বিপুল কর্মজগতে বিচিত্র মানুষের সঙ্গে মিশেছেন আনিসুজ্জামান। ব্যক্তি হিসেবে তাঁর ছিল নানা সম্পর্কে জড়ানো এক প্রসারিত জগৎ। তাঁদের নিয়ে তিনি লিখেছেনও বিস্তর। কোনো মানুষের মূল্য বিচার করতে গিয়ে নিজের আদর্শ ও বিশ্বাস তাঁর জন্য কখনো অন্তরায় হয়নি। কারণ, তিনি মনে করতেন, যেকোনো ধারা থেকে উত্তম যা কিছু বাংলার সমাজে এসে মিশেছে, বাঙালি হিসেবে সবটুকুর ওপরই তাঁর অধিকার আছে। তাই তিনি সমান মমতায় লিখেছেন জসীমউদ্দীন, মওলানা আকরম খাঁ, কমরেড মণি সিংহ বা মনিরউদ্দীন ইউসুফের মতো বিচিত্র মত ও পথের মানুষ সম্পর্কে। বিচিত্র সেসব মানুষের মধ্য দিয়ে এ বইয়ে ধরা পড়েছে বাঙালি সমাজের বিবর্তনের এক সজীব ছবি।
আনিসুজ্জামান
আনিসুজ্জামান (১৮ ফেব্রুয়ারি ১৯৩৭ - ১৪ মে ২০২০) ছিলেন একজন প্রখ্যাত বাংলাদেশী শিক্ষাবিদ, লেখক ও জাতীয় অধ্যাপক। তিনি ১৯৩৭ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি পশ্চিমবঙ্গের ২৪ পরগনা জেলার বসিরহাটে জন্মগ্রহণ করেন এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের ইমেরিটাস অধ্যাপক ছিলেন। ভাষা আন্দোলন (১৯৫২), উনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান (১৯৬৯), এবং ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে তিনি সক্রিয় অংশগ্রহণ করেন। তাঁর উল্লেখযোগ্য গ্রন্থগুলির মধ্যে রয়েছে ‘মুসলিম মানস ও বাংলা সাহিত্য’, ‘আমার একাত্তর’, এবং ’সোশ্যাল এস্পেক্টস অব এন্ডোজেনাস ইন্টেলেকচুয়াল ক্রিয়েটিভিটি’। প্রবন্ধ গবেষণায় অবদানের জন্য তিনি ১৯৭০ সালে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার, ১৯৮৫ সালে একুশে পদক, ২০১৫ সালে স্বাধীনতা পুরস্কার, এবং ভারতের তৃতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা পদ্মভূষণ পুরস্কার লাভ করেন।