ফ্ল্যাপের কিছু কথাঃ আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর এমাজউদ্দীন আহমদ সম্পর্কে নুতন করে বলবার কিছু নেই। রাষ্ট্র, রাজনীতি ও সমাজ সম্পর্কে তাঁর গভীর অভিনিবেশ ও মনীষার আলোয় এখন উদ্ভাসিত আমাদের জ্ঞানের দিগন্ত। গত পাঁচ দশক ধরে বিরামহীনভাবে লিখে যাচ্ছেন তিনি। এই দীর্ঘ সময়ে বেরিয়েছে অসংখ্য প্রবন্ধ, নিবন্ধ, বেরিয়েছে অর্ধ শতাধিক গ্রন্থ।
বিভিন্ন গ্রন্থ ও পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত বাছাই করা সেই সব প্রবন্ধ-নিবন্ধের আকর্ষণীয় এক মালা গেঁথে শিকড়- এর প্রকাশক এম আর মিলন গ্রন্থাকারে তা প্রকাশেল দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন। জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক সমস্যার বিশ্লেষণধর্মী এসব প্রবন্ধে যেমন রয়েছে বিতর্কের উত্তাপ, তেমনি রয়েছে আলোও। মনোযোগী ও দায়িত্বশীল পাঠকের জন্য তা হবে এক পরম পাওয়া। পাশাপাশি দূর হবে বুদ্ধিভিত্তিক বন্ধ্যাত্ব আর আলোর পথ দেখাবে বিতর্ক, নতুনভাবে বিশ্লেষণের সূচনা করবে, সমাধানের পথ প্রশস্ত হবে। দীর্ঘকালীন পরিসরে লিখিত কিছু প্রবন্ধ ডেটেড হতে পারে। সর্বক্ষেত্রে কিন্তু রয়েছে লেখকের আন্তরিকতা এবং সৃজনশীলতা।
ভূমিকা বিভিন্ন পত্র-পত্রিকা ও জার্নালে প্রকাশিক বেশ কিছু সংখ্যূক লেখাকে একত্রিত করে ‘শিকড়’ এর এম আর মিলন শ্রেষ্ঠ প্রবন্ধ প্রকাশ করে আমাদের সবাইকে কৃতজ্ঞতার পাশে আবদ্ধ করেছেন। তার উদ্যোগ সার্থক হোক। বিপুল সংখ্যক পাঠক এক সাথে অনেকগুলো লেখা হাতের কাছে পেয়ে খুশিই হবে হয়ত। এমাজউদ্দীন আহমদ
সূচিপত্র * বাংলাদেশে গণতন্ত্রের সমস্যা * বাংলাদেশে গণতন্ত্র * গণতান্ত্রিক বাংলাশের পররাষ্ট্রনীতি * বাংলাদেশ রাজনীতি : রাজনৈতিক দল * জাতীয় সংসদ কিসের জন্য * একুশ শতকে গণতন্ত্রের অবস্থা * একুশ শতকে জাতিসংঘের রূপ * বাংলাদেশ : একুশ শতকের রাজনীতি * বাংলাদেশেল সাংস্কৃতিক স্বাতন্ত্র্য * মুসলমানিত্ব ও বাঙালিত্ব * তসলিমার এ কেমন অজ্ঞতা! * পশ্চিমবঙ্গের সংস্কৃতি * আমাদের জাতিসত্তা * বাংলাদেশের গণতন্ত্র এবং জিয়া * জিয়ার রাজনীতি * জিয়ার শ্রেষ্ঠতম অবদান * বিচারক এবং সাংবাদিকদের জবাবদিহিতা প্রসঙ্গে * বিপ্লব ও সংহতি দিবস * ইতিহাস বিস্মৃতি * পলাশীর চক্রান্ত , না যুদ্ধ * ২৪ জুন ১৭৫৭ * দক্ষিণ এশিয়ায় গণতন্ত্র * ভারতীয় রাজনীতি * ভারতের পারমাণবিক বিস্ফোরণ এবং দক্ষিণ এশিয়া * কাশ্মির সমস্যা এতো জটিল কেন * ট্রান্সশিপমেন্টের বাতাবরণে