শীতের কুয়াশার চাদরে ঢাকা গ্রামীণ সবুজ ক্ষেত, আঁকাবাঁকা সর্পিল মেঠোপথ, গ্রীষ্মের অলস দুপুরে বিস্তীর্ণ ফাঁকা মাঠ পেরিয়ে আসা চঞ্চল হাওয়া, দূর কোথাও থেকে ভেসে আসা ঘুঘুর ডাক, গাছের ডালে পাখপাখালির নাচানাচি, টিনের চালে বৃষ্টির ছন্দ, চাঁদনী রাতের মায়াময় রূপালি জোছনা দেখে দেখে গ্রামীণ পরিবেশে বেড়ে ওঠে পাশা। কিশোরবেলা বন্ধুদের সাথে ডাংগুলি, দাড়িয়াবান্ধা, গোল্লাছুট, সাতচাড়া, তালপাতা আর জাম্বুরার বলে খেলা, ফড়িং ধরা, ঘুড়ি উড়ানো, বর্ষায় বড়শি দিয়ে পুটি মাছ ধরা, পাখি শিকার, নৌকায় চড়ে খাল বিলের মধ্য দিয়ে খালা বাড়ি মামা বাড়ি বেড়াতে যাওয়াÑএভাবেই কেটে যায় মেধাবী পাশার শৈশব কৈশোর। কৈশোরের দুরন্তপনা, রাত জেগে গান শোনা, কখনো রাগ করে, কখনো অন্যের প্ররোচনায়, কখনো সমুদ্র দেখতে বার বার বাড়ি পালানো, ঢাকা শহরে পড়তে এসে বার বার পালিয়ে বাড়ি চলে যাওয়া বাউণ্ডুলে বিপথু পাশা লেখাপড়ায় থিতু হয় ভাইয়ের উপর জিদ করে। এসএসসিতে অসম্ভব ভালো রেজাল্ট করে লেখাপড়ার উদ্দেশ্যে ছোটবেলা থেকে বেড়ে ওঠা গ্রাম ছাড়তে হয় তাকে। যেভাবে আবহমান কাল থেকে চলে এসেছে আমাদের দেশে। গ্রামীণ শৈশব ও কৈশোর জীবনের অনবদ্য চিত্র সেই জীবন উপন্যাসের উপজীব্য যা পাঠককে করে তোলে নস্টালজিক এবং ফিরিয়ে নিয়ে যায় পেছনে ফেলে আসা শৈশব ও কৈশোরের গ্রামীণ জীবনে।