প্রিয় ভাই আমার,
‘যেদিন মানুষের সৃষ্টি, সেদিন থেকেই মানুষ মুসাফির। জান্নাত বা জাহান্নামই তাদের সফরের শেষ মনজিল। দুটোর একটিতেই হয় তার অবতরণ। জ্ঞানী মাত্রই জানেন, সফর কষ্ট, ক্লান্তি ও বিপদে ভরা। সফরে কোনো ভোগ, উপভোগ, আরাম-আয়েশের খোঁজ করা বোকামি, এগুলো পাওয়াও সাধারণত অসম্ভব। এগুলোর নাগাল তখনই পাওয়া যাবে, যখন এ দীর্ঘ সফর শেষ হবে। সফরের সময়ের কোনো পদক্ষেপ, কোনো মুহূর্তই স্থির নয়। সফরকারীও স্থির নয়। সদা চলমান একজন মুসাফির সে। যে পাথেয় তাকে উদ্দিষ্ট মনজিলে পৌঁছে দেবে, তাকে সে পাথেয় প্রস্তুত করতে হবে। যখন মুসাফির অবতরণ করে বা ঘুমিয়ে পড়ে কিংবা আরাম করে, এর পরেই তাকে পায়ে হেঁটে চলার জন্য প্রস্তুত হতে হয়।’
—আল-ফাওয়ায়িদ : ২৪৫
শাইখ আব্দুল মালিক আল কাসিম
ড. শাইখ আব্দুল মালিক আল-কাসিম। আরববিশ্বের খ্যাতনামা লেখক, গবেষক ও দায়ি। জন্মগ্রহণ করেছেন সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদের উত্তরে অবস্থিত ‘বীর’ নগরীতে বিখ্যাত আসিম বংশের কাসিম গােত্রে। তার দাদা শাইখ আব্দুর রহমান বিন মুহাম্মাদ বিন কাসিম আল-আসিমি আন-নাজদি রহ. ছিলেন হাম্বলি মাজহাবের প্রখ্যাত ফকিহ। তাঁর পিতা শাইখ মুহাম্মাদ বিন আব্দুর রহমান রহ.ও ছিলেন আরবের যশস্বী আলিম ও বহু গ্রন্থপ্রণেতা। শাইখ আব্দুল মালিক আল-কাসিম জন্মসূত্রেই পেয়েছিলেন প্রখর মেধা, তীক্ষ প্রতিভা আর ইলম অর্জনের অদম্য স্পৃহা। পরিবারের ইলমি পরিবেশে নিখুঁত তত্ত্বাবধানে বেড়ে উঠেছেন খ্যাতনামা এই লেখক। আনুষ্ঠানিক পড়াশােনা শেষ করে আত্মনিয়ােগ করেন। লেখালেখিতে গড়ে তােলেন ‘দারুল কাসিম লিন নাশরি ওয়াত তাওজি’ নামের এক প্রকাশনা সংস্থা। প্রচারবিমুখ এই শাইখ একে একে উম্মাহকে উপহার দেন সত্তরটিরও অধিক অমূল্য গ্রন্থ। আত্মশুদ্ধিবিষয়ক তেইশটি মূল্যবান বইয়ের সম্মিলনে পাঁচ ভলিউমে প্রকাশিত তাঁর ‘আইনা নানু মিন হা-উলায়ি নামের সিরিজটি পড়ে উপকৃত হয়েছে লাখাে মানুষ। বিভিন্ন ভাষায় অনূদিত হয়েছে এই সিরিজের অনেকগুলাে বই। আজ-জামানুল কাদিম’ নামে তিন খণ্ডে প্রকাশিত তাঁর বিখ্যাত গল্প-সংকলনটিও আরববিশ্বে বেশ জনপ্রিয়। সাধারণ মানুষের জন্য তিনি প্রাঞ্জল ভাষায় ছয় খণ্ডে রচনা করেছেন রিয়াজুস সালিহিনের চমৎকার একটি ব্যাখ্যাগ্রন্থ। এ ছাড়াও তাঁর কুরআন শরিফের শেষ পারার তাফসিরটিও বেশ সমাদৃত হয়েছে। আমরা আল্লাহর দরবারে শাইখের দীর্ঘ কর্মময় জীবন কামনা করি।