করিডোর * আগ্রহ বেশি কার? ভারতের না আওয়ামী সরকারের * ট্রান্সশিপমেন্টের পূর্ব কথা * সমাজে বুদ্ধিবৃত্তির চর্চা * ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় : ইতিহাসের বিস্মৃত এক অধ্যায় * শান্তিচুরিক পরিবেশ ও প্রতিবেশ * আঞ্চলিক সহযোগিতা এবং জাতীয় নিরাপত্তা * মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশের জনগণ * গণহত্যায় অভিযুক্ত পাকিস্তানি সৈনিকদের বিচার * মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কথাবার্তা * সরকারের অবিবেচনাপ্রসূত সিদ্ধান্ত * মুজিব আমল , হাসিনা আমল * নতুন শতাব্দীর শিক্ষাব্যবস্থা মূলসূর * গ্যাস ও মানবসম্পদের উন্নয়নের আমাদের করণীয় * সন্ত্রাসের বীভৎস রূপ * দুর্নীতির কথকথা * এই হীনম্মন্যতা আর কত দিন চলবে * হোসেন শহীদ সোহরাওয়াদী এবং অবিভক্ত বাংলাদেশ * ভারতীয়দের চোখে শেখ মুজিবুর রহমান * বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক * ঢাকার প্রতি ওয়াশিংটনের আকর্ষণ থাকবেই * কোন্ পর্যায়ে দক্ষিণ এশিয়া * ভারত-যুক্তরাষ্ট্র মাখামাখি : গন্তব্য কোথায় * উত্তর-পূর্ব ভারত ও বাংলাদেশ * ৭ নভেম্বর বিপ্লব ও সংহতি দিবস * জননিরাপত্তা আইন অবিলম্বে প্রত্যাহার করা উচিত * সমস্যার মূল অনুসন্ধান * প্রযুক্তি ও নৈতিকতা * সার্ক কি শেষ পর্যন্ত ফুরিয়ে গেল * তা হলে বাংলাদেশ মৌলবাদী রাষ্ট্র * বিচার বিভাগের ভাবমূর্তি * ভারতীয় সিভিল সার্ভিস : কাঠামো কার্যক্রম ও ঐতিহ্য * বাংলাদেশে দারিদ্র : কিছু সমস্যা কিছু সুপারিশ * মেকিয়েভেলি ও তাঁর নতুন বিজ্ঞান * মানব জাতির মহান শিক্ষক * জ্ঞান ও শিক্ষার ইসলামিকরণ * মানবাধিকার ঘোষণা ও মদীন সনদ * ইসলামিক কমন মার্কেটের ভবিষ্যৎ * মুসলিম বিশ্বে গণতন্ত্র * মধ্যপ্রাচ্যে শান্তির পথ কত দীর্ঘ * বই উপহার
প্রফেসর ড. এমাজউদ্দীন আহমদ
প্রফেসর ড.এমাজউদ্দিন আহমদ ১৯৩২ সালের ১৫ ডিসেম্বর তৎকালীন মালদাহ জেলায় জন্মগ্রহণ করেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান ড. এমাজউদ্দীন আহমদ দেশের একজন খ্যাতনামা শিক্ষাবিদ এবং একাডেমিক ব্যক্তিত্ব। তিনি একই বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য ও উপাচার্য হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন দীর্ঘ ৮ বছর। পরবর্তীতে ইউনিভার্সিটি অব ডেভেলপমেন্ট অল্টারনেটিভ (ইউডা)-এর উপাচার্য হিসেবে দীর্ঘ ১৪ বছর দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। প্রফেসর এমাজউদ্দীন আহমদ একজন