রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর (জন্ম : ৭ মে, ১৮৬১ - ৭ই আগস্ট, ১৯৪১) (মৃত্যু : ২৫ বৈশাখ, ১২৬৮ - ২২ শ্রাবণ, ১৩৪৮ বঙ্গাব্দ)। তিনি ছিলেন অগ্রণী বাঙালি কবি, ঔপন্যাসিক, সংগীতস্রষ্টা, নাট্যকার, চিত্রকর, ছােটগল্পকার, প্রাবন্ধিক, অভিনেতা, কণ্ঠশিল্পী ও দার্শনিক। তাঁকে বাংলা ভাষার সর্বশ্রেষ্ঠ সাহিত্যিক মনে করা হয়। রবীন্দ্রনাথকে গুরুদেব, কবিগুরু ও বিশ্বকবি অভিধায় ভূষিত করা হয়। রবীন্দ্রনাথের ৫২টি কাব্যগ্রন্থ, ৩৮টি নাটক, ১৩টি উপন্যাস, ৩৬টি প্রবন্ধ ও অন্যান্য গদ্যসংকলন তাঁর জীবদ্দশায় বা মৃত্যুর অব্যবহিত পরে প্রকাশিত হয়। তাঁর সর্বমােট ৯৫টি ছােটগল্প ও ১৯১৫টি গান যথাক্রমে গল্পগুচ্ছ ও গীতবিতান সঙ্কলনের অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। রবীন্দ্রনাথের যাবতীয় প্রকাশিত ও গ্রন্থাকারে অপ্রকাশিত রচনা ৩২ খন্ডে রবীন্দ্র রচনাবলী নামে প্রকাশিত হয়েছে। রবীন্দ্রনাথের যাবতীয় পত্রসাহিত্য উনিশ খন্ডে চিঠিপত্র ও চারটি পৃথক গ্রন্থে প্রকাশিত। এছাড়া তিনি প্রায় দুই হাজার ছবি এঁকেছিলেন। রবীন্দ্রনাথের রচনা বিশ্বের বিভিন্ন ভাষায় অনূদিত হয়েছে। ১৯১৩ সালে গীতাঞ্জলি কাব্যগ্রন্থের ইংরেজি অনুবাদের জন্য তিনি সাহিত্যে নােবেল পুরস্কার পান।
আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ
আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ একজন বহুমুখী ব্যক্তিত্ব। অধ্যাপনা করেছেন তিনি তিরিশ বছর-১৯৬২ সাল থেকে ১৯৯২ পর্যন্ত । অধ্যাপক হিশেবে তার খ্যাতি কিংবদন্তিতুল্য। ষাটের দশকে বাংলাদেশে যে নতুন ধারার সাহিত্য আন্দোলন হয়, তিনি ছিলেন তার নেতৃত্বে সাহিত্য পত্রিকা 'কণ্ঠস্বর সম্পাদনার মাধ্যমে সেকালের নবীন সাহিত্যযাত্রাকে তিনি নেতৃত্ব ও দিকনির্দেশনা দিয়ে সংহত ও বহমান করে রেখেছিলেন এক দশক ধরে। বাংলাদেশে টেলিভিশনের সূচনালগ্ন থেকে মনস্বী, রুচিমান ও বিনোেদন-সক্ষম ব্যক্তিত্ব হিশেবে আবির্ভূত হন আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ। টেলিভিশনের বিনােদন ও শিক্ষামূলক অনুষ্ঠানের উপস্থাপনায় তিনি পথিকৃৎ ও অন্যতম সফল ব্যক্তিত্ব। এইসব ব্যস্ততার মধ্যেও তিনি সাহিত্যচর্চায় নিবিষ্ট। কবিতা, প্রবন্ধ, ছােটগল্প, নাটক, অনুবাদ, জর্নাল, জীবনীমূলক বই ইত্যাদি মিলিয়ে তাঁর গ্রন্থভাণ্ডারও যথেষ্ট সমৃদ্ধ তাঁর। প্রকাশিত গ্রন্থ ২৭টি। আবদুল্লাহ আবু সায়ীদের ব্যক্তিত্বের প্রায় সবগুলাে দিক সমন্বিত হয়েছে তার বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের সংগঠক সত্তায় । তিনি অনুভব করেছেন যে সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তােলার লক্ষ্যে আমাদের প্রয়ােজন অসংখ্য উচ্চায়ত মানুষ। ‘আলােকিত মানুষ চাই’-সারা দেশে এই আন্দোলনের অগ্রযাত্রী হিশেবে সাতাশ বছর ধরে তিনি রয়েছেন সংগ্রামশীল। ২০০০ সাল থেকে সামাজিক আন্দোলনে উদ্যোগী ভূমিকার জন্য তিনি দেশব্যাপী অভিনন্দিত হয়েছেন। ডেঙ্গু প্রতিরােধ আন্দোলন, পরিবেশ ও সুশীল সমাজ আন্দোলন তার নেতৃত্বে প্রাণ পেয়েছে। আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ, পিতা আযীম উদ্দিন আহমদ; মা বেগম করিমউনিসা জন্মস্থান : পার্ক সার্কাস, কলকাতা। জন্মসাল : ২৫ জুলাই ১৯৪০। পৈতৃক নিবাস : কামারগাতি, কচুয়া, বাগেরহাট। পুরস্কার : জাতীয় টেলিভিশন পুরস্কার (১৯৭৭), মাহবুবউল্লাহ ট্রাস্ট পুরস্কার (১৯৯৮), রােটারি সিড পুরস্কার (১৯৯৯), বাংলাদেশ বুক ক্লাব পুরস্কার (২০০০), র্যামন ম্যাগসাইসাই পুরস্কার : (২০০৪), একুশে পদক (২০০৫), শেলটেক পদক (২০০৬), মাদার তেরেসা স্বর্ণপদক (২০০৬)।