শহীদুল জহির লেখেন শহীদুল জহিরের মতই। বাংলাদেশের কথা সাহিত্যের জগতে তিনি হয়তো নিঃসঙ্গও, তেপান্তরের পথে কে যায়, যেতে চায় ? শহীদুল জহিরের প্রথম উপন্যাস জীবন ও রাজনৈতিক বাস্তবতা প্রকাশিত হয় ১৯৮৮ সালে। সে রাতে পূর্ণিমা ছিল তার দ্বিতীয় উপন্যাস, প্রকাশকাল ১৯৯৫ এ। এই দুটো বই নিয়েই এই সঙ্কলিত গ্রন্থ।
জীবন ও রাজনৈতিক বাস্তবতা বাঙ্গালি মুক্তিযুদ্ধ করেছিল, বর্তমানে যারা বাংলাদেশের বাসিন্দা তাদের কেউ কেউ মুক্তিযুদ্ধ দেখেছেন, কেউ কেউ দেখেন নাই। মানুষ সমাজ দেশ স্বাধীনতার ধারাবাহিকতায় এগিয়ে গেছে, পরিবর্তিত হয়ে গেছে অনেক কিছু- আমাদের জীবন এবং জীবনের আকাক্সক্ষা, সামাজিক, অর্থনৈতিক এবং রাজনৈতিক বিন্যাস। আমরা ব্যস্ত হয়েছি, আমরা ব্যস্ত থেকেছি বর্তমান নিয়ে, ভবিষ্যত চিন্তায়-মুক্তিযুদ্ধের ঘটনা সরে গেছে দূরে, প্রায় পঁয়ত্রিশ বছরের ওপারে ধূলা এবং কুয়াশার ভিতরে- আমরা ভুলে গেছি, ভুলে থেকেছি, কিন্তু আমরা ভুলে গেছি কি? সকলেই?
সে রাতে পূর্ণিমা ছিল এই গল্প একটা গ্রামের, মফিজউদ্দিন এবং চন্দ্রভান, মোল্লা নাসিরউদ্দিন এবং দুলালি, আবু বকর সিদ্দিক এবং আলেকজানের। এই গল্প মফিজউদ্দিনের বন্ধু করিম খাঁর ছেলে আফজাল খাঁর পরিবারেরও। গরীব কৃষকের বংশধর, আমরা, আমাদের পথচলার গল্প এটা, এই গল্প আমাদের উত্থান এবং পতনের। একটা গ্রামতো একটা দেশই-আমরা বিবর্তিত হই, আমাদের গ্রামের সামাজিক সম্পর্কের সূত্রগুলো পাল্টায় এবং আমরা দেখি আমাদের দেশই বদলে যাচ্ছে। এই ধারা চলে। অথবা এই গল্প হয়তো শুধুই ভালবাসার, প্রেমের, ভালবাসার অলৌকিক আনন্দের এবং বেদনার হেমকান্তি সৌন্দর্যের।
লেখক পরিচিতি শহীদুল জহির শহীদুল জহিরের জন্ম ঢাকায় নারিন্দার ভূতের গলিতে ১৯৫৩ সালে। তার গ্রামের বাড়ি সিরাজগঞ্জ জেলায়। তিনি ঢাকা, চট্টগ্রাম এবং ময়মনসিংহ-এর বিভিন্ন স্কুল, ঢাকা কলেজ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ওয়াশিংটন ডি.সি.-র ‘দি অ্যামেরিকান ইউনিভার্সিটি’ এবং বর্মিংহাম ইউনিভার্সিটিতে লেখাপড়া করেন। তিনি সরকারি চাকুরিজীবী।