আমাদের জীবন আমাদের নিকট একটি আমানত। যা বেঁধে দেওয়া হয়েছে আল্লাহর আইন ওরফে দ্বীন আল-ইসলামের নিকট আত্মসমর্পণের বেষ্টনী দ্বারা। আত্মসমর্পণ হচ্ছে সেই চুক্তি যেখানে বিনা শর্তে বিনা বাক্যে নিঃসংকোচে নিজ অধিপতির হাতে নিজের আদ্যোপান্ত আপাদমস্তক ন্যাস্ত করে দেওয়া হয়। রাব্বে কারীমের সঙ্গে আমাদের চুক্তিও ঠিক সেরূপ– যেখানে কোনো প্রকার প্রশ্ন, সন্দেহ, সংকোচ কিংবা বিরোধিতার কোনো সুযোগ নেই। অতএব, জীবনের প্রত্যেকটি পদক্ষেপে আল্লাহর আইন পুঙ্খানুপুঙ্খ বাস্তবায়ন করা আমাদের উপর আবশ্যক। যদিও নফসের ধোঁকায় ও শাইত্বানের ওয়াসওয়াসায় আমরা বারংবার শুনাহে হাত ডুবিয়ে ফেলি আর বনে যাই নাফরমান।
তবে, তন্মধ্যে সবচেয়ে মারাত্মক হচ্ছে ইচ্ছাকৃতভাবে গুনাহে জড়িয়ে পড়া ও তার উপর অটুট থাকা এবং ছোট ছোট গুনাহকে গুনাহ হিসেবে বিবেচনা না করা অথবা হালকাভাবে নেওয়া। শুধু তাই নয়, সম্প্রতি আমাদের মাঝে গুনাহকে গুনাহ বলে অধীকার করা, হারাম বিষয়াদিকে সহজতর করার উদ্দেশ্যে হালালাইজ করতে উঠেপড়ে লাগা, যুক্তির পিঠে যুক্তি নিক্ষেপ করে হারামকে স্বাভাবিক করার অপচেষ্টা চালানো, ধর্মীয় বেশে ফিতনার বিস্তার ঘটানোর মতো কুফরি রোগ প্রগাঢ়রূপে গেঁড়ে বসেছে। ইচ্ছাকৃত ও অনিচ্ছাকৃতভাবে জড়িয়ে যাওয়া এইসকল গুনাহ ধীরে ধীরে আমাদের ক্বলবে প্রজ্জ্বলিত দ্বীনি নূরকে নিভিয়ে ফেলে। অথচ ইয়ামুদ দ্বীনে মানবজাতির নিকট হতে দুনিয়াতে কৃত ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র প্রত্যেকটি কাজের জবাবদিহিতা আদায় করা হবে। এজন্যই মুমিন মাত্রই নিজেকে গুনাহমুক্ত রাখার সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালানো অপরিহার্য।
জ্ঞাতসারে বা অজ্ঞাতবশত হয়ে যাওয়া এসব ছোট-বড় গুনাহগুলো অনায়েসেই আমাদের দ্বারা রোজ বা হরহামেশাই সংঘটিত হচ্ছে। যা থেকে নিজেকে ও অন্যদের হেফাজতে রাখা অবশ্যই কাম্য।
উপরোক্ত এমনই সংশ্লিষ্ট কিছু পয়েন্টকে কেন্দ্র করে সতর্কীকরণের স্বার্থেই এই অজ্ঞ কর্তৃক বইয়ের পাতায় কলম ওঠানো। পয়েন্ট উদ্ঘাটের পাশাপাশি বইয়ের প্রতিটি অধ্যায়ের যথাযথ রেফারেন্স সমন্বয় করে যথাসাধ্য বিস্তারিত বর্ণনা পেশ করার চেষ্টা করেছি। বইটির ভাষা ও শারঈ সম্পাদনা এবং একাধিকবার নজরে সানীসহ বিভিন্ন কাজে অনেকেই অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন।