সংস্কৃতির জগৎ যদিও সমাজ-কাঠামোর ওপরতলার ব্যাপার তবু এর একটা নিজস্ব জগৎও আছে- এই ওপরতলারও আছে কাঠামো। সংস্কৃতির গতি-প্রকৃতি নিয়ে এই পুস্তক। সংস্কৃতির ব্যাপ্তি, প্রান্তসীমা, নির্ভরশীলতা এবং পরিবর্তসমূহ (ভেরিয়েবলস) নিয়ে ভবিষ্যতের কোন গবেষক বিশদভাবে কাজ করবে সেই উদ্দেশ্য নিয়ে পুস্তকের অবতারণা। রচনাগুলো বিভিন্ন সময়ে লেখা তাই কিছু পুনরাবৃত্তি রয়ে গেছে, তবে যতটা সম্ভব নতুন সংস্করণে পরিমার্জনা করা হয়েছে। বিশেষ করে ১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নের সমাজতান্ত্রিক ব্যবস্থা ভেঙে যাওয়ায় সমাজতান্ত্রিক চিন্তা-ভাবনার জগতে একটা বিরাট অভিঘাত আসে। সকল সমাজতান্ত্রিক চিন্তাবিদকে থমকে দাঁড়াতে হয়। এতদিনের লালিত-পালিত যুক্তি-পদ্ধতিকে কোন পথে চালাবে? সবার অবস্থা দিশেহারা হবার মত। পৃথিবীতে এখন ধ্র“পদী সমাজতান্ত্রিক দেশ বলতে উত্তর কোরিয়া ও কিউবা ছাড়া চীনের নামও করা যায় না। গণ চীন এখন অনেক পরিবর্তন সাধিত করে ভিন্ন অবস্থানে পৌঁছে গেছে। আমরা এ-ও জানি যে রাশিয়ায় এখনো কমিউনিস্ট পার্টি ভবিষ্যতে ক্ষমতায় আসতে পারে। তাই এই মুহূর্তে আমাদের চিন্তা-জগতকে বেশ সাবধানতার সঙ্গে বিন্যস্ত করতে হবে। প্রতিটি পদক্ষেপে হতে হবে সতর্ক। এই পুস্তকে মোট আঠারটি প্রবন্ধ আছে। এর ক্রমটি নিম্নরূপ: সংস্কৃতিঃ সংজ্ঞা, সমাজ ও সংস্কৃতি, সভ্যতা ও সংস্কৃতি, বর্ণ ও সংস্কৃতি, শিল্প ও সংস্কৃতি, ভাষা ও সংস্কৃতি, ধর্ম ও সংস্কৃতি, মূল্যবোধ ও সংস্কৃতি, ব্যক্তিত্ব ও সংস্কৃতি, ব্যক্তিত্ব-প্রকৃতি ও সংস্কৃতি, সংস্কৃতির গতি-প্রকৃতি, সংস্কৃতির পরিবর্তন, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক পরিবর্তনের পার্থক্য, সাংস্কৃতিক পরিবর্তনঃ বিভিন্ন মতবাদ, ভৌগোলিক পরিবেশ ও সংস্কৃতি, উৎপাদন-পদ্ধতি ও সংস্কৃতি, বণ্টন পদ্ধতি ও সংস্কৃতি এবং সামাজিক দলসমূহ ও সংস্কৃতি। পুস্তকটি বিশেষজ্ঞদের জন্যে নয়। সাধারণ পাঠকের যদি কাজে লাগে তাহলেই পরিশ্রম সার্থক মনে করব।