ভূমিকা গ্রিক নাট্যকার এসকিলাস-পণ্ডিতদের মতে পৃথিবীতে ট্র্যাজেডির প্রথম স্ট্রষ্টা-জন্মেছিলেন এথেন্সের কাছাকাছি একটা ছোট জনপদে, খ্রিস্টপূর্ব ৫২৫ অব্দে। গ্রিসের ধ্রুপদী ট্রাজিডি রচয়িতা-ত্রয়ের অন্যতম এসকিলাসের পিতা ইউফেরিয়ান ছিলেন এথন্সের প্রাচীন অভিজাতবর্গের সভ্য।তাঁর নাটকগুলোর ম্যাসিডোনীয় পাণ্ডুলিপি থেকে তাঁর যে ছোট্ট জীবনবৃত্তান্ত পাওয়া যায় তা থেকে জানা যায় যে তিনি প্রথমে ম্যারাথনে এবং সম্ভবত পরে সালামিসে পারস্যবাহিনীর সঙ্গে গ্রিকদের যে দুটি যুদ্ধ হয়েছিল তাতে গ্রিক পক্ষের হয়ে যুদ্ধ করেছিলেন। এই যুদ্ধ তাঁর চেতনানুভূতি জাগিয়ে তোলে ও মানব-ভাগ্যের গভীর ও দুঃখময় পরিণতির পরিপূর্ণ রূপটি তা৭র চোখের সামনে উদ্ঘটিত হয়ে যায়। মানবজীবনের উত্থান-পতনময় বেদনাধৃত অগ্রযাত্রাকে এক সুগভীর নাটকীয় সার্বিক দুঃখময় রূপটিকে নাট্যাঙ্গিকের এক অভাবিতপূর্ব বিকাশের ভেতর তিনি উন্মোচিত করার ব্যাপারে আজীবন ক্ষান্তিহীন ছিলেন। আর এভাবেই বিশ্বনাটকের ইতিহাসের ট্র্যাজেডির প্রথম স্রষ্টা হিসেবে তাঁর আসন স্থায়িভাবে চিহ্নিত হয়ে যেতে পেরেছিল।
ঈস্কিলাস
আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ
আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ একজন বহুমুখী ব্যক্তিত্ব। অধ্যাপনা করেছেন তিনি তিরিশ বছর-১৯৬২ সাল থেকে ১৯৯২ পর্যন্ত । অধ্যাপক হিশেবে তার খ্যাতি কিংবদন্তিতুল্য। ষাটের দশকে বাংলাদেশে যে নতুন ধারার সাহিত্য আন্দোলন হয়, তিনি ছিলেন তার নেতৃত্বে সাহিত্য পত্রিকা 'কণ্ঠস্বর সম্পাদনার মাধ্যমে সেকালের নবীন সাহিত্যযাত্রাকে তিনি নেতৃত্ব ও দিকনির্দেশনা দিয়ে সংহত ও বহমান করে রেখেছিলেন এক দশক ধরে। বাংলাদেশে টেলিভিশনের সূচনালগ্ন থেকে মনস্বী, রুচিমান ও বিনোেদন-সক্ষম ব্যক্তিত্ব হিশেবে আবির্ভূত হন আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ। টেলিভিশনের বিনােদন ও শিক্ষামূলক অনুষ্ঠানের উপস্থাপনায় তিনি পথিকৃৎ ও অন্যতম সফল ব্যক্তিত্ব। এইসব ব্যস্ততার মধ্যেও তিনি সাহিত্যচর্চায় নিবিষ্ট। কবিতা, প্রবন্ধ, ছােটগল্প, নাটক, অনুবাদ, জর্নাল, জীবনীমূলক বই ইত্যাদি মিলিয়ে তাঁর গ্রন্থভাণ্ডারও যথেষ্ট সমৃদ্ধ তাঁর। প্রকাশিত গ্রন্থ ২৭টি। আবদুল্লাহ আবু সায়ীদের ব্যক্তিত্বের প্রায় সবগুলাে দিক সমন্বিত হয়েছে তার বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের সংগঠক সত্তায় । তিনি অনুভব করেছেন যে সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তােলার লক্ষ্যে আমাদের প্রয়ােজন অসংখ্য উচ্চায়ত মানুষ। ‘আলােকিত মানুষ চাই’-সারা দেশে এই আন্দোলনের অগ্রযাত্রী হিশেবে সাতাশ বছর ধরে তিনি রয়েছেন সংগ্রামশীল। ২০০০ সাল থেকে সামাজিক আন্দোলনে উদ্যোগী ভূমিকার জন্য তিনি দেশব্যাপী অভিনন্দিত হয়েছেন। ডেঙ্গু প্রতিরােধ আন্দোলন, পরিবেশ ও সুশীল সমাজ আন্দোলন তার নেতৃত্বে প্রাণ পেয়েছে। আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ, পিতা আযীম উদ্দিন আহমদ; মা বেগম করিমউনিসা জন্মস্থান : পার্ক সার্কাস, কলকাতা। জন্মসাল : ২৫ জুলাই ১৯৪০। পৈতৃক নিবাস : কামারগাতি, কচুয়া, বাগেরহাট। পুরস্কার : জাতীয় টেলিভিশন পুরস্কার (১৯৭৭), মাহবুবউল্লাহ ট্রাস্ট পুরস্কার (১৯৯৮), রােটারি সিড পুরস্কার (১৯৯৯), বাংলাদেশ বুক ক্লাব পুরস্কার (২০০০), র্যামন ম্যাগসাইসাই পুরস্কার : (২০০৪), একুশে পদক (২০০৫), শেলটেক পদক (২০০৬), মাদার তেরেসা স্বর্ণপদক (২০০৬)।