ফ্ল্যাপের কিছু কথাঃ বাংলাদেশের গণ্ডগ্রামের যুবক মতিন। বাইরের দুনিয়া তার কাছে অচেনা, অজানা। বি.এ. পাস করে হনো হয়ে চাকরি খুঁজছে সে। মামা কামাল সাহেব বড় ব্যবসায়ী। প্রকাশনা ছাড়াও তাঁর গার্মেন্টস-এর বিশাল কারবার। মায়ের অনুরোধে দিনের পর দিন মামার কাছে হতো দিয়ে পড়ার পরে ভাগ্য সদয় হল। মামা ওকে পাঠালেন সাগরপারের দেশ আমেরিকায়- ‘নিউ ইয়র্কে গার্মেন্ট মেলা’য় প্রতিনিধি করে। অন্য দুজন কর্মচারীর সঙ্গে। মান একসপ্তাহের জন্য।
মেলা শেষ করে ওরা তিনজন ফিরে আসবে ঢাকা শহরে। ঠিক আগের দিন সন্ধেবেলায় হঠাৎ ঘটে গেল অকল্পনীয় বজ্রপাত!....... মতিনের দেশে ফেরার দরজার কি বন্ধ হয়ে গেল চিরদিনের জন্য? ........ ওকে কি আমেরিকায় হাজতবাস করতে হবে ? ....... ভারতীয় বৃদ্ধ বৃদ্ধা ও তাদের মেয়ে, অনাবাসী নানা চরিত্র, শরীর মনে উপোসী নারী, প্রতিবন্ধী সন্তানের হার-না-মামা যুবতী মা....... নির্বান্ধব প্রবাসে সে যেন অন্য ভুবন।
সমরেশ মজুমদারের অসামান্য কলমে প্রাণিত আনন্দ-বেদনা-রোমান্স নিয়ে অন্য ভুবনের উপন্যাস।
ভূমিকা বহুবার আমেরিকায় যেতে হয়েছে আমন্ত্রিত হয়ে। শেষের কয়েকবার থেকেছি আমেরিকায় বাস করা বৈধ এবং অবৈধ বাংলাদেশিদের সঙ্গে। ঘনিষ্ঠ হয়েছি তাঁদের দৈনন্দিন জীবনে।
এই অভিজ্ঞতা থেকেই ‘সোনার শেকল’ লিখেছি। মূলত বাংলাদেশের একটি কাগজ এবং কলকাতার দুটি কাগজে লেখাটা কিস্তিতে বেরিয়েছিল। বইবন্দি হল এখানে।
পাঠকদের ভালো লাগলে খুশি হব।
সমরেশ মজুমদার কলকাতা
সমরেশ মজুমদার
জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিক সমরেশ মজুমদারের জন্ম ১০ মার্চ ১৯৪৪।
তাঁর শৈশব এবং কৈশাের কেটেছে জলপাইগুড়ির ডুয়ার্সের চা বাগানে। লেখাপড়ায় মন বসতাে না একদমই। ইচ্ছে ছিল নায়ক হবেন। তাই জলপাইগুড়ির বন্ধুদের নিয়ে সাজাতেন নাটকের দল। বাজারের জন্য দিদিমার দেয়া টাকা বাঁচিয়ে তাও খরচ করতেন বন্ধুদের নিয়ে। ষােলাে বছরের এক তরুণ সমরেশ কলকাতায় আসেন ১৯৬০ সালে। ভর্তি হন স্কটিশ চার্চ কলেজে, বাংলায়। এখানেও শুরু হলাে থিয়েটার আর নাটক লেখা, গল্প লেখার কাজ। নাটক লিখলেও নাটক হতাে না। অভিনয়ও জমছে না ঠিকমতাে। ততদিনে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলায় এমএ পাসের সার্টিফিকেট জুটলাে কপালে। কিন্তু নায়ক হওয়ার স্বপ্ন আর পূরণ হলাে না। এবার নাটক বাদ। গল্প লেখায় সময় ব্যয়। ১৯৭৬ সালে দেশ পত্রিকায় ছাপা হলাে তাঁর প্রথম উপন্যাস দৌড়। তারপর আর পেছনে তাকাতে হয়নি। প্রকাশিত গ্রন্থ ২১৫।
সমরেশ মজুমদার ১৯৮২ সালে পান ‘আনন্দ পুরস্কার'। কালবেলা উপন্যাসের জন্য সাহিত্য আকাদেমি পুরস্কার পান ১৯৮৪ সালে।