ফ্ল্যাপের কিছু কথাঃ ‘সখিনার চন্দ্রকলা’ সেলিনা হোসেনের নবম গল্প সংকলন। তাঁর প্রথম গল্পসংকলন ‘উৎস থেকে নিরন্তর’ প্রকাশিত হয় ১৯৬৯ সালে।
গত পাঁচ বছর ধরে লেকা গল্পগুলো নিয়ে প্রকাশিত এই সংকলনে আছে তাঁর সমাজ ভাবনার অনুধাবন, আছে নারী জীবনের বিষয়-আশয়ের চিত্ররূপ, আছে মুক্তিযোদ্ধাদের জীবনের ঘাত-প্রতিঘাত এবং একই সঙ্গে তাদের ঋদ্ধ মানসের ছবি, আছে রাষ্ট্রক্ষমতার জটিলতার প্রতীকী চেহারা। তিনি উঠিছেন বনভূমিতে যাপিত জীবনের মানুষের অবদমনের কথা। তাঁর গল্পে শুনতে পাওয়া যায় সময়ের ঘন্টাধ্বনি।
এই ধ্বনি দীর্ঘলয়ে বাজে। কখনো বাজে সরবে কখনো মৃদু ব্যঞ্জনায় কিংবা অদৃশ্য মন্দিরায়। তারপর জীবনে অন্তর্মুখী-বহির্মুখী যন্ত্রণা, ধিক্কার এবং আঘাত গল্পের দেয়ালে সেই ছাপচিত্রে মুদ্রিত হয় যা মানুষ এবং মানুষের বহমান জীবনের স্থায়ী শব্দরূপ। এসবের ভেতর দিয়ে তার গল্প শিল্পের প্রতিনিধিত্ব করে। সাহিত্যের ভুবনে নির্মাণ করে শব্দশিল্পের কুঁড়েঘর।
সূচিপত্র * বনভূমি * সিজ ফায়ার * পঞ্চাশ * বিধবা * ভাবমূর্তি * নো ক্লু * পা ও গ্রেনেড * মইরম জানে না ধর্ষণ কি * জেসমিনের ইচ্ছাপূরণ * ল্যাংড়াটা খুন হয়েছে * অরণ্য কুসুম * ধারণা * কুন্তলার অন্ধকার * দুই কিশোরীর ক্রসফায়ার * শেষ পর্যন্ত শফিউল্লাহ * ঘোষণা * সখিনার চন্দ্রকলা
সেলিনা হোসেন
সেলিনা হোসেন বাংলাদেশের একজন প্রখ্যাত ঔপন্যাসিক, যিনি ১৪ জুন ১৯৪৭ তারিখে রাজশাহী শহরে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা এ কে মোশাররফ হোসেন ছিলেন রেশমশিল্প কারখানার পরিচালক এবং মাতা মরিয়মন্নেসা বকুল। ষাটের দশকের মধ্যভাগে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করার সময়ে লেখালেখির শুরু করেন এবং তাঁর প্রথম গল্পগ্রন্থ "উৎস" ১৯৬৯ সালে প্রকাশিত হয়। সেলিনা হোসেনের লেখালেখির কেন্দ্রে রয়েছে বাংলাদেশের মানুষ, সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্য, এবং তিনি বাংলার লোক-পুরাণের চরিত্রসমূহকে নতুনভাবে তুলে এনেছেন। তাঁর উপন্যাসে সমকালের সামাজিক ও রাজনৈতিক সংকট, ভাষা আন্দোলন এবং মুক্তিযুদ্ধের প্রসঙ্গ প্রতিফলিত হয়েছে। সাহিত্যে তাঁর পরিচিতি শুধু কথাসাহিত্যেই সীমাবদ্ধ নয়, প্রবন্ধেও তিনি শক্তিশালী ও শাণিত গদ্য নির্মাণে দক্ষ।