সূচিপত্র সাঁঝের মায়া * সাঁঝের মায়া * পৃথিবীর পথ * ঝড়ের আগে * ঝড়ের শেষে * তাহারেই পড়ে মনে * এ নিশি অনন্ত হোক বধু * তুমি আর আমি
মায়া কাজল * অনাগত * সুন্দরী বসুধা * সে কি কভু জানে? * নিশিগন্ধার কথা * বসন্তলিপি * নীড় ভ্রষ্ট * স্মৃতির সৌরভ
মন ও জীবন * দিগন্ত * একদা * সিন্ধু ও দিগন্ত * সন্ধ্যা * প্রিয় বিরহের নিশি * নব বরষার ঘন মেঘ আনে কি বারতা * পশ্চিমে বৈশাখ
উদাত্ত পৃথিবী * তোমার সে প্রেম * অনিমিষ * আমার দেশ * রূপসী বাংলা * মধুগন্ধা * বৈশাখলী নিশীথ * আলোর দুহিতা * বিষের বাঁশীর কবিকে
দীওয়ান * ভয় কি তোমার শাহারযাদী * শুনাও কাহিনী * সেই পুরাতন আল্ফ লায়লা * জেব উন্নিসা * অকাল মেঘ * শুক্তি * লুমুম্বার আফ্রিকা * কারান্তরালে জমীলা
মৃত্তিকার ঘ্রাণ * আমার এ বনের পথে * নীড় * বিজয়িনী * কর্ণফুলির কল্লোল শুনি * নববর্ষে * শব-ই-ক্বদর * মানুষে মানুষে হোক পরিচয়
প্রশান্ত ও প্রার্থনা * ফাতেহা-ই-দোয়াযদহম * অমৃত প্রাণ * যে জীবন ইতিহাস * প্রঞ্জার নগাধিরাজ * আলোর ঝরণা * মহাকবি শেক্স্পীয়র স্মরণে
অভিযাত্রিক * কালের যাত্রার ধ্বনি * অভিযাত্রিক * উৎসবের দিন * জাগো দুর্বার * অমৃত স্মৃতি * এমন আশ্চর্য এই দিন * হোক সবে মহিয়সী * অমৃত কন্যা * এবার ঈদের জামা’ত কি হবে? * শেষের প্রার্থনা
মোর যাদুদের সমাধি ’পরে * আমন্ত্রণ * এ আমার দেশ * উদাত্ত বাংলা * ঊনসত্তুরের এই দিনে * নীরবে চলেছে * বাতাসে বারুদ * মিছিল সারি সারি * একত্রিশে চৈত্র-১৩৭৭ * বেণীবিন্যাস সময় তো আর নেই * মোর যাদুদের সমাধি ’পরে
সুফিয়া কামাল
১৯১১ সালের ২০শে জুন বরিশালের শায়েস্তাবাদের মাতামহের বাড়িতে সুফিয়া কামালের জন্ম। মা সাবেরা বানু এবং বাবা সৈয়দ আব্দুল বারি। পারিবারিক পরিমণ্ডলে সাহিত্য-পত্রিকা ও গল্প পড়তে-পড়তেই সাহিত্যচর্চায় অনুপ্রাণিত হন। মাত্র ১৪ বৎসর বয়সে বরিশাল থেকে প্রকাশিত 'তরুণ' পত্রিকায় ‘সৈনিক বধু’ গল্পটি তাঁর প্রথম প্রকাশিত রচনা। লেখালেখির কাজ সুফিয়াকে লুকিয়ে করতে হয়েছে বিশেষ করে বাংলা ভাষায় । কেননা বাংলা ভাষা সুফিয়ার পরিবারে চর্চার ভাষা ছিল না। সীমাবদ্ধ ছিল আরবি, ফারসি, উর্দুতে। মায়ের ঐকান্তিক সহযােগিতায় সুফিয়া বাংলা বলতে, পড়তে ও লিখতে শেখেন। লুকিয়ে-লুকিয়ে কবিতা রচনা করতে-করতেই সওগাতে প্রকাশিত হল তাঁর প্রথম