সূচিপত্র প্রথম পর্ব * বিটিশ আমর * আমার জন্ম * ১৯৪৬-১৯৪৭ সালের ধর্মভিত্তিক স্বাধীনতা আন্দোলন ও আমার চিন্তাধারা দ্বিতীয় পর্ব * পাকিস্তান আমল পরিশিষ্ট:১ * বরুন রায়ের জীবন দর্শন পরিশিষ্ট:২ * করণাসিদ্ধ রায়ের শ্রীহট্র প্রজাস্বত্ত্ব সংশোধনী আইন ও সমকালীন কৃষক প্রজা আন্দোলন * ‘কৃষক সভা’র জন্ম ও শ্রীহট্র প্রজাস্বত্ত্ব আইন * ১৯৩৭ সালে সুনামগঞ্জের বেহেলিতে কিষাণ সভায় প্রখম সম্মেলন * ১৯৩৭ সালে নির্বাচন ও করনাসিদ্ধ রায়ের জয়লাভ এবং ‘শ্রীহট্র্র প্রজাস্বত্ত্ব বিল সংশোধনী ‘উপস্থাপন’ * আইনসভায় প্রজাস্বত্ত্ব উপস্থাপনের জন্য চাপ প্রয়োগ * প্রজস্বত্ত্ব সংশোধনী উথ্থাপনের সুযোগলাভ ও আইন পাশের আন্দোলন * করুণাসিন্ধুর বিল নিয়ে আসাম পার্লামেন্ট এ লোকচুরি খেলার প্রতিবাদে ‘জাগরণ’ * শ্রীহট্র প্রজাস্বত্ত্ব বিল নিয়ে সরকারি দুরভিসন্ধি * প্রজাস্বত্ত্ব আইন পাশের উদ্দেশ্যে সিলেট থেকে পায়ে হেঁটে * কৃষকদের নেতাদের শিলং অভিযান ও আইন পরিষদ ঘেরাও * প্রজাস্বত্ত্ব সংশোধনী আইনের বিরুদ্ধে জমিদার শ্রেণির অবস্থান * শ্রীহট্র প্রজাস্বত্ত্ব সংশোধনী আইনের জন্য কৃষক নানাকার আন্দোলন * আসাম লীগ কংগ্রেসের রাজনৈতিক পালাবদল ও করুণাসিন্ধু রায়ের শ্রীহট্র প্রজাস্বত্ত্ব সংশোধনী বিলের অপমৃত্যু * করুণাসিন্ধু রায়ের শেষ দিনগুলো তথ্যপুঞ্জি পরিশিষ্ট: ৩ * সংগ্রামী স্মৃতির মোহনায়
প্রকাশকের কথা অনৈতিক উপায়ে অর্থ উপার্জন, ক্ষমতা প্রাপ্তি, লোভ-লালসা, ভোগ মানুসের সহজাত হলেও বরুণ রায়কে পূর্বাপর এসব কিছু স্পর্শ করতে পারেনি। সাধারণ মানুষের টানাপোড়েনের সংসারে যা ঘটে সেই বাস্তবতাই তিনি সহাস্যে মেনে নিয়েছিলেন। আরাম-আয়েশের ধারে কাছে না গিয়ে উন্নততর দূরদৃষ্টিতে মানবতার মুক্তি ও সমাজভাবনা করে গেছেন। খাঁটি মার্কসবাদী চর্চা করেছেন কিন্তু বাঙালি সমাজের বাস্তবতা ছাড়েননি। অসাম্প্রদায়িক চিন্তাচেতনার জন্য তাঁর খ্যাতি ছিল। মানুষের মুক্তির জন্য তিনি করে গেছেন আমৃত্যু সাধনা। দুর্বৃত্তায়নের রাজনীতিকে তিনি বিশ্বাস করতেন না। তাঁর পিতা প্রখ্যাত কৃষকনেতা করুণাসিন্ধু রায়ের জীবন দর্শনের ছায়াপাত ঘটে তাঁর জীবনে। অথচ এ-নির্মোহ চিরবিপ্লবী বরুণদাকে মিডিয়ার পাদদেশে আসতে দেখা যায়নি।
বরুণ রায় ইতিহাসের নানা ঘটনার সাক্ষী হলেও তেমন কিছু লিখে যাননি। তার সাথে মৌখিক কথোপকথনের লিখিত রূপ দিয়েছেন পরিশ্রমী গবেষক দীপংকর মোহান্ত। কিন্তু দীর্ঘদিন থেকে তার এই অল্পবিস্তর স্মৃতি বই আকারে প্রকাশ পায়নি। বন্ধুবর দীপংকর মোহান্ত ও অপূর্ব শর্মার সাথে গল্পচ্ছলে একদিন আমি বরুণদার অপ্রকাশিত এ-লেখার কথা জেনে প্রকাশ্যে আগ্রহ দেখাই।
বরুণদাও সেসময় অনুমতি দিয়েছিলেন। জুলাই ২০০৯ বইয়ের সব কাজ শেষ করে পুনরায় পাঠের জন্য তাঁর কাছে পাঠাই। কিন্তু বার্ধক্যের কারণে তাঁর পক্ষে দ্রূত সেটা ফেরত পাঠানো সম্ভব হয়নি। আবার দীপংকর মোহান্তর কাছে সেটা পাঠানো হয়- এমনি করে কয়েক মাস চলে যায়। তাই এত বিলম্ব।
বরুণদা শেষ পর্যন্ত বই আকারে প্রকাশিত তাঁর স্মৃতি পুস্তক দেখে যেতে পারেননি। বিগত ৯ ডিসেম্বর ২০০৯ তারিখে সুনামগঞ্জ শহরে বরুণ রায় দেহত্যাগ করেন। এজন্য আমার আপেক্ষ রয়ে গেল। তিনি বেঁচে থাকবেন গণমানুষের অন্তরে।