সমাজ ব্যবস্থা?
বোধহয় তাই-ই হবে। কেননা দিন শেষে এই কাহিনী পরিণত হয় কেবল আর কেবলমাত্র শাহানার বহুল ব্যবহৃত শরীরটার চরম গ্লানির গল্পে। আরমান আলীর সোয়া দুই ফুট জীবন উচ্চতার গল্পে। এবং... হৃদয় বিদীর্ণ করা একটি প্রেমের গল্পে।
ভূমিকা মলাটের বুকে আবদ্ধ অনেক দিনের স্বপ্ন.. প্রথম উপন্যাস ‘সোয়া দুই ফুট’। উৎসর্গের পাতায় নাম লিখতে গিয়ে দুটি নাম তাই মনে পড়ছে ভীষণ। আফসান কিশোয়ার লোচনা-যার ছোট গল্পের ভীষণ রকম ভক্ত আমি। এবং যে মানুষটির অসম্ভব আন্তরিক প্রচেষ্টায় প্রকাশিত হয়েছিল আমার প্রথম একক গল্প সংকলন ‘এবং ও অতঃপর’।
একই সময়ে প্রকাশিত হয়েছিল আমার প্রথম বই ‘ঋতানৃত’। নিজের পাশাপাশি একই মলাটে আমার ছেলেমানুষী গল্পগুলোকে পরম মমতায় যে মানুষটি স্থান দিয়েছিল তাঁর নাম মামুন ম. আজিজ। ভীষণ বিশ্বস্ত এক সত্যিকারের বন্ধু। লেখালেকির প্রতি তাঁর মতন নিষ্ঠা ও ভালোবাসা খুব অল্প মানুষের মাঝেই দেখেছি।
সবশেষে আরেকটি মানুষের কথা বলতে চাই- আরিফুল ইসলাম শাকিল। আদর করে ‘পিচ্চি’ ডাকলেও অল্প সময়ে এই পিচ্চিটার কাছে আমার অনেক ভালোবাসার ঋণ। রুমানা বৈশাখী কলা বাগান ,ঢাকা।
রুমানা বৈশাখী
অনেকে রসিকতা করে বলেন, বয়সকে অতিক্রম করেছেন তিনি তাঁর লেখায়। তিনি রুমানা বৈশাখী । জন্ম ঢাকায়, ১২ মে ১৯৮৫। ঢাকায়ই বেড়ে ওঠা পড়ালেখাও। স্নাতকোত্তর করেছেন রসায়ন বিজ্ঞানে, ইডেন কলেজ থেকে। লেখালেখির সাথে জড়িত দীর্ঘদিন । নেশার বশে শুরু করলেও এই সৃজনশীল পেশাটিকেই অবলম্বন করে বেঁচে আছেন, এই পেশাতেই ক্যারিয়ার গড়েছেন আর সেভাবেই বাঁচতে চান সারাটা জীবন। কাজ করেছেন মাসিক সাহিত্য পত্রিকা আলাে ও ছায়া-র সহকারী সম্পাদক হিসেবে। নারী বিষয়ক পত্রিকা পারিতেও তিনি সহকারী সম্পাদক ছিলেন। বর্তমানে কর্মরত আছেন প্রিয়.কম-এর এডিটর ইন চার্জ পদে, কাজ করছেন লাইফস্টাইল জার্নালিজম নিয়ে। একই সাথে পরিচালনা করছেন প্রিয় আনসারের মতাে একটি পরামর্শ বিষয়ক ওয়েবসাইট। সাবলীলতা রুমানা বৈশাখীর লেখার অন্যতম প্রধান বৈশিষ্ট্য রহস্য, রােমাঞ্চ, রম্য, হরর, সায়েন্স ফিকশনসাহিত্যের প্রায় সব শাখাতেই লিখছেন সমান তালে, স্বাচ্ছন্দ্যে। খুব অল্প বয়সেই প্রকাশিত একক বইয়ের সংখ্যাটা বেশ ভারী। সিনেমা ও নাটকের বৈচিত্র্যময় জগতেও পা রেখেছেন আগেই। বিভিন্ন চ্যানেলে প্রচারিত হয়েছে তাঁর লেখা একাধিক নাটক। লিখেছেন শর্ট ফিল্ম। তাঁর জীবনে একটিই মাত্র লক্ষ্য, লিখতে থাকা ও ভালাে লেখার চেষ্টা করে যাওয়া। উল্লেখযােগ্য বই এবং ও অতঃপর, ঋতানৃত, হিপােক্রাট, দুঃস্বপ্নের রাত, পােস্টমর্টেম, বিভীষিকা, সােয়া দুই ফুট, মেঘ লীনা, অতিলৌকিক, বিবর্তন, সন্ধ্যা হয়ে আসে, অহর্নিশ, অবমানব, অবয়ব, শায়াতিন ইত্যাদি।