‘সফলতার সোপান’ বইটি মূলত একজন পাঠকের জীবনে সফলতা অর্জনের সিঁড়ি হিসেবে কাজ করবে। এ বইটি একটি মানুষকে এমনভাবে গাইড করবে যাতে করে সে কোনভাবেই ভুলপথে পরিচালিত না হয়। সঠিক পথে থেকে একজন মানুষ অল্প সময়ে উন্নতির চরম শিখরে যাতে আরোহণ করতে পারে সেদিকে দৃষ্টি রেখে বইটি লেখা। আশারাখী বইটি পড়ে সব ধরনের পাঠক ব্যাপকভাবে উপকৃত হবেন। জীবনে সফলতা অর্জনের ক্ষেত্রে বইটি অতি উচ্চমানের গবেষণার একটি ফসল। পারা আর না পারা-আমি পারব আর আমার দ্বারা সম্ভব নয়—এ সবই মানষিকতা আর দৃষ্টিভঙ্গির ব্যাপার। মানুষকে মহান স্রষ্টা অনেক যোগ্যতা দিয়েছেন। এসব যোগ্যতাকে ব্যবহার করে সফলতার পথে আগাতে হয়। আমি পারি বা পারব কথাটি যারা বলে, তারা নব্বই ভাগ ক্ষেত্রেই সফল হয়। মনের দৃঢ়তার উপরই পারা না পারা নির্ভর করে। সমাজের সিংহভাগ মানুষই না পারার দলে। আত্মবিশ্বাস ছাড়া সামনে আগান সম্ভব নয়। সফল মানুষগুলো প্রচণ্ড আশাবাদী এবং দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। সফল মানুষগুলোকে অন্য সবাই পছন্দ করেন—কেননা তাদের চরিত্র সাদামাটা, আকর্ষণীয়, খোলামেলা, বন্ধুবৎসল, হাসিখুশী অথচ দৃঢ়। এরা পরিবর্তনে এবং যেকোন পরিস্থিতিতে নিজেকে খাপ খাইয়ে নিতে পারেন। এরা অপরের প্রশংসা করেন, সবাইকে নিয়ে চলেন, সব ব্যর্থতাকে মাথায় নিয়ে অপরের সাহায্য ও সফলতাকে বড় করে দেখেন। আমার আমিত্ব এবং অহংকারকে পায়ের নিচে ফেলে অপরকে স্বীকৃতি দেন। মানুষের জীবনে সামনে এগিয়ে যাওয়ার জন্য চাই প্রচ- ইচ্ছাশক্তি এবং দৃঢ় মনোবল। বাস্তবে কোনকিছুই মানুষের উন্নতির পথে বাধা হতে পারে না। বাধা হল ভিতরের ভয়। যার জন্য সে নিজেই দায়ী। আমেরিকার বিখ্যাত বিজ্ঞানী টমাস আলভা এডিসন দশ হাজার বার চেষ্টার পর বৈদ্যুতিক বাতি আবিষ্কার করেছিলেন। সফল ব্যক্তিদের কয়েকটি বৈশিষ্ট হল-সময়ানুবর্তিতা, ভদ্রতা, চরিত্র, চটপটে, ক্ষিপ্রতা, মিতব্যয়িতা, বুদ্ধিদিপ্ততা, হাস্যরসময়, আকর্ষণীয় ব্যক্তিত্ব। আমাদের মনে রাখা চাই, অনুপম চরিত্র ও ব্যবহারিক জ্ঞান মানুষকে আকর্ষণীয় ব্যক্তিত্বে পরিণত করে। কলংকময় চরিত্র ব্যক্তিত্বকে নিঃশেষ করে দেয়। প্রতিটি মানুষই একটি বিন্দু এবং সে একটি কেন্দ্রের দিকে ধাবিত। আবার প্রতিটি মানুষকেই কেন্দ্র করে অন্যরা চলছে। এ দুটি বিষয়ের মাঝে সঠিক সমন্বয় জরুরী। আমাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়গুলোকে আলোয় আনতে হবে। আলোতে এনে বাস্তবতার মখোমুখি করতে হবে। বাস্তবতার নিরিখে আমাদের চাওয়াকে বাছাই করা জরুরী। আত্মসমালোচনা এবং দূরদৃষ্টি-এ দুটো কাজ সাধারণ মানুষকে অসাধারণ মানুষে পরিণত করে। প্রতিদিনই আত্মসমালোচনা করা উচিত। মনের দৃষ্টিকে প্রসারিত করে ভবিষ্যৎকে দেখতে হবে। স্রোতের অনুকূলেই চলা উচিত। সঠিক চিন্তাশক্তির প্রয়োগে ভালমন্দ বিচার করতে হবে। তবে সত্যমিথ্যা বিচার না করে শুধু স্রোতের অনুকূলে চলা বোকামী এবং ব্যক্তিত্বহীনতার পরিচয়। যা সত্য তাকে স্বীকার করা এবং মিথ্যা থেকে বেঁচে থাকাই উত্তম চরিত্রের জরুরী শর্ত। সবাইকে খুশি করা যায় না। অন্যায় কাজ করে কাউকে খুশি করতে চাওয়া মহা ভণ্ডামী। সঠিক সময়ে ভুল সিদ্ধান্ত, সিদ্ধান্তহীনতার চেয়ে উত্তম। কালক্ষেপণ করা দুর্বল ব্যক্তিত্বের লক্ষণ। সব কাজে প্রয়োজনীয় ও সঠিক মনোযোগ দেয়াটা জরুরী। যেখানে যতটুকু দরকার সেখানে ততটুকুই করা। বেশি বেশি করাটা ঠিক নয়। এরকম হাজারো উপদেশ রয়েছে বইটিতে-যা অধ্যয়ন করে পাঠক মাত্রেই উন্নতির চরম শিখরে পৌঁছার একটি সঠিক নির্দেশনা পেতে পারেন এ বই থেকে।
ড. ইবনে আশরাফ
Title :
সফলতার সোপান : যেভাবে উন্নতির চরম শিখরে পৌঁছাবেন