শিল্পের চরম সৌকর্য বলতে যা বোঝায় তাতো আসলে মানুষের দেখা সত্য জীবনের বয়ান। সেই বয়ান কখনো হয় মেদহীন ও গতিমান। ‘সম্পর্কের সুতোয়’ ভাঙ্গাগড়া মানুষের জীবনের ভিন্ন ভিন্ন বাঁকবদলের কথা বলে। কথা বলে, মনের স্বাতন্ত্র্যবোধ ও মৌলিকতা নিয়ে। শান্তনুর বৃহৎ সামাজিক পরিবর্তনের প্রত্যাশা শেষ পর্যন্ত ব্যক্তি ব্যর্থতায় ট্র্যাজিক হয়ে ওঠে কিনা তা দেখতে পাই প্রদোষকালে। যদিও উপন্যাসের আখ্যানের একরৈখিক ভাবনা চোখে পড়ার মতো তবুও বর্ণনায় অকপট স্বীকারোক্তি ঔপন্যাসিকের অন্যতম বৈশিষ্ট্য। সত্য ও সুন্দরের ইউটোপিয়ায় বসবাস করা মানুষের মনে যে ক্ষ্যাপামো খেলা করে তার বালখিল্য আচরণ যখন অনেকের কাছে দুঃসহ মনেহয় তখন সেই মানুষের উত্থান-পতনের চোরা¯্রােতগুলো কীভাবে মানুষটিকে বিষাদগ্রস্ত করে তোলে তারই সরল আখ্যান এই উপন্যাস। জটিল পৃথিবীর জটিল জীবন নয় বরং ভাবনায় খুব কাছের পৃথিবীতেই ঘুরপাক খান ঔপন্যাসিক। যে পৃথিবীতে শান্তনু শেষ পর্যন্ত মানুষের প্রত্যাশা অনুযায়ী শুভবোধ থেকে বিচ্যুত হয় না। মানুষ নিজেই এক অপরাজেয় শক্তি।
অরিত্র দাস
ইতিহাস, সমাজ এবং বাস্তবতা-সচেতন প্রতিশ্রুতিশীল লেখক অরিত্র দাস। জাতীয় পটভূমি, সমসাময়িক ঘটনা বা কাহিনীর অবতারণায় জনজীবন ও সমাজ-সংস্কৃতি তাঁর রচনার মূল উপপাদ্য বিষয়। জীবনপ্রণালির প্রাত্যহিকতা থেকে বেছে নেওয়া শব্দের ব্যবহারে তিনি প্রকাশ করেন তাঁর বক্তব্যের প্রত্যক্ষতা। ২০১৯ সালের বইমেলায় প্রকাশিত হয় তাঁর প্রথম উপন্যাস ‘দীপালি’। ২০২০ সালে প্রকাশিত হয় তাঁর দ্বিতীয় উপন্যাস ‘সম্পর্কের সুতোয়’। উপন্যাস দুটি পাঠক মহলে বেশ সমাদৃত হয়। ২০২১ সালে প্রকাশিত হচ্ছে তৃতীয় বই 'প্রতিক্রিয়া'। সাহিত্য চর্চার পাশাপাশি কলাম লিখেন অরিত্র দাস। প্রায় প্রতিটি জাতীয় দৈনিকে তাঁর কলাম নিয়মিত ছাপা হয়। উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে পড়াশুনা করেছেন বরিশাল অমৃত লাল দে কলেজে। সম্প্রতি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন ও বিচার বিভাগ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শেষ করেছেন। অরিত্র দাসের জন্ম বরিশাল জেলার গৌরনদী থানার রামনগর গ্রামে।