কবিতা 'বাসন্তী', যা সাথে-সাথেই সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করে। প্রথম গ্রন্থ রচয়িতা হিসাবে আত্মপ্রকাশ করেন 'সাঁঝের মায়া’ কাব্যসমগ্র প্রকাশের মাঝে। কবি কাজী নজরুল ইসলাম তাঁকে দীর্ঘ চিঠি লিখে কাব্যচর্চায় উৎসাহিত করেন। প্রকৃতপক্ষে সাঁঝের মায়া গ্রন্থের ভূমিকাটি তাঁরই লেখা। বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ তাঁর কবিতা পড়ে তাকে আশীর্বাণী পাঠিয়েছিলেন এই বলে, “তােমার কবিত্ব আমাকে বিস্মিত করে। বাংলা সাহিত্যে তােমার স্থান উচ্চে এবং ধ্রুব তােমার প্রতিষ্ঠা। আমার আশীর্বাদ গ্রহণ করাে।” সওগাত সম্পাদক মােহাম্মদ নাসিরুদ্দীন তার সাহিত্য-জীবনে উৎসাহের বিরাট উৎস হিসাবে কাজ করেছেন।
সুফিয়া কামাল ১২টি কাব্যগ্রন্থের রচয়িতা, প্রায় সমসংখ্যক কাব্যগ্রন্থ আকারে প্রকাশের অপেক্ষায় রয়েছে। এছাড়াও রয়েছে তাঁর রচিত ছােটগল্প, নাটক, উপন্যাস, আত্মজীবনী এবং ভ্রমণকাহিনী । তাঁর কবিতা বিভিন্ন ভাষায় অনূদিত হয়েছে যার মধ্যে রয়েছে চীনা, ইংরেজি, জার্মান, ইটালিয়ান, পােলিশ, রাশিয়ান, ভিয়েতনামি, হিন্দি এবং উর্দু। সুফিয়া কামালের কবিতা তাঁর জীবন ও সমাজ কর্মতৎপরতা এক অবিচ্ছেদ্য সূত্রে গ্রথিত। সুফিয়ার সমাজ-কর্মের সূচনাও খুব অল্প বয়স থেকেই যার জন্য তিনি মাত্র ১৪ বছর বয়সেই গান্ধীর আশীর্বাদ লাভ করেছিলেন।
তার পুরস্কার প্রাপ্তির তালিকায়ও তার এই অভূতপূর্ব মিলিত কর্মশক্তির প্রতি সশ্রদ্ধ প্রশংসার প্রতিফলন লক্ষ করা যায়। বাংলাদেশেই তিনি পেয়েছেন প্রায় ৫০টির মতাে অত্যন্ত সম্মানজনক পুরস্কার যার মধ্যে রয়েছে একুশে পদক, বেগম রােকেয়া পদক, স্বাধীনতা পুরস্কার, জাতীয় কবিতা পরিষদ পুরস্কার, বাংলা একাডেমী পুরস্কার। আন্তর্জাতিকভাব তিনি লাভ করেছেন সাবেক সােভিয়েত ইউনিয়ন প্রদত্ত লেনিন শান্তি পুরস্কার এবং চেকোস্লাভিয়া প্রদত্ত সংগ্রামী নারী পুরস্কার। কবি কামা ইভানােভা কর্তৃক অনুদিত “সাঁঝের মায়া” গ্রন্থটির রাশিয়ান অনুবাদ প্রকাশিত হয় ১৯৮৪ সালে তদান্তিন সােভিয়েত ইউনিয়নে। মুক্তিযুদ্ধ, মুক্তির জয়’ গ্রন্থে সংকলিত কবিতা ও ডায়রি '৭০-এর ডিসেম্বর থেকে শুরু করে '৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় অবরুদ্ধ বাংলাদেশে বসে লেখা। ১৯৯৯ সালের ২০শে নভেম্বর তিনি মৃত্যুবরণ করেন।