সীরাহ বান্ডেল (১ম ও ২য় খন্ড একত্রে)
বইবাজার মূল্য : ৳ ৪৮৮ (২০% ছাড়ে)
মুদ্রিত মূল্য : ৳ ৬১০
প্রকাশনী : রেইনড্রপস
This book is Out of Print
সীরাহ শব্দের আক্ষরিক অর্থ হল পথ বা রাস্তা। সীরাহ বলতে এমন একটি পথ বুঝায় যার উপর দিয়ে একজন ব্যক্তি তার জীবনভর হেঁটে চলে। রাসুল (স) হচ্ছেন এমন একজন, চৌদ্দশ বছর পরেও যাকে নিয়ে মুগ্ধতা একটুও কমেনি। যারা তাকে জেনেছে, তারা তাকে ভালবেসেছে; যত বেশি জেনেছে তত বেশি ভালবেসেছে। যারা তাকে জানেনি, তারা ভালবাসার নদী দেখলেও মহাসমুদ্র দেখেনি। না দেখলেও যাকে পৃথিবীর মানুষ সবচাইতে বেশি ভালবেসেছে তিনিই হলেন রাসুলুল্লাহ (সাঃ)। কিন্ত দুর্ভাগ্য, যে জাতির কাছে "মুহাম্মাদ (স) আছে, সে জাতিকে আজ টং এর মামা থেকে শুরু করে বারাক ওবামা - প্রত্যেকেই দিকনির্দেশনা দিতে ব্যতিব্যস্ত। আমরা রাসুলুল্লাহ (স) চিনলেও আমরা তাকে ভালভাবে জানিনা৷ আর জানিনা বলেই তিনি কারো কাছে নিছক " ভাল মানুষ " আর দশজন মনিষীর মতন, যারা কিনা দার্শনিক তত্ত্ব আর নীতিকথা বলে খালাস! কিংবা কারো কাছে তিনি 'ধর্মপ্রচারক',কিছু ভাল কাজ করেছেন এই, যা! কিন্ত আসল পরিচয় হচ্ছেন তিনি রাসুল। তিনি একটা গ্লোবাল মিশন নিয়ে এসেছিলেন এবং আমরা সেই মিশনের অংশ। আল্লাহ এই সর্বশ্রেষ্ঠ মানুষটিকে পাঠিয়েছিলেন আমাদের জীবনের প্রতিটি বিষয় দেখানোর জন্য। তিনি মানুষকে সেই পথ দেখিয়ে গেছেন যে পথ খুঁজে পেতে আমাদের বুদ্ধিজীবী-দার্শনিক-বিজ্ঞানী-আমলারা মাথা কুটে মরে, কিন্ত সমাধান পায় না। আরবের তৎকালীন ইতিহাস, বদর যুদ্ধের মাস্টারপ্লান কিংবা একাকিত্বের ধ্যানমগ্ন। কি ছিলনা তার জীবনে৷ তিনি কুরাইশদের একজন হয়েও সবচেয়ে আলাদা। রাসুলুল্লাহর বর্ননা দিতে যেয়ে বর্ননা টা এমন এসেছে : " আমি তাকে দেখেছি, উজ্জলদীপ্ত চেহারা, সুন্দর তাঁর গড়ন, সুদর্শন তাঁর মুখশ্রী, ছিপছিপে তাঁর শরীর। মাথাটা খুব ছোট নয়, বরং দেখতে তিনি অভিজাত ও সুপুরুষ। চোখদুটো তাঁর ঘনকালো, পাঁপড়িগুলো টানাটানা।বুদ্ধিদীপ্ত তাঁর চেহারা, ভরাট কণ্ঠস্বর। ভ্রু-যুগল উঁচু আর ধনুকের মত বাকাঁনো, চুলগুলো পরিপাটি। তার গ্রীবা বিস্তৃত এবং দাড়ি বেশ ঘন। তাঁর গাম্ভীর্য তাঁর আত্নমর্যাদা প্রকাশ করে, তাঁর কথা বুদ্ধিমত্তার পরিচয় বহন করে। তাঁর কথাগুলো মনমুগ্ধকর আর দৃঢ়,চটুল কিংবা ফেলনা নয়। তাঁর প্রতিটি শব্দ যেন সুতোয় বাঁধা মুক্তোর মত মসৃণ।দূর থেকে তাঁকে দেখতে যেমন উজ্জ্বল আর আকর্ষণীয়, কাছ থেকে দেখলে তাঁকেই সবচেয়ে সুদর্শন লাগে। উচ্চতায় তিনি মাঝারি। খুব লম্বাও নন আবার খাটোও নন। বাকি দুইজনের মাঝে তিনি উঁচু বৃক্ষের শাখার মত, আর তিনজনের মাঝে তিনিই সবচেয়ে সুন্দর। তিনি ছিলেন তার সঙ্গীদের কেন্দ্রবিন্দু। তিনি যখন কথা বলতেন, তারা মন দিয়ে শুনতো, তিনি যখন কিছু আদেশ দিতেন তা পালন করতে তারা ছুটে যেত। তিনি কখনো মুখ গোমড়া করেননি। আর কেউ একবারও তাঁর কথার বিরোধিতা করেনি। " মক্কার মেষ চরানো এক যুবক হয়ে গেলেন অসাধারণ এক নেতা, আরবের অধিপতি, সাহাবীদের কাঙ্ক্ষিত আশ্রয়৷ মৃত্যুর পরেও যাঁর ছায়া আমাদের আগলে রেখেছে। কী ছিল সেই মহান পুরুষের যাত্রা, প্রতিকূল ও সংগ্রাম? মক্কা ছেড়ে