সাহিত্যিক আশুতােষ মুখােপাধ্যায়ের জন্ম ১৯২০,। ৭ সেপ্টেম্বর, বাংলা ১৩২৭-এর ২২ শে ভাদ্র, মঙ্গলবার। জন্মস্থান -ঢাকা, বিক্রমপুর। পরেশচন্দ্র মুখােপাধ্যায় ও তরুবালা দেবীর দশটি সন্তানের পঞ্চম আশুতােষ। মুখােপাধ্যায়। পড়াশুনাে পুরােটাই পশ্চিমবঙ্গে। সায়েন্স এবং কমার্সের ছাত্রটির সাহিত্যের আঙিনায় পা রাখা। সেসময় মােটেই সহজসাধ্য ছিল না। গুরুগম্ভীর প্রবল। ব্যক্তিত্বের ‘এডুকেশনিস্ট’ পিতৃদেবের যে আকাঙ্ক্ষা বা ইচ্ছার নাম আসলে ‘আদেশ’ সেই ‘ডাক্তার হও’ হুকুমকে। উপেক্ষা করে অবাধ্য সন্তানের প্রথম জেহাদ-“আর। বিজ্ঞান পড়ব না”। তিক্ত-বিরক্ত পিতার নিরুপায় দ্বিতীয়। ‘অলটারনেটিভ’ কমার্স-পাঠক্রমে ভর্তি হয়েও তা বর্জন। ভবিষ্যতের ভাবী সাহিত্যিক, সাহিত্যের সারস্বত সাধনায়। ব্রতী হওয়া যার অমােঘ পরিণতি, সে কী করে বিচরণ । করবে স্বাভাবিক নিয়মের গতিবাঁধা ছকে? তবে, ছােট থেকেই বড়বেলা পর্যন্তও অদম্য ঝোক ছিল খেলাধূলার। প্রতি। হকি-ক্রিকেট-ফুটবল, গাদাগাদা কাপ-মেডেল ছিনিয়ে আনা, এবং তখনকার দিনে একটি টেনিস ক্লাবের পত্তন। পর্যন্ত করে ফেলে তার মধ্যমণি হওয়া। একই সঙ্গে ক্রীড়াপ্রেমিক এই স্মার্ট ছেলেকে সবার অলক্ষ্যে নিবিড়। বাঁধনে বেঁধে ফেলেছিল একেবারে বিপরীতধর্মী একটি বস্তুবই, গল্পের বই এবং বড়দের বই, যা তখনকার দিনে। ওই বয়সের ছেলেমেয়েদের কাছে ‘নিষিদ্ধ’। গল্প-উপন্যাসের 'প্রতি তেরাে চোদ্দ বছরের ছেলের অদম্য আকর্ষণ এবং | প্রেমই তার মধ্যে তার নিজেরও অগােচরে বপন করে। চলেছিল ভবিষ্যৎ কথাশিল্পী হওয়ার অমােঘ বীজ। যার। প্রথম ফলন ১৯৪৩ সালে, যদিও খুব অপটুভাবে। প্রথম তিনটি উপন্যাস ‘কালচক্র’, ‘আর্তমানব জীবনতৃয়া। কিন্তু সাহিত্য-স্বীকৃতি মিলল না। চতুর্থ উপন্যাস ‘চলাচল। এবং এর থেকেই সাহিত্যিক হিসাবে খ্যাতি, নামডাক, যশ ও স্বীকৃতির জয়যাত্রা, যা কখনও ব্যাহত হয়নি জীবনের। একেবারে শেষ দিনটা পর্যন্ত। ইংরেজি ১৯৮৯,। ৪মে, প্রয়াণের আগের দিন অবধি লিখে গেছেন। তৎকালীন নামী দৈনিক যুগান্তর পত্রিকায় দীর্ঘদিন সাহিত্য বিভাগের সম্পাদকও ছিলেন – যার সঙ্গে অঙ্গাঙ্গীভাবে। জড়িত ছিল তার প্রথম প্রেম ‘লেখা-সাহিত্যরচনা।