নানারকম প্রশ্ন নিয়ে বেড়ে উঠি আমরা। জীবন ও জীবনের অর্থ, মৃত্যু ও মৃত্যুর পরের কথিত জগৎ, সংস্কার ও বিশ্বাস, ধর্ম ও ঈশ্বর, দেশ-মানুষ-সমাজ-ইতিহাস-সংস্কৃতি এরকম আরো বহু বহু বিষয়ে অসংখ্য প্রশ্নের জন্ম হতে থাকে সেই কৈশোর থেকেই। সবাই জানেন প্রশ্ন ছাড়া যুক্তিভিত্তিক সমাজ ও জীবন গড়ে ওঠা অসম্ভব; কিন্তু আমাদের সামাজিক কাঠামোটিই এমন যে, প্রচলিত এবং প্রতিষ্ঠিত ধারণাগুলো নিয়ে প্রশ্ন করাটাকে অপরাধ হিসেবে বিবেচনা করা হয় এখানে। এই গ্রন্থভুক্ত প্রবন্ধগুলোতে তেমনই কিছু প্রশ্ন উত্থাপন করেছেন আহমাদ মোস্তফা কামাল। অবশ্য শুধু প্রশ্নেই থেমে থাকেন নি তিনি, খুঁজেছেন উত্তরও। বিষয়গুলোর মনোজ্ঞ ও হৃদয়গ্রাহী বিশ্লেষণ করেছেন তাঁর অনবদ্য কুশলী গদ্যভাষায় এবং রেখেছেন বিস্ময়কর সৃজনশীলতা ও মৌলিক চিন্তার পরিচয়। আমাদের ম্রিয়মাণ প্রবন্ধসাহিত্যের ধারায় এই সৃজনশীল ও দার্শনিক প্রবন্ধগুলো নতুন মাত্রা যোগ করবে বলে আশা করা যায়।
আহমাদ মোস্তফা কামাল
জন্ম ১৪ ডিসেম্বর ১৯৬৯। পড়াশোনা করেছেন পাটগ্রাম হাইস্কুল, মানিকগঞ্জ, নটরডেম কলেজ, ঢাকা; ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে। পদার্থবিজ্ঞানে অনার্সসহ বিএসসি, এমএসসি, এমফিল এবং পিএইচ.ডি। পেশাগত জীবনের শুরু থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করছেন। বর্তমানে ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশ-এ কর্মরত। কিন্তু যাবতীয় বৈষয়িক সাফল্যের সম্ভাবনাকে নাকচ করে শুধুমাত্র লেখালেখিকেই তিনি জীবনের সকল স্বপ্নের কেন্দ্রবিন্দু করে তুলেছেন। লেখালেখির শুরু ’৯০ দশকের গোড়া থেকেই। প্রথম গল্পগ্রন্থ দ্বিতীয় মানুষ প্রকাশিত হয় ১৯৯৮ সালে। এরপর আরো সাতটি গল্পগ্রন্থ, ছ’টি উপন্যাস এবং চারটি প্রবন্ধগ্রন্থ বেরিয়েছে। এটি তাঁর প্রথম প্রবন্ধ সংকলন। তাঁর চতুর্থ গল্পগ্রন্থ ঘরভরতি মানুষ অথবা নৈঃশব্দ্য লাভ করেছে মর্যাদাপূর্ণ ‘প্রথম আলো বর্ষসেরা বই ১৪১৩’ পুরস্কার। দ্বিতীয় উপন্যাস অন্ধ জাদুকর ভূষিত হয়েছে ‘এইচএসবিসি-কালি ও কলম পুরস্কার’ ২০০৯-এ, এবং তৃতীয় উপন্যাস কান্নাপর্ব ২০১২ সালের শ্র্রেষ্ঠ গ্রন্থ হিসেবে লাভ করেছে ‘জেমকন সাহিত্য পুরস্কার’ ২০১৩।