আমাদের দেশে রাজনীতি মূলত ষড়যন্ত্রের রাজনীতি। ১৯৪৭ থেকে ১৯৭১ সাল পর্যন্ত যদি দেখি, তা হলে দেখব, পশ্চিমা শাসকরা পূর্বাঞ্চলের সাধারণ মানুষ ও রাজনীতিবিদদের বিরুদ্ধে একের পর এক খুনখারাবি, ষড়যন্ত্র করেছেন। ১৯৭১-এর পরও সেই ধারা ছিল অব্যাহত। পাকিস্তানে প্রশিক্ষিত সেনাবাহিনী বঙ্গবন্ধু মুজিব ও লে. জেনারেল জিয়াকে হত্যা করে। বঙ্গবন্ধু হত্যা দেশকে আবার পাকিস্তানি ধারায় নিয়ে যায়। জিয়া ছিলেন পাকিস্তানি ধারার প্রবর্তক। তার হত্যাকাণ্ডের সুবিধাভোগী লে. জেনারেল এরশাদও ছিলেন তার অনুগামী। সেই ধারার প্রতিনিধিরা এখনো ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা এখন দেশকে এদের থাবা থেকে মুক্ত করে বাঙালির রাষ্ট্র করার লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন। বাংলাদেশের অগ্রগণ্য লেখক-ঐতিহাসিক ড. মুনতাসীর মামুন তার নতুন এই গ্রন্থে দেখিয়েছেন বাংলাদেশের দুই রাষ্ট্রপতি কীভাবে ষড়যন্ত্রের জালে প্রাণ দিয়েছেন। স্বাদু গদ্যে লেখা এই বই পাঠককে নিয়ে যাবে অন্য এক জগতে।
মুনতাসীর মামুন
মুনতাসীর মামুনের জন্ম ১৯৫১ সালে। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগ থেকে এম. এ.. পিএইচ. ডি. ডিগ্রি লাভ করেছেন। বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক। লেখালেখি করছেন ১৯৬৩ সাল থেকে। ছাত্রজীবনে জড়িত ছিলেন ছাত্র-আন্দোলনে এবং ১৯৬৯ সাল থেকে এ-পর্যন্ত অংশগ্রহণ করেছেন প্রতিটি সাংস্কৃতিক ও গণআন্দোলনে। স্বাধীন বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত প্রথম ডাকসু নির্বাচনে তিনি নির্বাচিত হয়েছিলেন সম্পাদক। একই সময়ে ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্কৃতি সংসদের সভাপতি। তাঁর সম্পাদনায় প্রথম প্রকাশিত হয় ডাকসু’র মুখপত্র ছাত্রবার্তা। এছাড়াও বাংলাদেশ লেখক শিবির ও বাংলাদেশ লেখক ইউনিয়নের ছিলেন তিনি প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ও যথাক্রমে প্রথম যুগ্ম আহ্বায়ক ও যুগ্ম সম্পাদক। ঢাকা নগর জাদুঘরের তিনি অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা বঙ্গবন্ধু জাদুঘরের উদ্যোক্তাদের মধ্যে ছিলেন তিনিও একজন । এছাড়াও তিনি জড়িত বিভিন্ন একাডেমিক ও সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে। বাংলাদেশে লেখালেখির জগতে মুনতাসীর মামুন একটি বিশিষ্ট নাম। সমসাময়িককালে তার মতাে পাঠক নন্দিত লেখক খুব কমই আছে। গল্প, কিশােরসাহিত্য, প্রবন্ধ, গবেষণা, চিত্রসমালােচনা, অনুবাদ ইত্যাদিতে তার স্বচ্ছন্দ বিচরণ ও সেই সাথে রাজনৈতিক ভাষ্যে অর্জন করেছেন বিশেষ খ্যাতি । উল্লিখিত প্রতিটি ক্ষেত্রেই তার একাধিক গ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে। তাঁর প্রকাশিত গ্রন্থের সংখ্যা ১৭০। বাংলা একাডেমী পুরস্কার, লেখক শিবির পুরস্কার, অগ্রণী ব্যাংক পুরস্কার, ড. হিলালী স্বর্ণপদক পুরস্কার, প্রেসিডেন্ট পুরস্কার (১৯৬৩), মার্কেন্টাইল ব্যাংক স্বর্ণপদক ইত্যাদিতে তিনি সম্মানিত। স্ত্রী ফাতেমা মামুন ছিলেন একজন ব্যাংকার ।