মানুষের সবচেয়ে পাপাসক্ত অঙ্গ হলো জবান। কেননা, জিহ্বা চালনার মতো সহজ কাজ আর হয় না। তাই মানুষ জবানের ব্যাধিতেই আক্রান্ত হয় সবচেয়ে বেশি। মানুষকে পাপাচারে লিপ্ত করতে শয়তানের মোক্ষম একটি হাতিয়ার এই জিহ্বা। যে জবানের লাগাম ছেড়ে দেয় শয়তান তাকে হাঁকিয়ে নিয়ে যায় বাচালতার বিস্তীর্ণ প্রান্তরে। ধীরে ধীরে তাকে ঠেলে দেয় ধ্বংসের অতল গহ্বরে। আখিরাতে দোজখই হয় তার ঠিকানা।
জবানের গুনাহের তালিকা অনেক দীর্ঘ। এগুলোর ধরনও বেশ বিচিত্র। মানুষের স্বভাব ও প্রবৃত্তি এই সুমিষ্ট পাপগুলোর প্রতি খুবই আসক্ত। তাই ধৈর্যের সঙ্গে মৌনতা অবলম্বন এবং সতর্কভাবে কথা বলায় অভ্যস্ত হতে না পারলে জবানের গুনাহ থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব নয়।
শাইখ আব্দুল মালিক আল কাসিম
ড. শাইখ আব্দুল মালিক আল-কাসিম। আরববিশ্বের খ্যাতনামা লেখক, গবেষক ও দায়ি। জন্মগ্রহণ করেছেন সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদের উত্তরে অবস্থিত ‘বীর’ নগরীতে বিখ্যাত আসিম বংশের কাসিম গােত্রে। তার দাদা শাইখ আব্দুর রহমান বিন মুহাম্মাদ বিন কাসিম আল-আসিমি আন-নাজদি রহ. ছিলেন হাম্বলি মাজহাবের প্রখ্যাত ফকিহ। তাঁর পিতা শাইখ মুহাম্মাদ বিন আব্দুর রহমান রহ.ও ছিলেন আরবের যশস্বী আলিম ও বহু গ্রন্থপ্রণেতা। শাইখ আব্দুল মালিক আল-কাসিম জন্মসূত্রেই পেয়েছিলেন প্রখর মেধা, তীক্ষ প্রতিভা আর ইলম অর্জনের অদম্য স্পৃহা। পরিবারের ইলমি পরিবেশে নিখুঁত তত্ত্বাবধানে বেড়ে উঠেছেন খ্যাতনামা এই লেখক। আনুষ্ঠানিক পড়াশােনা শেষ করে আত্মনিয়ােগ করেন। লেখালেখিতে গড়ে তােলেন ‘দারুল কাসিম লিন নাশরি ওয়াত তাওজি’ নামের এক প্রকাশনা সংস্থা। প্রচারবিমুখ এই শাইখ একে একে উম্মাহকে উপহার দেন সত্তরটিরও অধিক অমূল্য গ্রন্থ। আত্মশুদ্ধিবিষয়ক তেইশটি মূল্যবান বইয়ের সম্মিলনে পাঁচ ভলিউমে প্রকাশিত তাঁর ‘আইনা নানু মিন হা-উলায়ি নামের সিরিজটি পড়ে উপকৃত হয়েছে লাখাে মানুষ। বিভিন্ন ভাষায় অনূদিত হয়েছে এই সিরিজের অনেকগুলাে বই। আজ-জামানুল কাদিম’ নামে তিন খণ্ডে প্রকাশিত তাঁর বিখ্যাত গল্প-সংকলনটিও আরববিশ্বে বেশ জনপ্রিয়। সাধারণ মানুষের জন্য তিনি প্রাঞ্জল ভাষায় ছয় খণ্ডে রচনা করেছেন রিয়াজুস সালিহিনের চমৎকার একটি ব্যাখ্যাগ্রন্থ। এ ছাড়াও তাঁর কুরআন শরিফের শেষ পারার তাফসিরটিও বেশ সমাদৃত হয়েছে। আমরা আল্লাহর দরবারে শাইখের দীর্ঘ কর্মময় জীবন কামনা করি।