স্বপ্নটা আসলে সমষ্টিগত মুক্তির। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে যেটি স্পষ্ট হয়ে উঠেছিল। কিন্তু মুক্তি আসেনি। তবে স্বপ্নটা আছে, থাকবেও, থাকতে হয়। সেই স্বপ্ন, তার আলোছায়া, স্বপ্নের শত্রু ও মিত্র-এসব নিয়েই এই বই। তখনকার সময়ের বেশ কিছু ঘটনার উল্লেখ আছে এখানে; সেরকম ঘটনা পরেও ঘটেছে, এখনো ঘটছে-এখন ঘটছে আরও বড় ও ভয়ঙ্কররূপে।
ইতিহাস কোন দিকে এগোচ্ছে সেটা বিলক্ষণ টের পাওয়া যাচ্ছিল; ইতিহাস কিন্তু ঠিক সেই দিকেই এগিয়েছে। ওই দিকটা মুক্তির নয়, আষ্টেপৃষ্ঠে বন্ধনের। তবে মুক্তির স্বপ্নটা তো আছে। সমষ্টিগত মুক্তির স্বপ্ন বাস্তব রূপ নেবে যদি সামাজিক বিপ্লব ঘটে। এই বক্তব্য তখনো সত্য ছিল, এখনো সত্য। এখন বরঞ্চ সেটা আরও বেশি করে সত্য। বিশ্বজুড়ে আজ এই উপলব্ধি স্পষ্ট হয়েছে যে শেষ মীমাংসার প্রয়োজন, যে মীমাংসা পুঁজিবাদের সংস্কারে সম্ভবপর নয়, সম্ভব সমাজব্যবস্থার বৈপ্লবিক রূপান্তরে। ওই প্রয়োজনীয়তার কথাটাই বারে বারে ঘুরেফিরে এসেছে এই বইয়ে।
ব্যাককভার :
মানুষ কেবল বাস্তবে বাঁচে না, স্বপ্নেও বাঁচে। এমনকি স্বপ্ন যে দেখে না মনে করে, সেও স্বপ্ন দেখে, কোনো না কোনো ভাবে, কখনো না কখনো। একেবারেই অজানা হলেও একটি স্বপ্ন সব সময়েই সাথে থাকে-আশা হিসেবে হয়তো, হয়তোবা ভরসারূপে, হতে পারে স্মৃতি হয়ে। এই বই সেই স্বপ্ন ও বাস্তবতাকে ঘিরেই রচিত। এতে ব্যক্তিগত কথা কিছু কিছু রয়েছে বটে, কিন্তু এই ব্যক্তি স্বাধীন নয়, সমষ্টি দিয়ে সে নানাভাবে প্রভাবিত ও নিয়ন্ত্রিত।
সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী
সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী (জন্ম: ২৩ জুন ১৯৩৬, বাড়ৈখালী, বিক্রমপুর) একজন প্রখ্যাত অধ্যাপক ও সাহিত্যিক। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজিতে স্নাতক সম্মান (১৯৫৫) ও স্নাতকোত্তর (১৯৫৬) ডিগ্রি অর্জন করেন এবং লেস্টার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি (১৯৬৮) সম্পন্ন করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগে প্রফেসর এমেরিটাস হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তাঁর প্রকাশিত গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে প্রবন্ধ-গবেষণা, ছোটগল্প, উপন্যাস ও অনুবাদ, যেমন "অন্বৈষণ" (১৯৬৪), "শেষ নেই" (২০০৪), "এ্যারিস্টটলের কাব্যতত্ত্ব" (১৯৭২) এবং "হোমারের ওডেসি" (১৯৯০)। তিনি লেখক সংঘ পুরস্কার (১৯৭৫), বাংলা একাডেমি পুরস্কার (১৯৭৬), একুশে পদক (১৯৯৬) সহ বিভিন্ন সম্মাননায় ভূষিত হয়েছেন।