প্রখ্যাত গবেষক ও রাজনৈতিক পর্যালােচক। দীর্ঘ ৩৫ বছর ধরে তিনি তুলনামূলক রাজনীতি, বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি, দক্ষিণ এশিয়ার প্রশাসন এবং সামরিক বাহিনী সম্পর্কে গবেষণা করে চলেছেন। এসব ক্ষেত্রে তিনি সমগ্র দক্ষিণ এশিয়ায় অত্যন্ত শ্রদ্ধেয় বিশেষজ্ঞ হিসেবে খ্যাত। তার লিখিত গ্রন্থের সংখ্যা বর্তমানে ৬৮। দেশ-বিদেশের খ্যাতনামা জার্নালে তার প্রকাশিত গবেষণামূলক প্রবন্ধের সংখ্যা শতাধিক। তার লিখিত ইংরেজি গ্রন্থগুলাের মধ্যে উল্লেখযােগ্য হলাে : Bureaucratic Elites in Segmented Economic Growth : Bangladesh and Pakistan, 1980; Development Administration : Bangladesh, 1981; SARC : Seeds of Harmony, 1985; Military Rule and Myth of Democracy, 1988. তাঁর সম্পাদিত ইংরেজি গ্রন্থগুলাের মধ্যে উল্লেখযােগ্য হলাে : Bangladesh Politics, 1980; Foreign Policy of Bangladesh, 1984; Society and Politics in Bangladesh, 1989; Bangladesh, South Asia and the World, 1992. তার লিখিত বাংলা গ্রন্থগুলাের মধ্যে উল্লেখযােগ্য হলাে : রাষ্ট্রবিজ্ঞানের কথা, ১৯৯৬; মধ্যযুগের রাষ্ট্রচিন্তা, ১৯৭৫; তুলনামূলক রাজনীতি : রাজনৈতিক বিশ্লেষণ, ১৯৮২; বাংলাদেশে গণতন্ত্রের সংকট, ১৯৯১; বাংলাদেশ : সমাজসংস্কৃতি ও রাজনীতি, ১৯৯২; সমাজ ও অর্থনীতি, ১৯৯৩; গণতন্ত্রের ভবিষ্যৎ, ১৯৯৪; শান্তিচুক্তি ও অন্যান্য প্রবন্ধ, ১৯৯৮; আঞ্চলিক সহযােগিতা, জাতীয় নিরাপত্তা ও অন্যান্য প্রবন্ধ, ১৯৯৯; ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও অন্যান্য প্রবন্ধ, ২০০০। শিক্ষাক্ষেত্রে অবদান ও সৃজনশীল লেখার জন্যে তিনি দেশে-বিদেশে বিশেষভাবে সম্মানিত হয়েছেন। শিক্ষাক্ষেত্রে বিশেষ অবদানের জন্যে তিনি লাভ করেছেন আকরাম খান গােল্ড মেডেল, মাইকেল মধুসূদন গােল্ড মেডেল, জিয়া স্মৃতি সংসদ গােল্ড মেডেল, শেরেবাংলা স্মৃতি স্বর্ণপদক, ঢাকা সামাজিক ও সাংস্কৃতিক স্বর্ণপদক, বাংলাদেশ স্বাধীনতা গােল্ড মেডেল, রাজশাহী বিভাগীয় উন্নয়ন ফোরাম স্বর্ণপদক। সৃষ্টিশীল গবেষণা ও আলেখ্য রচনার জন্যে তিনি লাভ করেছেন মহাকাল কৃষ্টি চিন্তা সংঘ স্বর্ণপদক, জাতীয় সাহিত্য সংসদ স্বর্ণপদক, জিয়া সাংস্কৃতিক সংস্থা স্বর্ণপদক এবং অন্যান্য অনেক সম্মাননা। ১৯৯২ সালে শিক্ষাক্ষেত্রে বিশেষ অবদানের জন্যে তাকে দেয়া হয় জাতীয় একুশে পদক। যুক্তরাষ্ট্রকেন্দ্রিক এবিআইএর মতে তিনি নব্বই দশকের সর্বাপেক্ষা প্রশংসিত ব্যক্তিত্ব।