যাওয়ার পর সেই মক্কায় ফিরলেন বিজয়ী হয়ে। কিভাবে? জানতে হলে পড়তে হবে সীরাহ। অনেক সীরাহ আছে , আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া তবে এটা ১০ খন্ড যা আমাদের জন্য অনেক। কিন্ত খুব সহজে জানার জন্য রেইন্ড্রপস মিডিয়ার সীরাহ টা খুব ভাল লেগেছে। ২ খন্ড এর। খুব চমৎকার ভাবে উপস্থাপন সাথে প্রতি অধ্যায় শেষ করে শিক্ষা, বাস্তব জীবনের সাথে মেলানো। সব মিলেয়ে কোয়ারেন্টাইনে অসাধারণ সময় কাটানো।
সকল প্রশংসা মহান রাব্বুল আলামিন এর যিনি আমাদের সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মানব মুহাম্মাদ (সা) এর উম্মত হিসেবে প্রেরন করেছেন। প্রথমে যে কথাটা না বললেই নয়। রাসূলুল্লাহ মুহাম্মদ (সা.) হচ্ছেন এমন একজন, চৌদ্দশ বছর পরেও যাকে নিয়ে মুগ্ধতা এতটুকু কমেনি। যারা তাকে জেনেছে, তারা তাকে ভালোবেসেছে ; যত বেশি জেনেছে তত বেশি ভালোবেসেছে। যারা তাকে জানেনি, তারা ভালোবাসার নদী দেখলেও মহাসমুদ্র দেখেনি। না- দেখেও যাকে পৃথিবীর মানুষ সবচাইতে বেশি ভালোবেসেছে তিনিই হলে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। এতো গেলো না দেখে ভালবাসার অংশ। এবার যদি আপনাকে বলা হয় মুহাম্মদ (সা) সম্পর্কে জানুন। আমি নিশ্চিত আপনি উনাকে সঠিকভাবে জানা শুরু করলে, উনার ব্যাপারে সঠিক ধারনা গ্রহন করলে পৃথিবীতে অন্য কাউকে ভালবাসতে পারবেন কি না সন্দেহ। রাসুলুল্লাহ সা. বলেছেন " তোমাদের কেউ মু'মিন হতে পারবে না, যতক্ষণ না আমি তার কাছে তার পিতা, সন্তান এবং সব মানুষের চেয়ে বেশি প্রিয় হই " অর্থ্যাৎ রাসুলুল্লাহকে (সা.) সবকিছুর চেয়ে বেশি ভালোবাসতে না পারা পর্যন্ত পরিপূর্ণ মুমিন হওয়া যাবে না। সুতরাং মুহাম্মদ (সা.) কে ভালবাসা হলো ইসলামের একটি অংশ। কিন্তু কারও সম্পর্কে ভালোভাবে না জেনে তাকে মনের গভীর থেকে আন্তরিকভাবে ভালোবাসা যায় না। কাউকে ভালোবাসতে হলে তার সম্পর্কে জানা চাই। আর নবীজির ক্ষেত্রেও এটি বিশেষভাবে সত্য, কেননা তিনি এমন একজন মানুষ তার সম্পর্কে যত বেশি জানা হয় ততই তার ব্যক্তিত্ব পাঠকে মুগ্ধ করে, তার প্রতি ভালোবাসা তৈরী হয়। সীরাহ অর্থ পথ। এই বইটি একাধারে যেমন রাসূল (সঃ) জীবনী তেমনি এটা সকল মুসলিমের পথ। বইটিতে যেসব আয়াত আছে তা সময় কিংবা ঘটনার প্রেক্ষাপট বিচার করে সুন্দর করে সাজানো। এতে মুসলিমরা ধারণা পাবে সময়ের, কাজের, ন্যায় অন্যায়ের, জীবনধারার, আনুগত্যের, বিশ্বাসের - সবচেয়ে বড় কথা ঈমান ও ঐক্যের। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, সূরা আনফালের কথা। এ সূরার অধিকাংশ আয়াতই বদর যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে নাযীল হয়েছে। বদর যুদ্ধের সকল অংশগ্রহণকারী জান্নাত পাবেন! কতটা মর্যাদাসম্পন্ন সে জিহাদ। আল্লাহ্ আযযা ওয়াযাল তাঁর মহিমা ও শক্তি দিয়ে মুসলিমদের করেছেন জয়যুক্ত এবং কাফিরদের করেছেন বিপর্যস্ত ও অপমানিত। এতো সহজ এবং সাবলীল ভাষায় এই সিরাহ খণ্ডদ্বয় রচনা করা হয়েছে যা সকল বয়সের পাঠকের কাছে সহজেই বোধগম্য। সবাইকে একবার হলেও এই সীরাহ বান্ডেল পড়া এবং সংগ্রহে রাখা উচিত। সবশেষে আমি লেখকের মঙ্গল কামনা করছি।