বাংলা গল্পসাহিত্যে সৈয়দ মুজতবা আলীর । (১৯০৪-১৯৭৪) অবস্থান বৈচিত্র্যমণ্ডিত। ভ্রমণসাহিত্যিক হিসেবেই তাঁর খ্যাতি সমধিক। তাঁর রচিত গল্পগুলাে বিষয় ও প্রকরণে স্বতন্ত্র। তিনি শাস্ত্রীয় ছক মান্য করে ছােটগল্প রচনা করেননি। তিনি বৈঠকি রীতিতে গল্প বলতে চেয়েছেন। ড্রয়িং রুমে বা ক্যাফে-রেস্তোরায় প্রায় সমবয়সীদের মধ্যে আড্ডা জমে উঠলে যেমন টুকরাে টুকরাে কথা একেকটি পূর্ণাঙ্গ গল্পের জন্ম দেয়, মুজতবা । আলীর গল্পের স্বাদ অনেকটা সেরকম। এ কারণেই তাকে বলা হয় ‘মজলিশি ঢঙের গল্পশিল্পী। অবশ্য কেল বৈঠকি রীতিতেই নয়, প্রথাগত রীতিতেও তিনি গল্প। লিখেছেন। বহুদেশভ্রমণঋদ্ধ ও বহুভাষাবিজ্ঞ মুজতবা আলী তাঁর রচনায় হাস্যরস ও করুণরসকে বেণিবন্ধনের মতাে মিশিয়ে দিয়েছেন। হাস্যপ্রধান কিংবা কারুণ্যপ্রধান সব গল্পেই জুড়ে দিয়েছেন মানবিক অনুষঙ্গ। প্রাণতা ও সরসতাই তাঁর গল্পের প্রাণ।
সৈয়দ মুজতবা আলী
সৈয়দ মুজতবা আলী (১৩ সেপ্টেম্বর ১৯০৪ - ১১ ফেব্রুয়ারি ১৯৭৪) বিংশ শতকের একজন প্রখ্যাত বাঙালি সাহিত্যিক, যিনি আধুনিক বাংলা সাহিত্যের গুরুত্বপূর্ণ ঔপন্যাসিক, ছোটগল্পকার, অনুবাদক ও রম্যরচয়িতা। তাঁর ভ্রমণকাহিনির জন্য তিনি বিশেষভাবে পরিচিত এবং তাঁর রচনায় পাণ্ডিত্য ও রম্যবোধের এক অনন্য সংমিশ্রণ রয়েছে। শান্তিনিকেতনে পড়ার সময় তিনি বিশ্বভারতী ম্যাগাজিনে লিখতেন। পরবর্তীতে ‘সত্যপীর’, ‘ওমর খৈয়াম’, ‘টেকচাঁদ’, ‘প্রিয়দর্শী’ প্রভৃতি ছদ্মনামে বিভিন্ন পত্রিকায়, যেমন: দেশ, আনন্দবাজার, বসুমতী, সত্যযুগ, মোহাম্মদী ইত্যাদিতে কলাম লিখেছেন।