আল্লাহর পথের এক মহান দাঈ, ইলমে ওহীর বাতিঘর। যুগশ্রেষ্ঠ মনীষী। খাঁটি আরব রক্তের গর্বিত বাহক। বিশ্বময় হেদায়াতের রােশনি বিকিরণকারী। উম্মতের রাহবার ও মুরব্বি। কল্যাণের পথে আহ্বানে চিরজাগ্রত কর্মবীর।
জন্ম ১৯১৪ ঈসাব্দে। ভারতের শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতি ও আধ্যাত্মিকতার সূতিকাগার উত্তর প্রদেশের রাজধানী লাখনৌর রায়বেরেলীতে। প্রাতিষ্ঠানিক লেখাপড়া আদ্যোপান্তই দারুল উলুম নদওয়াতুল ওলামায়। অধ্যাপনা জীবনের সিংহভাগও এই প্রতিষ্ঠানেই নিবেদিত ছিল। । আল্লামা নদভীর খ্যাতির সূচনা হয় বিংশ শতাব্দীর ত্রিশের দশকে; সীরাতে সাইয়েদ আহমাদ শহীদ রচনার মাধ্যমে। গ্রন্থটি গােটা ভারতবর্ষে তাঁকে পরিচিত করে তােলে। এরপর তিনি রচনা করেন মা যা খাসিরাল আলাম বিনহিতাতিল মুসলিমীন নামক কালজয়ী গ্রন্থ। যা তাকে প্রথমত আরববিশ্বে ও পরবর্তীতে বৈশ্বিক সুখ্যাতি এনে দেয়। এ পর্যন্ত গ্রন্থটির শত শত সংস্করণ বেরিয়েছে।
বিগত প্রায় পৌনে এক শতাব্দী ধরে তাঁর কলম অবিশ্রান্তভাবে লিখেছে মুসলিম ইতিহাসের গৌরবদীপ্ত অধ্যায়গুলোর ইতিবৃত্ত। সীরাত থেকে ইতিহাস, ইতিহাস থেকে দর্শন ও সাহিত্য পর্যন্ত সর্বত্রই তার অবাধ বিচরণ । উর্দ থেকে তার আরবী রচনাই যেন অধিকতর অনবদ্য। আল্লামা নদভী জীবনে যেমন পরিশ্রম করেছেন, তেমনই তার স্বীকৃতিও পেয়েছেন। আন্তর্জাতিক বহু ইসলামী প্রতিষ্ঠান ও সংস্থার সদস্য ছিলেন। তিনি একাধারে রাবেতায়ে আলমে ইসলামী এর অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সদস্য, লখনৌর বিখ্যাত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দারুল উলুম নাদওয়াতুল-উলামা-এর রেকটর এবং ভারতীয় মুসলমানদের ঐক্যবদ্ধ প্লাটফরম মুসলিম পার্সোন্যাল ল বাের্ডের সভাপতি ছিলেন।
ইসলামের এই মহান সংস্কারক ১৯৯৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর জুমার আগে সুরা ইয়াসীন তিলাওয়াতরত অবস্থায় ইনতিকাল করেন। সাত খণ্ডে রচিত তারিখে দাওয়াত ও আযীমত তার। আরেকটি কালজয়ী রচনা যার অনবদ্য অনুবাদ সংগ্রামী সাধকদের ইতিহাস। বাংলাভাষী পাঠকদের হাতে বইটির সার্থক অনুবাদ তুলে। দিতে পেরে আমরা আল্লাহর শােকরিয়া আদায় করছি।